রানা আব্বাস, কলম্বো থেকে
সিনামোন গ্রান্ডে পৌঁছেই যেন মুক্ত বিহঙ্গের অনুভূতি পেল দলগুলো। কলম্বোর এ হোটেলেই থাকছে সুপার ফোরের তিন দল বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা আর পাকিস্তান। নিরাপত্তাজনিত কারণে লাহোরে গুমোট-বদ্ধ পরিবেশ থেকে হঠাৎ কলম্বোর মুক্ত পরিবেশে সবাই। হোটেলে ব্যাগপত্তর রেখেই তিন দলের ক্রিকেটার আর ম্যানেজমেন্টের অনেক সদস্য বেরিয়ে এলেন হোটেলের বাইরে।
লাহোর থেকে ভাড়া করা বিমানে কাল বিকেলে কলম্বোয় পৌঁছেছে বাংলাদেশসহ বাকি দুই দল। সিনামোন গ্রান্ডের প্রধান ফটক দিয়েই প্রায় সব দলের সদস্য প্রবেশ করলেন। বাংলাদেশ দলের খেলোয়াড়েরাও একইভাবে ঢুকল টিম হোটেলে। কিন্তু দেখা মিলল না সাকিব আল হাসানের। দলের মিডিয়া ম্যানেজার জানালেন, দুটো গাড়িতে করে দলের সদস্যরা টিম হোটেলে পৌঁছেছেন। মূল বাসে সাকিব ছিলেন না, তিনি হয়তো আরেকটি গাড়িতে আছেন। অবশ্য সংবাদমাধ্যমকর্মীদের তীক্ষ্ণ নজর আর আলোকচিত্রীদের ফ্রেম এড়িয়ে যাওয়ার অভ্যাস তাঁর নতুন নয়।
সুপার ফোরের বাকি পর্ব খেলতে কলম্বোয় আসার পর থেকেই সবার চোখ আকাশে। গতকাল ঢাকা থেকে ফোনে এই প্রতিবেদকের কাছে যেমন কলম্বোর আবহাওয়ার আপডেট নিলেন সাবেক দুই অধিনায়ক রকিবুল হাসান ও গাজী আশরাফ হোসেন লিপু। গতকাল সকাল থেকেই কলম্বোর আকাশ ভারী হয়ে আছে। থেমে থেমে হচ্ছে বৃষ্টি। অবশ্য বাংলাদেশ দল যখন কলম্বোয় এসে পৌঁছেছে, সন্ধ্যায় বৃষ্টির দাপট তেমন ছিল না। তবে আবহাওয়ার পূর্বাভাস বলছে, আজও বৃষ্টিবাগড়া থাকতে পারে। বাংলাদেশ দল প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে অনুশীলন করবে সন্ধ্যায়। জোর বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে কাল ম্যাচের দিনেও।
এই আবহাওয়ায় কেন কলম্বো থেকে সুপার ফোরের বাকি ম্যাচগুলো সরিয়ে নেওয়া হলো না, এ নিয়ে এখনো অনেক প্রশ্ন। আসলে চারটি দলের সঙ্গে চার ক্রিকেট বোর্ডের শীর্ষ কর্মকর্তাদের থাকা ও অন্যান্য লজিস্টিক্যাল চ্যালেঞ্জ উতরে যেতে আয়োজক শ্রীলঙ্কান ক্রিকেট বোর্ডের (এসএলসি) কাছে কলম্বো ছাড়া এই মুহূর্তে ভালো কোনো অপশনও নেই। বৃষ্টি ও প্রতিকূল আবহাওয়ার চোখ রাঙানি নিয়েই তাই কলম্বোয় এশিয়া কাপের বাকি অংশ শেষ করতে হচ্ছে এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলকে (এসিসি)।
লাহোর থেকে ফিরে বাংলাদেশের কিছুটা স্বস্তি বোধ করার কথা শুধুই কলম্বোর মুক্ত পরিবেশে এসেই নয়, প্রেমাদাসার উইকেটও আশাবাদী করে তুলছে তাদের। কদিন আগে লঙ্কান প্রিমিয়ার লিগ (এলপিএল) খেলে যাওয়া সাকিবের বেশ ধারণা আছে প্রেমাদাসার উইকেট নিয়ে। সেই অভিজ্ঞতা থেকে বাংলাদেশ অধিনায়কের আশা, পরের দুটি ম্যাচে তাঁরা ভালো করবেন। গত পরশু লাহোরের রানপ্রসবা উইকেটে পাকিস্তানের ফাস্টবোলারদের সামনে অসহায় আত্মসমর্পণ করার পর সাকিব নিজেই যেমন কলম্বোর উইকেট নিয়ে বলছিলেন, ‘এলপিএলে দেখেছিলাম, পিচ কিছুটা মন্থর, ওঠানামা ছিল। ওটা আমাদের সহায়তা করতে পারে। আশা করি কলম্বোয় আমরা ভালো করব।’
লাহোর থেকে ফিরে গতকাল টিম হোটেলে বেশ হাসিখুশি দেখাল বাংলাদেশের লঙ্কান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহেকে। স্বদেশি হোটেল কর্মকর্তাদের সঙ্গে কোনো একটা বিষয় নিয়ে বেশ মজা করছিলেন। হাথুরুর সামনে বড় চ্যালেঞ্জ, এবার প্রেমাদাসায় তাঁকে ছক কষতে হবে শ্রীলঙ্কাকেই হারাতে। পেশাদার ক্রিকেটে এটা তাঁর জন্য অবশ্য নতুন কিছু নয়। এই সুন্দর দ্বীপ থেকে ভালো স্মৃতি নিয়ে ফিরতে হলে ভিন্ন কিছু যে করতেই হবে।