সৌগত বসু, ঢাকা
রাজধানীতে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে চালুর প্রায় এক মাস হতে চলেছে। বহু অর্থ ব্যয়ে চালু করা এই উড়ালসড়ক হওয়ার পর রাজধানীর যানজট কমার যে আশা করা হয়েছিল, তা পূরণ হয়নি। উল্টো কোনো কোনো স্থানে যানজট আরও বেড়েছে। তবে এই এক্সপ্রেসওয়ে চালুতে সুবিধা হয়েছে ব্যক্তিগত গাড়ির মালিকদের। তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, চালুর পর গত ২৮ দিনে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে চলাচল করা মোট গাড়ির ৯৯ ভাগই ছিল প্রাইভেট কার।
এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কর্তৃপক্ষের তথ্যমতে, গত ২৮ দিনে মোট গাড়ি চলাচল করেছে ৮ লাখ ৩৬ হাজার ৫৫৮টি। এর মধ্যে ৮০ টাকা টোল দেওয়া ক্যাটাগরি-১ গাড়ি তথা কার, ট্যাক্সি, জিপ, স্পোর্টস ইউটিলিটি ভেহিক্যাল, মাইক্রোবাস (১৬ সিটের কম) এবং হালকা ট্রাকের সংখ্যা ছিল ৮ লাখ ২৮ হাজার ৯৮৭; যা মোট সংখ্যার ৯৯ ভাগের বেশি। এরপর বেশি চলেছে ক্যাটাগরি ২ বা মাঝারি ট্রাক (৬ চাকা পর্যন্ত)। ৩২০ টাকা টোল দেওয়া এসব গাড়ির সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৩৮০টি। ৪০০ টাকা টোল দেওয়া ক্যাটাগরি-৩ বা ৬ চাকার বেশি ট্রাকের সংখ্যা ছিল ৪৯টি। আর ক্যাটাগরি-৪ বা সব ধরনের বাসের (১৬ সিট বা তার বেশি) সংখ্যা ছিল ৬ হাজার ১৪২টি।
ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের প্রকল্প পরিচালক এ এইচ এম এস আকতার আজকের পত্রিকাকে বলেন, মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) সকাল ৬টায় মূলত এক মাস পূর্ণ হবে। এখন যে তথ্য আছে, সেটি ২৮ দিনের। শুরুতে যেমন ছিল গাড়ির সংখ্যা, সেটি এখন অনেক বেড়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলেছিলেন, এটি মূলত ব্যক্তিগত গাড়ির সুবিধার জন্য কাজ করবে। বাস্তবে সেটিই দেখা গেছে গত এক মাসে। নগর পরিকল্পনাবিদ আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, যে লক্ষ্য নিয়ে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে যাত্রা শুরু করেছে, সেটি আসলে পূরণ হয়নি। বলা হয়েছিল, এটি চালু হলে ২০ থেকে ৩০ শতাংশ যানজট কমে যাবে; বাস্তবে তা হয়নি।
গতকাল সরেজমিনে দেখা যায়, এখনো মহাখালী ও বনানীতে ওঠার দুটি র্যাম্প চালু হয়নি। বনানীর সেতু ভবন থেকে মহাখালীর তেজগাঁও পর্যন্ত তীব্র যানজট ছিল। নগরীর মধ্যে ১৩টি র্যাম্প থাকলেও মোটরসাইকেল, সিএনজিচালিত অটোরিকশা এক্সপ্রেসওয়ের কোনো সুবিধা পাবে না। অন্যদিকে গণপরিবহন যাত্রীসংকট ও এক্সপ্রেসওয়েতে সাধারণ মানুষের চলাচল না থাকার কারণে উঠছে না।