Ajker Patrika
হোম > ছাপা সংস্করণ

বাস বাড়লে কমবে লঞ্চযাত্রী

খান রফিক, বরিশাল

বাস বাড়লে কমবে লঞ্চযাত্রী

আর মাত্র ১৩ দিন পর উদ্বোধন করা হবে পদ্মা সেতু। এ লক্ষ্যে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে আসছে অত্যাধুনিক বাস সার্ভিস। এতে যেমন ১০০ কিলোমিটার দূরত্ব কমে যাচ্ছে, তেমনি সাশ্রয়ও হচ্ছে সময়। সেবা বেড়ে যাওয়ায় সড়ক পথে যাত্রীদের আগ্রহও বাড়বে। এ অবস্থায় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে যাচ্ছে দক্ষিণের লঞ্চ সেবা। দুশ্চিন্তায় পড়েছেন লঞ্চ মালিকেরা। পদ্মা সেতুর পর ট্রেনসেবা চালু হলে লঞ্চ সার্ভিস টিকিয়ে রাখতে সেবা বাড়ানোর বিকল্প নেই বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

গতকাল শনিবার বরিশাল নৌবন্দরে কথা হয় কয়েকজন লঞ্চ শ্রমিকদের সঙ্গে। রিয়াজ উদ্দিন নামে একজন লঞ্চ শ্রমিক জানান, পদ্মা সেতু চালু হলে কমবে যাত্রী। মালিকও স্টাফ ছাঁটাইয়ের চিন্তা করছেন।

নৌযান শ্রমিক ফেডারেশন ও লঞ্চ লেবার অ্যাসোসিয়েশনের বরিশাল জেলা সভাপতি শেখ আবুল হাশেম বলেন, ‘পদ্মা সেতু চালু হলে লঞ্চের কেবিনের যাত্রী কমে যাবে। এতে লঞ্চ বন্ধ হয়ে যেতে পারে। লঞ্চের স্টাফরা হয়তো বিপাকে পড়বেন। অনেক চাকরি হারাবেন। এটা আমাদের মাথাও আছে। আমাদের চিন্তা আর মালিকদের চিন্তা এক না। লঞ্চ বন্ধ হলে বেতন না পেয়ে শ্রমিকদের কষ্ট হবে। এমনটা দীর্ঘমেয়াদি চললে ব্যবসা টিকবে না। সবাইকে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে।’

বরিশালের বাসিন্দা মেহেদী হাসান রাজধানীতে একটি গার্মেন্টস ফ্যাক্টরির কর্মকর্তা। প্রতি সপ্তাহেই তিনি বরিশাল আসেন লঞ্চে। মেহেদী বলেন, ‘পদ্মা সেতু চালু হলে সোহাগ, গ্রিন লাইনের মত বাস চলবে এ পথে। এ ধরনের অত্যাধুনিক বাসের টিকিট পেতে লঞ্চের মত ধরনা দিতে হবে না।’

মেহেদী জানান, লঞ্চ মালিকেরা এত দিন যা করছেন তাতে সচ্ছল যাত্রীরা মুখ ফিরিয়ে নেবেন।

জাতীয় পার্টির বরিশাল নগর সদস্যসচিব প্রকৌশলী ইকবাল হোসেন তাপস বলেন, ‘লঞ্চের এক শ্রেণির যাত্রী সব সময়ই থাকে। আবার বাস সার্ভিস ভালো হলেও সড়ক পথেও ঝুঁকবে। এ ক্ষেত্রে লঞ্চ এবং বাস সার্ভিসে প্রতিযোগিতা বাড়বে। টিকে থাকতে হলে লঞ্চ মালিকদের সেবা বাড়তে হবে। টিকিট পাওয়া সহজীকরণ, যাত্রীদের নিরাপত্তাসহ খাবারের মান বৃদ্ধি করতে হবে। এখন থেকেই লঞ্চ মালিকদের যাত্রী জিম্মি করার প্রবণতা কমিয়ে আনতে হবে।’

সুন্দরবন লঞ্চের মাস্টার মজিবর রহমান বলেন, ‘লঞ্চে এখনই যাত্রী সংখ্যা অনেক কমে গেছে। করোনার পর আগের মত যাত্রী হয় না। গত ঈদেই তো ডেকে কাঙ্ক্ষিত যাত্রী পাওয়া যায়নি। আসলে একের পর এক এ নৌপথে লঞ্চ নামছে। নৌপথও ছোট হয়ে আসছে। তাই টিকে থাকতে হলে সেবার মান উন্নত করতে হবে।’

এ প্রসঙ্গে লঞ্চ মালিক সমিতির কেন্দ্রীয় সহসভাপতি সাইদুর রহমান রিন্টু বলেন, ‘পদ্মা সেতু চালু হলেও লঞ্চ সার্ভিসে কোনো প্রভাব পড়বে না। তখন মানুষের চলাচল বেড়ে যাবে। পর্যটকেরা আরও আকৃষ্ট হবে। যে কারণে হতাশ হওয়ার কোনো কারণ নেই।’

স্বপ্নের পদ্মা সেতু সম্পর্কে সবশেষ খবর পেতে - এখানে ক্লিক করুন 

এ ব্যাপারে বরিশাল-ঢাকা লঞ্চের রোটেশন প্রথা রোধে গঠিত কমিটির সদস্য কাজী এনায়েত হোসেন শিবলু বলেন, ‘পদ্মা সেতু চালু হলে লঞ্চে তার প্রভাব তো পড়বেই। কেবিনের ৪০ ভাগ, আর ডেকের ২০ ভাগ লঞ্চ যাত্রী কমে যেতে পারে। আরও যাত্রী কমবে রেল চালু হলে। তাই যাত্রীদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করতে হবে। সেবা না বাড়লে যাত্রী ধরে রাখা কঠিন হবে।’

প্রসঙ্গত বরিশাল-ঢাকা নৌপথে অত্যাধুনিক ২২টি লঞ্চ চলাচল করে। ঈদ কোরবানি ছাড়াও শুক্র, শনি কেবিনের টিকিট নিয়ে হুলুস্থল শুরু হয় লঞ্চে।

পদ্মা সেতু সম্পর্কিত আরও পড়ুন:

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ

ঢাকা সড়ক পরিবহন: প্রশ্নবিদ্ধ কমিটিতেই চলছে মালিক সমিতির কার্যক্রম

৪০ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি করবে টিসিবি

৮ বছরে শিশুহত্যা হয়েছে ৪০০০

যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধির শীর্ষে বাংলাদেশ, তবে বাজারে পিছিয়ে

দেশে ব্যবসায় ঘুষ–দুর্নীতিসহ ১৭ রকমের বাধা

বিদ্যালয়ের জমিতে ৩৯১টি দোকান, ভাড়া নেয় কলেজ