মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া সরকারি আদর্শ পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণিতে লটারির মাধ্যমে ফল প্রকাশের চূড়ান্ত তালিকায় ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতি করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। লটারিতে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের নামের তালিকায় অন্য শিক্ষার্থীদের নাম বসিয়ে ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে। গত ১৫ ডিসেম্বর ৫ সদস্যের কমিটির উপস্থিতিতে সাটুরিয়া ইউএনওর কার্যালয়ে এ লটারি অনুষ্ঠিত হয়।
এ নিয়ে অভিভাবকদের মধ্যে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে। অভিভাবকেরা এই ফলাফল বাতিলের দাবি করেছেন। স্কুল সরকারি হওয়ার পর থেকে একটি চক্র প্রতি বছর লাখ লাখ টাকার ভর্তি-বাণিজ্য করে আসছেন বলেও অভিভাবকদের অভিযোগ রয়েছে।
প্রকাশিত ফলাফল পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ফরম নম্বর ৮৪-এর শিক্ষার্থীর নাম মো. বায়জিদ, পিতা মো. মামুন অর রশিদ, মাতার নাম নাসরিন আক্তারের স্থলে চূড়ান্ত তালিকায় দেখা যায়, শিক্ষার্থীর নাম রয়েছে সবুজ মিয়া, পিতা ঠান্ডু মিয়া, মাতা নাছিমা আক্তার।
আবার ফরম নম্বর ১৪১-এর শিক্ষার্থীর নাম আফরোজা আক্তার, পিতা আবুল বাশার ও মাতা মনিকার জায়গায় শিক্ষার্থীর নাম শেহাব উদ্দিন, পিতার নাম আজমত আলী ও মাতার নাম শিরিন বেগম রয়েছে। আবার ৪১ সিরিয়ালে আয়শা আক্তারের জায়গায় শিক্ষার্থীর নাম আসিফ হোসেন রয়েছে।
এদিকে চূড়ান্ত ও অপেক্ষমাণ উভয় তালিকায় যাদের নাম রয়েছে তারা হলো—ফরম নম্বর ৫ রাব্বি হোসেন, ৩৭ অন্তর মনিদাস, ৬৭ ফাল্গুনী দাস, ১২৩ রায়হান হোসেন, ১৩৮ উজ্জ্বল হোসেন, ১৪৫ মো. সায়াম হোসেন, ১৪৯ মো. ইউসুফ আলী ও ১৬৯ জিদান।
অভিভাবক আবদুর রহিম অভিযোগ করেন, প্রকাশিত চূড়ান্ত তালিকায় যাদের নাম রয়েছে অপেক্ষমাণ তালিকাতেও ওই একই শিক্ষার্থীদের নাম রয়েছে। চূড়ান্ত ফলাফল তালিকায় ফরম নম্বরের সঙ্গে শিক্ষার্থীর নামের কোনো মিল নেই। আবার অনেক ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের পিতা ও মাতার নামের মিল নেই।
আরেক অভিভাবক মামুন আর রশিদ অভিযোগ করে বলেন, ‘যে সকল শিক্ষার্থীর নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে তাদের অনেকের মোবাইল ফোনে বার্তা পাঠানো হয়নি। অথচ যাদের নাম চূড়ান্ত তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়নি তাদের মোবাইল ফোনে বার্তা পাঠানো হয়েছে। আমি এই ফলাফল বাতিল করার জোর দাবি জানাচ্ছি।’
সাটুরিয়া সরকারি আদর্শ পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. জসিম উদ্দিন এ বিষয়ে বলেন, ‘সফটওয়্যারের ভুলের কারণে এমনটি হতে পারে। আর ভুলবশত গতবারের কারিগরি শিক্ষার্থীদের নামের তালিকাটা এবারের ফলাফলের সঙ্গে সংযুক্ত হয়ে গেছে। এ বিষয়ে আগামীতে আরও সাবধান থাকা হবে।’
সাটুরিয়া সরকারি আদর্শ পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ের সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শারমিন আরা বলেন, ‘ফল প্রকাশের চূড়ান্ত তালিকায় যেসব ভুল হয়েছে তা খতিয়ে দেখা হবে।’