মো. ফরিদ রায়হান, অষ্টগ্রাম
‘ফোর-জি ও সেক্স ফেরোমন ফাঁদ’ পদ্ধতি ব্যবহারে বাড়ছে লাউয়ের উৎপাদন। কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রামে পতিত জমিতে এ পদ্ধতিতে কীটনাশকমুক্ত লাউ চাষে
ঝুঁকছেন কৃষক।
পতিত জমিতে লাউ চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন কৃষক আক্কাস আলী। গত বছর বাড়ির ঢালুতে ৬ শতাংশ জমিতে সাড়ে ৮ হাজার টাকা খরচে লাউ চাষ করে বিক্রি করেন ৬৫ হাজার টাকা। কৃষি উপকরণসহ এবার ৬ হাজার টাকায় ১০ শতাংশ জমিতে লাউ চাষ করেন। ২০ নভেম্বর গড়ে ৬০ টাকা করে ৫৫ হাজার টাকার লাউ বিক্রি করেন। ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আরও ৫০-৬০ হাজার টাকা বিক্রি করতে পারবেন বলে জানান তিনি।
আক্কাস আলী আরও বলেন, আগে ছয় মাস কৃষিকাজ (বোরো ধান) করে, ছয় মাস বেকার থাকতাম। এ সময় কৃষি কর্মকর্তা মাহফুজ স্যারের পরামর্শে ফোর-জি ও তাবিজ (ফেরোমন ফাঁদ) নিয়মে লাউ চাষ করি, বছরে লাখ টাকার বেশি আয় হয়, ছেলেমেয়ের পড়ালেখার খরচ চলে।
জানা গেছে, প্রাকৃতিক উপায়ে লতানো গাছের শাখা কর্তনের মাধ্যমে লাউয়ের জেনারেশন পরিবর্তন করে উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব। কৃষিবিদের মতে, বীজ থেকে লাউয়ের লতানো গাছ বা স্টেমকে ফার্স্ট জেনারেশন বলা হয়। লতানো গাছটি ১২টি পাতা দেওয়ার পর শাখাটি কেটে দিলে সেকেন্ড জেনারেশন (টু-জি) হয়। এ পদ্ধতিতে গাছের শাখায় ১২টি পাতার পর তার শাখা কাটলে গাছটি থার্ড জেনারেশনে (থ্রি-জি) এবং পুনরায় ১২ পাতা গজানো শেষে শাখা কাটা হলে লাউগাছটি ফোর জেনারেশনে (ফোর-জি) রূপান্তর হয়।
কৃষি কার্যালয় সূত্র জানায়, এ বছর ৩০ জন কৃষক ফোর-জি পদ্ধতি প্রয়োগ করে লাউ চাষ করেন, যা গত বছরের তুলনায় দ্বিগুণ। আগামী মৌসুমে লাউচাষির সংখ্যা ও চাষের পরিমাণ বাড়বে বলে জানায় উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর। ফোর-জি পদ্ধতির মাধ্যমে লাউ ছাড়াও মিষ্টিকুমড়া, চালকুমড়া, শসা, ঝিঙে, করলাগাছের ফলন বৃদ্ধি করা সম্ভব।
উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান সরকার বলেন, `কৃষকদের থ্রি-জি, ফোর-জি কাটিং পদ্ধতি শিখিয়ে দিই এবং কীভাবে বিনা সার ও কীটনাশক ব্যবস্থাপনায় বিষমুক্ত লাউ চাষ করে তাঁরা সফল হবেন।’
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মুহা. আব্দুল মতিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, `আমি হাওরে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে বৃহত্তর পরিসরে কৃষকদের সবজি চাষে উদ্বুদ্ধ করি।
বিশেষ করে লাউ ও সবজি চাষে ঝুঁকছেন কৃষকেরা।’