ঘাটাইলে নুসরাত জাহান নিশি নামের এক গৃহবধূকে গত শনিবার রাতে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার পর বোরকা পরে পালানোর চেষ্টা করেন তাঁর স্বামী। তবে শেষ রক্ষা হয়নি। জনতার হাতে ধরা পড়েন। পরে তাঁকে পুলিশে দেওয়া হয়।
নুসরাত জাহান নিশি (১৯) গোপালপুর উপজেলার কুরমোশিয়া গ্রামের খোরশেদ আলমের মেয়ে। তিনি উপজেলার ছয়ানী বকশিয়া গ্রামের আব্দুল আলিমের স্ত্রী। তাঁকে হত্যার অভিযোগে নুসরাতের বাবা বাদী হয়ে ঘাটাইল থানায় শনিবার রাতেই মামলা করেন। এ ঘটনায় নুসরাতের স্বামী আলিম ও তাঁর মা-বাবাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
এজাহার ও নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, বছরখানেক আগে আলিমের সঙ্গে পারিবারিকভাবে নুসরাতের বিয়ে হয়। বিয়ের সময় ১ লাখ ৩৫ হাজার টাকা যৌতুক নেন আলিম। তারপরও বাবার বাড়ি থেকে টাকা আনার জন্য নুসরাতকে চাপ দিতেন তিনি। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হতো। নুসরাতকে শারীরিক নির্যাতনও করা হতো। এ ঘটনার জেরে তাঁকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে ঘটনা ধামাচাপা দিতে লাশ ঝুলিয়ে রাখা হয়।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, নুসরাতকে হত্যার ঘটনা জানাজানি হলে হাত পায়ে মোজা এবং বোরকা পরে পালানোর চেষ্টা করেন আলিম। তবে এ সময় ঘটনাস্থল থেকে তাঁকে আটক করে উপস্থিত জনতা। পরে তাঁকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।
নিহত গৃহবধূর মা সুফিয়া বেগম বলেন, ‘পরিকল্পিতভাবে আমার মেয়েকে হত্যা করে লাশ ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। আমার মেয়ে এইচএসসি পরীক্ষার্থী ছিল। তবে লেখাপড়া করতে দিতে রাজি ছিল না তাঁর স্বামী।’
তবে আলিমের পরিবারের দাবি, ‘নুসরাত রাগী ও জেদি প্রকৃতির মেয়ে ছিল। সে কোনো কথা শুনতে নারাজ ছিল। তাকে কেউ হত্যা করেনি। সে আত্মহত্যা করেছে।’
ঘাটাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আজহারুল ইসলাম সরকার বলেন, এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। মামলার আসামি আলিম ও তাঁর মা-বাবাকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর গৃহবধূর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে।