হোম > ছাপা সংস্করণ

ভোলার ৭ উপজেলা অস্তিত্ব সংকটে শতাধিক খাল

মো. সাইফুল ইসলাম আকাশ, বোরহানউদ্দিন (ভোলা)

মেঘনা, তেঁতুলিয়া ও ইলিশা নদীকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা দেশের বৃহত্তম দ্বীপজেলা ভোলায় রয়েছে ছোট-বড় হাজারো খাল। কিন্তু অবৈধ দখল-দূষণে শতাধিক খাল অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে। দেখে বোঝার উপায় নেই, খালগুলোয় একসময় ছিল পানির অবাধ প্রবাহ, চলত পণ্যবাহী জাহাজ। শুষ্ক মৌসুমে চাষাবাদে কৃষকের পানির চাহিদাও মেটাত খালগুলো। কিন্তু দখল করে গড়ে তোলা অবৈধ স্থাপনায় খালগুলো সরু নালায় পরিণত হয়েছে।

সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলা পৌর বাজারের খালটি অবৈধ দখল আর দূষণে হারিয়ে যাওয়ার পথে। খালের দুপাশে অবৈধভাবে অসংখ্য দোকানঘর ও স্থাপনা গড়ে উঠেছে। শুষ্ক মৌসুমে পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ড, পক্ষিয়া, কুতুবা, বড়মানিকা, গঙ্গাপুর গ্রামসহ আশপাশের আরও কয়েকটি গ্রামের কয়েক হাজার কৃষক এই খালের পানি কৃষিকাজে ব্যবহার করতে পারছেন না। এতে রবিশস্য উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। শুধু বোরহানউদ্দিন উপজেলার চার ইউনিয়নেই এই খালসহ ১১টি খাল অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে। 

দৌলতখান উপজেলার খাসেরহাট, মেদুয়া, হাজিপুরসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের খালের দুই পাড়ে গড়ে উঠেছে অবৈধ স্থাপনা। খালের জমি দখল করে পাকা ভবন নির্মাণের হিড়িক পড়েছে। অনেকে দাবি করছেন, খালের মধ্যে তাঁদের জমি আছে। তাই খালের মধ্যে পাইলিং করে কয়েকতলা ভবন নির্মাণ করছেন। কেউ আবার খালের ভেতরের জমি নিজের দাবি করে অন্যের কাছে বিক্রিও করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

এদিকে ভোলা পৌরসভার ব্রাইট ইন্টারন্যাশনাল স্কুলসংলগ্ন এলাকা থেকে সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয় পর্যন্ত খালের পাড় দখল করে দুই শতাধিক দোকান এবং কয়েকটি বহুতল ভবন নির্মাণ করেছে একটি প্রভাবশালী মহল। তবে এ বিষয়ে পৌর কর্তৃপক্ষের পদক্ষেপ দেখা যায়নি। শুধু ভোলা সদর, বোরহানউদ্দিন কিংবা দৌলতখান নয়, বরং জেলার সাত উপজেলাতেই খালের ওপর নজর পড়েছে প্রভাবশালীদের।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত কয়েক বছরে বেশ কয়েকবার আগুনে পুড়েছে জেলার বেশ কিছু মার্কেট। এতে কোটি কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে ব্যবসায়ীদের। অনেক ক্ষেত্রে পানির সংকটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে হিমশিম খেতে হয়েছে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের। 

ভোলার সুতাপট্টির এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘আমাদের মার্কেটের পাশেই বিশাল আকারের খাল রয়েছে। তবে খালের জমিতে দোকান তুলে বরাদ্দ দিয়েছে পৌর কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া প্রভাবশালী অনেকে বহুতল ভবন নির্মাণ করেছে।’

ভোলা জিয়া মার্কেটের কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, মার্কেটে আগুন লাগলে নেভানোর জন্য খালের পানি ওঠাতে পারেননি তাঁরা। এতে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ব্যবসায়ীরা। 

পৌরসভা থেকে দোকান বরাদ্দ নেওয়া এক ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, দোকান বরাদ্দ নিতে ব্যবসায়ীরা ১৫-২০ লাখ টাকা করে দিয়েছেন মেয়রকে। এ ছাড়া ভাড়া বাবদ প্রতি মাসে পৌরসভাকে ৫ হাজার টাকা ভাড়াও দিচ্ছেন। 

সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) ভোলার সভাপতি মোবাশ্বিরুল উল্লাহ চৌধুরী বলেন, যখন যে দলের সরকার আসে, তখন তাদের লোকজন খাল দখলে নেয়। এ ক্ষেত্রে প্রশাসন নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে। অথচ খাল খননের জন্য কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ হলেও দৃশ্যমান খনন হয়নি। টাকাগুলো আত্মসাৎ করেছে কর্তৃপক্ষ। 

এ বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের নিযুক্ত ভোলা পৌরসভার প্রশাসক অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মনজুর হোসেন বলেন, ‘পৌরসভার খালের ওপরে যে দোকান নির্মাণের কথা বলা হয়েছে, সেগুলো পৌরসভার, নাকি খাসজমি, সে বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভোলার জেলা প্রশাসক আরিফুজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ভোলার বিভিন্ন উপজেলায় অবৈধ দখলদারদের শনাক্ত করা গেছে। তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা এবং অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া জেলার পাঁচটি পৌরসভায় থাকা বিভিন্ন খালের আবর্জনা পরিষ্কার করে পানির প্রবাহ নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট পৌর প্রশাসকদের নির্দেশ দিয়েছি।’

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ

ঢাকা সড়ক পরিবহন: প্রশ্নবিদ্ধ কমিটিতেই চলছে মালিক সমিতির কার্যক্রম

৪০ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি করবে টিসিবি

৮ বছরে শিশুহত্যা হয়েছে ৪০০০

যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধির শীর্ষে বাংলাদেশ, তবে বাজারে পিছিয়ে

দেশে ব্যবসায় ঘুষ–দুর্নীতিসহ ১৭ রকমের বাধা

বিদ্যালয়ের জমিতে ৩৯১টি দোকান, ভাড়া নেয় কলেজ

সড়ক দুর্ঘটনায় ৬ প্রাণহানি

সেকশন