সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা শুরু হতে আর কয়েক দিন বাকি। এরই মধ্যে শুরু হয়েছে পূজার প্রস্তুতির তোড়জোড়। অনেক স্থানে ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে প্রতিমা তৈরির কাজ। এখন চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। তবে সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার একটি পূজামণ্ডপ এরই মধ্যে নজর কাড়তে শুরু করেছে দর্শনার্থীদের। এখানকার প্রতিমাগুলো তৈরি করা হয়েছে ১০০ কেজি চিনিগুঁড়া ধানের শৈল্পিক কারুকাজে। ব্যতিক্রমী এই মণ্ডপটির অবস্থান উপজেলার মুরারিকাটি উত্তর পালপাড়ায়।
গতকাল মঙ্গলবার সকালে মুরারিকাঠি উত্তর পালপাড়া দুর্গাপূজা মন্দিরে গিয়ে দেখা যায়, সোনালি রঙের চিনিগুঁড়া ধানের শৈল্পিক কারুকাজে নির্মাণ করা হয়েছে ১৮টি প্রতিমা। আপাতদৃষ্টিতে মনে হচ্ছে, প্রতিমাগুলো সোনা দিয়ে মোড়ানো হয়েছে।
প্রতিমা তৈরির কারিগর শিল্পী পল্লত বিশ্বাস বলেন, ১৮টি প্রতিমা পূর্ণাঙ্গভাবে তৈরি করতে এক মাস সময় লেগেছে। এই মণ্ডপে দুর্গা, কার্তিক, গণেশ, সরস্বতী, লক্ষ্মী, অসুরসহ আনুষঙ্গিক ১৮টি প্রতিমা তৈরির জন্য প্রথমে কাঠ, বাঁশ, পাট, নকশি কাপড়ের পাড় ও বিচালির ফ্রেম বা কাঠামো তৈরি করা হয়। পরে মাটি ও বিশেষ শৈল্পিক কারুকাজ হিসেবে চিনিগুঁড়া ধান ব্যবহার করা হয়েছে। কিছু কিছু অংশে ব্যয়বহুল রং স্প্রে করা হয়েছে, যা প্রতিমাগুলোর সৌন্দর্য আরও বাড়িয়েছে।
মুরারিকাটি পালপাড়া পূজা উদ্যাপন কমিটির সদস্য প্রদীপ পাল বলেন, এবার ১০০ কেজি চিনিগুঁড়া ধান ব্যবহার করা হয়েছে প্রতিমা তৈরিতে। ধান দিয়ে তৈরি প্রতিমা দেখতে ভিড় করছে বিভিন্ন বয়সী মানুষ।
স্থানীয় বাসিন্দা শ্যামপদ পাল বলেন, প্রায় ১ লাখ টাকার মতো খরচ করে ধানের এই প্রতিমা নির্মাণ করা হয়েছে। বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষজন এই প্রতিমা দেখতে আসছে। পূজা শুরু হলে দর্শনার্থীদের ভিড় আরও বাড়বে।
কলারোয়া উপজেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সন্দীপ রায় জানান, ২০ অক্টোবর থেকে দুর্গাপূজা শুরু হবে। প্রতিমা বিসর্জন হবে ২৫ অক্টোবর সন্ধ্যায়। এবার উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় ৪৮টি পূজামণ্ডপে দুর্গোৎসব উদ্যাপিত হবে। মণ্ডপে মণ্ডপে প্রতিমা তৈরি এবং আনুষঙ্গিক সব প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে।