পশুর হাটের সাইনবোর্ডে গরু কেনার খাজনা লেখা রয়েছে ২৩০ টাকা। কিন্তু আদায় করা হচ্ছে ৪০০ টাকা। ঘটনাটি ঘটেছে ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার নেকমরদ ও কাতিহার হাটে।
সপ্তাহে শনিবার কাতিহার ও রোববার নেকমরদ হাটে গরু, ছাগলসহ বিভিন্ন পণ্যসামগ্রী বেচাকেনা হয়। এতে হাট দুটিতে ব্যাপক মানুষের জমায়েত হয়। দূর-দূরান্ত থেকে ফড়িয়ারা আসেন প্রয়োজনীয় মালামাল কিনতে। অন্য সব ঠিক থাকলেও গরু-ছাগল ও পণ্য বেচাকেনায় অতিরিক্ত খাজনা আদায়ের অভিযোগ রয়েছে মানুষের।
গত শনিবার কাতিহার হাটে গিয়ে দেখা যায়, ইজারাদারের নিয়োগ করা ব্যক্তিরা গরু-ছাগল ক্রয়ের রসিদ দিচ্ছেন। খাজনা বাবদ গরু ৪০০ টাকা, ছাগল ১৫০ টাকা করে আদায় করছে। তবে রসিদে খাজনা আদায়ের টাকার পরিমাণ লেখা হচ্ছে না।
একইভাবে গতকাল রোববার নেকমরদ হাটে গিয়ে দেখা যায়, হাটে প্রবেশপথের বাম পাশে বাঁশের খুঁটিতে হাটে গরু ছাগলসহ বিভিন্ন দ্রব্যসামগ্রীর সরকারিভাবে নির্ধারিত টোলের দর সংবলিত সাইনবোর্ড টাঙানো রয়েছে। হাটে অনেক মানুষের সমাগম। যেখানেই গরু ছাগল সেখানেই জটলা বেঁধে ক্রেতা-বিক্রেতার মধ্যে দর কষাকষি চলছে। দামে মিলে গিয়ে গরু-ছাগল কেনার রসিদ নিতে গেলেই বেধে যায় বিপত্তি। টাঙানো সাইনবোর্ডে গরু কেনার খাজনা লেখা রয়েছে ২৩০ টাকা, কিন্তু নেওয়া হচ্ছে ৪০০ টাকা। অপরদিকে ছাগলের দর সাইনবোর্ডে লেখা রয়েছে ৯০ টাকা, আদায় করা হচ্ছে ১৫০ টাকা। তবে রসিদের ক্রেতা বিক্রেতার নামসহ গরু শনাক্তের যাবতীয় তথ্য থাকলেও আদায় করা খাজনার টাকার পরিমাণ লেখা থাকছে না।
অতিরিক্ত খাজনার বিষয়ে উপজেলার সন্ধ্যারই গ্রামের গরু ক্রেতা আব্দুল জব্বার জানান, বাড়িতে পোষার জন্য তিনি একটি গরু কিনেছেন। হাটে প্রবেশের সময় তিনি সাইনবোর্ডে দেখেছিলেন গরুর খাজনা ২৩০ টাকা, কিন্তু তাঁর কাছে আদায় করা হয়েছে ৪০০ টাকা।
উপজেলার ভবানন্দপুর গ্রামের ছাগল ক্রেতা বিনয় চন্দ্র রায় বলেন, ‘ছোট একটি খাসি ছাগল কিনলাম। এর খাজনা দিতে হলো ১৫০ টাকা।’
একাধিক গরু-ছাগলের ফড়িয়া অভিযোগ করেন, একটি গরুতে ১৭০ টাকার বেশি নেওয়া হচ্ছে, ছাগলে নেওয়া হচ্ছে ৬০ টাকা। প্রত্যেক হাটে কমপক্ষে প্রায় ৪০০ গরু ২০০ ছাগল ক্রয় বিক্রয় হয়। এতে ৪০০টি গরুতে বেশি নেওয়া হচ্ছে প্রায় ৬৮ হাজার টাকা। একইভাবে ছাগলে ১২ হাজার টাকা অতিরিক্ত আদায় করা হচ্ছে।
জানতে চাইলে নেকমরদ হাটের ইজারাদার আব্দুল কাদের বলেন, ‘হাটে যথানিয়মে খাজনা আদায় করা হচ্ছে।’ যথানিয়ম কী জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘গরু ৪০০ টাকার কিছু কম আর ছাগল কিছু বেশি নেওয়া হচ্ছে।’ গরু ২৩০ টাকা, ছাগল ৯০ টাকা, সেখানে আপনি বেশি আদায় করছেন কেন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আসলে আপনাকে কী বলব, একটু বেশি নেওয়া হচ্ছে।’
এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি কাতিহার পশুর হাটের ইজারাদার আহাম্মদ হোসেন বিপ্লব।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোহেল সুলতান জুলকার নাইন কবির বলেন, ‘হাটে অতিরিক্ত খাজনা আদায়ের সুযোগ নেই। খাজনা বেশি নেওয়ার বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে এসি ল্যান্ডকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।’