তৃতীয়বারের মতো নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) নির্বাচনে মেয়র পদে জিততে দিনরাত ভোটারের দুয়ারে যাচ্ছেন সেলিনা হায়াৎ আইভী। যদিও পৌরসভার হিসাবে ইতিমধ্যে হ্যাটট্রিক করেছেন। এবার দলীয় বিভাজনের মাঝে প্রথমে নৌকা প্রতীক প্রাপ্তি নিয়ে উত্তেজনা ছিল। অনেকেই ভেবেছিলেন, নৌকা পেলেই বাকিটা উতরে যাওয়া যাবে নিমেষেই। কিন্তু সামনে তৈমুরের হস্তী বাহিনী নতুন সমীকরণের দিকে ঠেলে দিয়েছে আইভীকে।
১৬ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় নির্বাচনে নেতা-কর্মীদের বাগ্যুদ্ধ সবাই দেখেছে গণমাধ্যমে। জনপ্রতিনিধির সামনে কী কী চ্যালেঞ্জ আছে, তা নেতাদের বাইরে ভোটাররা বেশ স্পষ্ট করেই বলতে পারেন। কারণ, নেতাদের মতো কৌশলী বক্তব্য দিতে একেবারেই অভ্যস্ত নন তাঁরা। শহরের খানপুর এলাকার বাসিন্দা সুমন বলেন, মেয়র হিসেবে জয়লাভের জন্য আইভীর সামনে চ্যালেঞ্জ হিসেবে থাকবে তৈমুরের ব্যক্তিগত জনপ্রিয়তা। বিগত নির্বাচনে সাখাওয়াত যে কয়টি ভোট পেয়েছে, তা সবই ধানের শীষ প্রতীকের কল্যাণে।
কিন্তু এই নারায়ণগঞ্জে ব্যক্তি তৈমুরের জনপ্রিয়তা আছে। বিআরটিসিতে থাকার সময় নারায়ণগঞ্জের মানুষকে গণহারে চাকরি দিয়েছিলেন। এ ছাড়া বিএনপির নেতা-কর্মীদের বাড়ি বাড়ি যেভাবে পুলিশ যাচ্ছে, তাতে তাঁরা তৈমুরনির্ভর হয়ে উঠছেন।
শহরের নিতাইগঞ্জ এলাকার গৃহিণী আরিয়ানা সিদ্দিক বলেন, নারীরা তো ভোট দিতে যান কম। কারণ, লাইন দেখলেই বাসায় চলে আসেন। তাঁদের উপস্থিতি নিশ্চিত করা জরুরি। নারীদের ভোটে যে আইভী এগিয়ে থাকেন, তা সবাই জানে। এ ছাড়া নতুন ইভিএমে সঠিকভাবে ভোট দেওয়াটা নিশ্চিত করাটাও বড় চ্যালেঞ্জ। ইভিএমের বিষয়ে নারীরা কিছুটা পিছিয়ে।
১৬ নম্বর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের প্রবীণ এক সদস্য বলেন, ‘যেভাবে দলটার মধ্যে দুই ভাগ কইরা ফেলছে, এইটা খুব খারাপ। ওসমানপন্থী নেতা-কর্মীরা ঠিকঠাক নামে নাই। নির্বাচনের সময় এক থাকা দরকার ছিল। অন্তত কেন্দ্রে কেন্দ্রে এই পোলাপানগুলাই বেশি খাটে। আর ম্যাডামের পিছে অন্যান্য প্রার্থী যেমনে সিটির ট্যাক্স নিয়া নামছে, এইটাতে অনেকে অখুশি। এইটা সমস্যা করতে পারে।’
১২ নম্বর ওয়ার্ডের এক বিএনপি সমর্থক বলেন, ‘আইভীকে আমরাও ভোট দিয়েছি। তবে ইউনিয়ন পরিষদে যেভাবে নৌকার পরাজয় হচ্ছে সেই প্রভাব সিটিতেও পড়তে পারে। তার সমর্থক রফিউর রাব্বি নিজেও তো একই ইঙ্গিত দিয়েছেন।’
তবে এসব উড়িয়ে দিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আইভী যেই পরিমাণ উন্নয়ন করেছেন, তা সবার সামনেই দৃশ্যমান। তিনি এমন কোনো কাজ করেননি যে মানুষ তাঁকে ভোট দেবে না।’ তিনি মনে করেন, নির্বাচনে ভোটারদের সুন্দরভাবে ভোট দিতে পারাটাই চ্যালেঞ্জ। কেন্দ্রে সন্ত্রাসীদের উৎপাত ছাড়া ভোট দিতে পারলে বিপুল ভোটে নৌকা পাস করবে।
আরও পড়ুন: