ফরিদগঞ্জ (চাঁদপুর) প্রতিনিধি
চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জের সুবিদপুর পূর্ব ইউনিয়নের মনতলা সর্দার বাড়িতে পারভীন বেগমের (৩৮) জন্ম। মা-বাবাকে হারিয়েছেন প্রায় ৩৫ বছর আগে। জন্ম থেকে দুই পা খোঁড়া। ছোটবেলা থেকে মানুষের বাড়িতে ছোটখাটো কাজ করে তাঁর বেড়ে ওঠা। পরে তাঁর বিয়ে হয়। বিয়ের কয়েক বছর পর থেকে স্বামী রিপন মিয়ার কোনো খবর নেই। এক সন্তান নিয়ে রাতযাপন করছেন ভাইয়ের ভাঙা বসতঘরে। ভাইয়ের ঘরে কোনো মেহমান এলে খোলা আকাশের নিচেই মা-সন্তানের রাত কাটাতে হয়।
সরেজমিনে দেখা যায়, চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার ৩ নম্বর সুবিদপুর পূর্ব ইউনিয়নের মনতলা সর্দার বাড়িটির চারপাশে মাঠ। চলাচলের কোনো রাস্তা নেই। বাড়িতে প্রায় ৭-৮টি পরিবারের বসবাস। এর মধ্যে একটি জরাজীর্ণ ঘরে বসবাস করছেন মৃত নুরুল ইসলাম সর্দারের ছোট মেয়ে প্রতিবন্ধী পারভীন বেগম।
স্থানীয় বাসিন্দা বিল্লাল সর্দার, মিজান মিজি ও হোসেন মিজি। তাঁরা ছোটবেলা থেকে দেখে আসছেন প্রতিবন্ধী পারভীনের সংগ্রামী জীবন। বলেন, এক সন্তান নিয়ে মানুষের বাড়িতে কাজ করে দিন শেষে ভাইয়ের ভাঙা ঘরে রাতযাপন করেন পারভীন।
প্রতিবন্ধী পারভীন বেগম বলেন, ‘জন্মগতভাবে আমার দুই পা খোঁড়া। কিন্তু আজ পর্যন্ত প্রতিবন্ধী কার্ড পাইনি। তবে মাঝেমধ্যে চাল পেলে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে খুব কষ্টে আনতে হয়। শুনেছি সরকার গরিব মানুষকে থাকার ঘর দেয়। আমার তো কোনো থাকার জায়গা নাই। ভাইয়ের ছোট্ট বাসায় থাকি। তাঁদের কোনো মেহমান এলে আমরা মা-ছেলেকে খোলা আকাশের নিচে ঘুমাতে হয়। আমি একজন প্রতিবন্ধী হিসেবে সরকারের কাছে থাকার জন্য ছোট একটা ঘর চাই।’
স্থানীয় ইউপি সদস্য নাছির উদ্দিন পাটওয়ারী বলেন, ‘প্রতিবন্ধী কার্ডের বিষয় আমার জানা নাই, আগের ইউপি সদস্যরা যদি না করে থাকেন তাহলে আমি ব্যবস্থা করে দেব। ঘর সরকার দিচ্ছে তা চেয়ারম্যান তদারকি করেন। আমিও চাই প্রতিবন্ধী পারভীন একটি ঘর পাক।’