দেবিদ্বার প্রতিনিধি
কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষকের পদ শূন্য থাকায় শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়, উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মাদ্রাসা ও কলেজসহ ৪৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ ও প্রধান শিক্ষকের পদ খালি। এ ছাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৬৫টি পদ শূন্য। প্রধান শিক্ষক ও অধ্যক্ষের ৪৬টি পদ বদলি, অবসর ও মৃত্যুজনিত কারণে শূন্য হয়েছে বলে জানা গেছে। চলতি বছরের মধ্যেই এসব শূন্য পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্নের আশা করছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
একটি সূত্র জানায়, পৌরসভাসহ উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নে ১১টি কলেজ, ৫১টি উচ্চ বিদ্যালয়, ৩১টি মাদ্রাসা ও ১৮৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে ৪টি কলেজ,৫টি উচ্চবিদ্যালয় ও ৩টি মাদ্রাসায় অধ্যক্ষ ও প্রধান শিক্ষক নেই। এ ছাড়া ৩৪টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদ দীর্ঘদিন ধরে শূন্য। এতে প্রশাসনিক কার্যক্রমসহ শ্রেণিকক্ষে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে বলে অভিযোগ অভিভাবকদের।
অধ্যক্ষ শূন্য কলেজগুলো হলো দেবিদ্বার আলহাজ্ব জোবেদা খাতুন মহিলা বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ, জাফরগঞ্জ মীর আবদুল গফুর ডিগ্রী কলেজ, মোহনপুর পাবলিক কলেজ ও মোহাম্মদপুর সেরাজুল হক কলেজ। এ ছাড়া প্রধান শিক্ষক শূন্য উচ্চবিদ্যালয় ও মাদ্রাসাগুলো হলো মোহনপুর উচ্চ বিদ্যালয়, গোপালনগর উচ্চবিদ্যালয়, গঙ্গামন্ডল রাজ ইনস্টিটিউশন, সূর্যপুর উচ্চবিদ্যালয়, নবিয়াবাদ উচ্চবিদ্যালয়, রাজামেহার ফাজিল মাদ্রাসা, ফতেহাবাদ আলিম মাদ্রাসা ও তুলাগাঁও দাখিল মাদ্রাসা। অপরদিকে ১৮৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মোট ৬৫টি সহকারী প্রধান শিক্ষক পদশূন্য রয়েছে।
এ বিষয়ে একাধিক অভিভাবক জানান, দীর্ঘদিন প্রতিষ্ঠানে প্রধান শিক্ষক নেই। করোনাকালীন আড়াই বছর প্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল। এতে শিক্ষার্থীদের যে ক্ষতি হয়ে তা পুষিয়ে নিতে শিগগিরই প্রধান শিক্ষকসহ শূন্যপদে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার দাবি জানান তাঁরা।
জাফরগঞ্জ মীর আবদুল গফুর ডিগ্রী কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. শফিকুর রহমান বাবুল বলেন, কলেজে অধ্যক্ষের পদ শূন্য থাকায় তিনি ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করছেন। এতে কলেজের পাঠদানে কোনো বিঘ্ন ঘটছে না বলে জানান তিনি। এইচএসসির ফলাফলে এ কলেজটি উপজেলার মধ্যে ২০১৯ সালে শ্রেষ্ঠ কলেজ নির্বাচিত হয়েছে ও নতুন অধ্যক্ষ নিয়োগের জন্য পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে বলেও তিনি জানান।
দেবিদ্বার উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এ কে এম আলী জিন্নাহ বলেন, কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রধান শিক্ষককের পদ দীর্ঘদিন শূন্য থাকায় শিক্ষার্থীদের পাঠদান ও শিক্ষার গুণগত মান ব্যাহত হচ্ছে। তাই প্রত্যেক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির প্রতি দ্রুত ও যথাযথ প্রক্রিয়ায় যেন শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয় সে অনুরোধ জানান তিনি।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা গাজী আনোয়ার হোসেন বলেন, ১৮৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ৩৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। সে সব বিদ্যালয়ের শূন্য পদ রয়েছে শিগগির সে সব প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হবে।