নগরকান্দা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি
সরকারি খাদ্যগুদামে সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ধান ক্রয় শুরু হলেও ফরিদপুরের নগরকান্দার কৃষকেরা ধান বিক্রি করতে অনীহা প্রকাশ করছেন। এতে সরকারের ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
উপজেলা খাদ্য দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর এ উপজেলায় সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ৪৩৫ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহের অনুমতি পেয়েছে। ব্যাপক প্রচার চালিয়ে উন্মুক্ত লটারির মাধ্যমে কৃষক বাছাই করা হয়। গত ৫ নভেম্বর থেকে শুরু হয় ধান সংগ্রহ অভিযান। প্রতি কেজি ধানের সরকারি মূল্য ধরা হয়েছে ২৭ টাকা। প্রায় তিন মাসে এ উপজেলায় ধান সংগ্রহ করা হয়েছে মাত্র ৮৫ মেট্রিক টন। যা লক্ষ্যমাত্রার অনেক কম।
উপজেলার কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সরকারি মূল্যের চেয়ে বাজারের মূল্য বেশি। তাই তাঁরা সরকারি খাদ্যগুদামে ধান বিক্রি করতে চান না।
উপজেলার শহীদনগর ইউনিয়নের ঈশ্বরদী গ্রামের কৃষক আব্দুল মান্নান মাতুব্বর বলেন, তাঁরা বাজারে ধান বিক্রি করতে যে সুবিধা পান, গুদামে সেই সুবিধা পান না। গুদামে অনেক কড়াকড়িভাবে ধান নেয়। যেমন, বেশি শুকনা করতে হয়, পরিষ্কার করতে হয়। তা ছাড়া বাজারের চেয়ে গুদামে ধানের দাম কম।
লস্করদিয়া ইউনিয়নের জুংগরদী গ্রামের কৃষক আসাদ মাতুব্বর বলেন, ‘আমরা কৃষক, যেখানে দাম বেশি পাব সেখানে বিক্রি করব। সরকারি দামের চেয়ে বাজারে ধানের দাম বেশি, তাই আমরা বাজারে ধান বিক্রি করছি।’
উপজেলা খাদ্যগুদাম রক্ষক মোহাম্মাদ আজাহার আলী বলেন, তাঁরা ব্যাপক প্রচার করে ধান সংগ্রহের কাজ শুরু করেন। কিন্তু কৃষক তাঁদের কাছে ধান বিক্রি করছেন না।
উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা আফজাল হোসেন বলেন, তাঁরা শুরুতেই ব্যাপক প্রচার চালিয়ে ধান সংগ্রহের কাজ শুরু করেছিলেন। তখন কৃষকদের বাছাই করতে উন্মুক্ত লটারি করতে হয়েছে। কিন্তু এখন কৃষকেরা ধান গুদামে বিক্রি করছেন না। তাঁরা কৃষকদের বাড়ি গিয়ে ধান দিতে অনুরোধ করেছেন।
কৃষকদের ধান বিক্রিতে অনীহার কারণ হিসেবে খাদ্য কর্মকর্তা বলেন, সরকারি মূল্যের চেয়ে বাজারে ধানের মূল্য বেশি থাকায় কৃষকেরা ধান দিতে চাচ্ছেন না।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেতী প্রু বলেন, খাদ্যগুদামে ধান সরবরাহ করার জন্য কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।