Ajker Patrika
হোম > ছাপা সংস্করণ

রোদে স্বস্তি, ধান শুকানোর ধুম

জাহিদ হোসেন, সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা)

রোদে স্বস্তি, ধান শুকানোর ধুম

‘ধান যেদিন সেদ্ধ কচচি সেই দিন থাকি ঝড়ি আর ঝড়ি। ধান আর পল নষ্ট হছিলে প্রায়। অইদ উঠছে, এখন হামার কোনো চিন্তা নাই।’ রোদে ধান শুকানোর সময় কথাগুলো বলছিলেন কোহিনুর বেগম (৫৫)। তাঁর বাড়ি বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের ফলগাছা গ্রামে। সংসারে তাঁর তিন ছেলে রয়েছে। বসতবাড়ি ছাড়া নিজের কোনো আবাদি জমি নেই তাঁর। ছেলে নাজমুল ইসলাম এক বিঘা জমি বন্ধক নিয়েছেন। সেই বন্ধকি জমির ধান শুকাচ্ছিলেন তিনি।

প্রখর রোদেও ক্লান্তি নেই বরং ধান শুকাতে পেরে কোহিনুর বেগমের মুখে স্বস্তির হাসি। আর এ স্বস্তিতে তিনি একা নন, ওই মাঠে ধান শুকাতে আসা ১৫-১৬টি পরিবার।

একই মাঠে ধান শুকাচ্ছিলেন প্রতিবেশী নাজমা বেগম (৫০)। তিনি বলেন, ‘নিজের খুলি (উঠান) আছে। সেটা ছোট আর অইদ (রোদ) কম পায়। এটে যে ধান ২-৩ দিনে শুকাইবে সেই ধান হামার খুলিত শুকাইতে ৮-৯ দিন নাইগবে। ফির যদি ঝড়ি আইসে তাহলে আরও বিপদ। কামের মানুষও পাওয়া যায় না। পাইলেও দাম বেশি দেওয়া নাগে। সেই জন্যে এটে আসি ধান শুকপার নাকছি। সময়ও কম লাগে, ট্যাকাও বাঁচে।’

ধান শুকাচ্ছিলেন জীবন (৩৫)। ধান ও খড় শুকানোর জায়গার তীব্র সংকটের বিষয়টি স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘বৃষ্টির কারণে ধানগুলো পচে যাচ্ছিল প্রায়। বাড়ির আশপাশে কোনো ফাঁকা জায়গা নেই। সে কারণে এখানে আসা। তা ছাড়া এ মাঠে ধান শুকানোর অনেক সুবিধাও আছে। আজকে এখানে ১৫-১৬টি পরিবারের ধান দেওয়া আছে। প্রতিটি পরিবার থেকে কমপক্ষে ২-৩ জন করে এখানে কাজ করছেন। সবাই সবাইকে সহযোগিতা করছেন। বিশেষ করে ঝড় বা বৃষ্টি এলে ধান কখনো ভিজবে না। আমরা সবাই সবাইকে সহযোগিতা করি।’

পৌরসভা ও উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বিভিন্ন সড়ক, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও খেলার মাঠ দখল করে ধান শুকানোর ধুম পড়েছে। প্রচণ্ড রোদেও নেই তাঁদের কোনো ক্লান্তি বরং ধান শুকাতে পেরে স্বস্তির হাসি দেখা দিয়েছে কিষান-কিষানির চোখে-মুখে। ধান ও খড় শুকানোর কাজে খুবই ব্যস্ত সময় পার করছেন তাঁরা। সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন পরিবারের অন্য সদস্যরাও। বাদ যায়নি ছোট-বড় ছেলে-মেয়েরাও। সকাল থেকে শুরু করে সন্ধ্যা পর্যন্ত কাজ করছেন তাঁরা। দ্রুত ধান শুকাতে মাঠের ঘাসের ওপর বিছানো হয়েছে ছোট-বড় নাইলন সুতার তৈরি নেট। আর সেই নেটেই শুকানো হচ্ছে ধান। কেউ ধান উল্টিয়ে দিচ্ছেন, কেউ ধানের আবর্জনা পরিষ্কার করছেন। অবসর নেই কারও। অস্বস্তির রোদই যেন তাঁদের স্বস্তি এনে দিয়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. রাশেদুল কবির বলেন, ১০ ভাগের এক ভাগ ধান এখনো কাটা হয়নি। সেগুলো জমিতে পানিতে পড়ে আছে। বাকি ৯০ ভাগের ৪০ ভাগ গোলায় তুলতে পেরেছেন কৃষক। আর ৫০ ভাগ ধান ও খড় এখনো কৃষকের বাড়ির আঙিনা, সড়কসহ যত্রতত্র পড়ে আছে। গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে সেগুলো নষ্ট হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল। সে কারণে চরম দুশ্চিন্তায় ছিলেন কৃষক। তবে গত দুই দিনের রোদে কিছুটা হলেও স্বস্তি ফিরেছে তাঁদের মধ্যে। তাঁরা রোদে পরিবার-পরিজন নিয়ে ধান ও খড় শুকানোর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এ অবস্থা একটানা আরও ১০ দিন থাকলে তাঁদের ধান ও খড় শুকানোয় তেমন একটা সমস্যা হবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

কৃষি কর্মকর্তা আরও বলেন, উপজেলার ১৫ ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় এবার বোরো ধানের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৬ হাজার ৭৮১ হেক্টর। তবে অর্জন হয়েছে ২৬ হাজার ৩০৫ হেক্টর। আবহাওয়া অনুকূলে থাকা ও কৃষি বিভাগের তদারকির কারণে এবারে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে।

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ

ঢাকা সড়ক পরিবহন: প্রশ্নবিদ্ধ কমিটিতেই চলছে মালিক সমিতির কার্যক্রম

৪০ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি করবে টিসিবি

৮ বছরে শিশুহত্যা হয়েছে ৪০০০

যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধির শীর্ষে বাংলাদেশ, তবে বাজারে পিছিয়ে

দেশে ব্যবসায় ঘুষ–দুর্নীতিসহ ১৭ রকমের বাধা

বিদ্যালয়ের জমিতে ৩৯১টি দোকান, ভাড়া নেয় কলেজ