লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার জগৎবেড় ইউনিয়নের ধরলার শাখা নদী চেনাকাটার ওপর নির্মিত সেতু পাঁচ বছর আগে ভেঙে গেছে। বন্যায় এর দক্ষিণ অংশ দেবে গিয়ে বাঁকা ও উঁচুনিচু আকার নিয়েছে। উত্তর অংশটিও কাত হয়ে সংযোগ সড়ক থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
সেতু এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, জগৎবেড় ইউনিয়নের দেওদাপাড়া গ্রামের চেনাকাটা শাখা নদীর ওপর স্থাপিত পিসি গার্ডার সেতু বন্যায় বিধ্বস্ত। এটি পাঁচ বছরেও সংস্কার
করা হয়নি। এ কারণে ওই সেতু দিয়ে কোনো যানবাহন চলাচল করতে পারছে না। ফলে কৃষিপণ্য পরিবহন, রোগী পারাপার ও শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে চরম দুর্ভোগে পোহাতে হচ্ছে।
স্থানীয় লোকজন ও উপজেলা প্রকৌশল কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯২ সালের দিকে ৩০ মিটার দৈর্ঘ্যের এই সেতু নির্মাণ করা হয়। ২০১৭ সালের আগস্ট মাসের বন্যায় এর উত্তর অংশ দেবে সড়ক থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। পরে বন্যায় সেতুর দক্ষিণ অংশও কাত হয়ে সংযোগ সড়ক থেকে আলাদা হয়ে গেছে। বর্ষা মৌসুমে স্থানীয় ইউপি সদস্য ও গ্রামবাসী সেতুর উভয় অংশে বাঁশ ও কাঠ দিয়ে সাঁকো বানিয়ে চলাচলের উপযোগী করেন।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সেতুর উত্তর ও দক্ষিণাংশে অনন্ত ১০টি গ্রাম রয়েছে। এসব গ্রামে তিনটি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দুটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, তিনটি মাদ্রাসাসহ উপজেলার বিভিন্ন মহাবিদ্যালয়ে পড়ুয়া স্থানীয় শিক্ষার্থীরা এই সেতু দিয়ে চলাচল করে। এ সেতু দিয়ে জগৎবেড় ইউনিয়ন পরিষদ ও উপজেলা সদরে যাতায়াত করলে সময় ও অর্থ কম লাগে। তা না হলে তিন-পাঁচ কিলোমিটার ঘুরে যাতায়াত করতে হয় স্থানীয় বাসিন্দাদের। নতুন সেতু নির্মাণ না হওয়ায় এসব এলাকার প্রায় পাঁচ হাজার পরিবার বিপাকে পড়েছে।
কচুয়ারপাড় উচ্চবিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী সবুজ ইসলাম বলেন, ‘এই সেতুটি আমাদের সবার জন্য প্রয়োজন। অনেক ছাত্র-ছাত্রী কষ্ট করে চলাচল করে। বর্তমান নদীতে পানি কম, বর্ষার সময় কষ্ট ও ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হয়।’
জগৎবেড় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘সেতুটি ভেঙে পড়ে থাকায় আশপাশের গ্রামের কৃষক, শিক্ষার্থী ও পথচারীদের খুব সমস্যা হচ্ছে। বর্ষার সময় সবার কষ্ট বেড়ে যায়। উপজেলা প্রকৌশল দপ্তরে জানানো হয়েছে।’
জগৎবেড় ইউপির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান সোহেল বলেন, ‘সেতুটি ভেঙে যাওয়ায় এলাকাবাসীসহ অন্য গ্রামের মানুষের সমস্যা দেখা দিয়েছে। কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। সেতুটির নির্মাণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) উপজেলা প্রকৌশলী মাহবুব-উল আলম বলেন, ওই স্থান ও নদীতে সেতু নির্মাণের প্রস্তাব অনুমোদন হয়েছে। মাটি পরীক্ষা, নকশাসহ বিভিন্ন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে। দরপত্র বিজ্ঞপ্তি প্রক্রিয়াধীন আছে। দরপত্র বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী ঠিকাদার নিয়োগ হলে কাজ শুরু করা হবে।