হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জের ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের নূরপুর এলাকার এক কিলোমিটার অংশ বর্তমানে আতঙ্ক হয়ে দাঁড়িয়েছে। বৃষ্টি হলেই এই স্থানটিতে ঘটে ছোটবড় দুর্ঘটনা। ঈদের পর থেকে গত ২০ দিনে অন্তত ১৫টি দুর্ঘটনা ঘটেছে।
এদিকে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ বলছে, ঈদের আগে ওই সড়কের নূরপুর অংশটি সংস্কার করা হয়। তখন বেশি পরিমাণে বিটুমিন দেওয়ার কারণে পিচ্ছিল হয়ে পড়েছে সড়কের এ অংশটি। তবে পুনরায় সেটি সংস্কারের কথা জানায় তারা।
ট্রাকচালক মো. শিপন মিয়া বলেন, ‘সড়ক মেরামতের সময় পরিমাণমতো পাথর ও বালু দেওয়া হয়নি। এখানে বিটুমিন বেশি দেওয়ার কারণে বেশি রোদ হলে বিটুমিন গলে যায়। এতে গাড়ির চাকা স্লিপ করে। আবার বৃষ্টি হলে সড়ক পিচ্ছিল হয়ে যায়। এ সময় গাড়ি নিয়ন্ত্রণ রাখা সম্ভব হয় না।’
জেলা সওজ বিভাগ থেকে জানা যায়, নূরপুর অংশে বেশ কিছু খানাখন্দের সৃষ্টি হয়। ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের ভোগান্তি কমাতে ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে ওই অংশের সংস্কারকাজ করে সওজ বিভাগ।
পরিবহন চালকদের দাবি, মহাসড়কের নূরপুর অংশে এলে গাড়ি নিয়ন্ত্রণ রাখতে তাঁদের কষ্ট হয়। মাঝেমধ্যে নিয়ন্ত্রণ রাখা একেবারেই সম্ভব হয় না। এতে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা।
বাসচালক আব্দুল হক বলেন, ‘আমরা নিয়মিত এই সড়কে গাড়ি চালাই। যে কারণে এখন এখানে এলেই গতি কমিয়ে সাবধান হয়ে যাই। কিন্তু অনেক চালক এখানে নতুন আসেন। তখন নূরপুর অংশে ঢুকলেই তাঁরা দুর্ঘটনার কবলে পরেন।’
‘সড়কের এই অংশটি দ্রুত মেরামত করার দাবি জানাই। না হলে এখানে বড় কোনো দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।’ বলেন, আব্দুল হক।
হাইওয়ে থানা-পুলিশ জানায়, ঈদের পর এ অংশে অন্তত ১২টি গাড়ি দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে। আর স্থানীয়দের হিসাবে ১৫টির বেশি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এ ছাড়া অসংখ্য মোটরসাইকেল আরোহী দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন অন্তত দেড় শতাধিক যাত্রী।
শায়েস্তাগঞ্জ হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালেহ আহমদ বলেন, ‘মহাসড়কের নূরপুর অংশটি আতঙ্ক হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখানে গত ২০ দিনে অন্তত ১২টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। যে কারণে এই অংশটি নিয়ে আমরা বেশ উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় রয়েছি। তবে আমরা যতটা পারি পরিবহন চালকদের সতর্ক করার চেষ্টা করছি।’
স্থানীয়দের অভিযোগ, সংস্কারকাজে ব্যাপক অনিয়ম করে সড়ক বিভাগ। সড়কে পর্যাপ্ত পরিমাণে পাথরকুচি ও বালু ব্যবহার করা হয়নি। ফলে অতিরিক্ত মাত্রায় বিটুমিন পড়ায় বৃষ্টি হলেই সড়কটি পিচ্ছিল হয়ে যায়।
শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাজরাতুন নাঈম বলেন, ‘মহাসড়কের নূরপুর অংশের বিষয়ে সড়ক বিভাগের সঙ্গে কয়েক দফা যোগাযোগ করা হয়েছে। তারা বলেছে দ্রুত এটিকে সংস্কার করে দেবে।’
হবিগঞ্জ সওজ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শাকিল মোহাম্মদ ফয়সাল বলেন, ‘সংস্কারকাজের পরপরই বৃষ্টি হওয়ার কারণে এমন অবস্থা তৈরি হয়েছে। তবে দ্রুত মহাসড়কের ওই অংশটি মেরামত করে দেওয়া হবে।’