কোটালীপাড়া (গোপালগঞ্জ) প্রতিনিধি
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচন অনুষ্ঠানের ছয় দিন পরে কেন্দ্রে ব্যালটবাক্স পাওয়া গেছে। খবর পেয়ে ওই কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা প্রিসাইডিং অফিসার বাক্সটি নিতে গেলে উত্তেজিত জনতা তাঁকে মারধর করে বলে অভিযোগ। পরে কোটালীপাড়া থানা-পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রিসাইডিং অফিসারকে উদ্ধার করে।
উপজেলার কান্দি ইউনিয়নে ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটকেন্দ্র কাচারীভিটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গতকাল শনিবার এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, গত ২৬ ডিসেম্বর কোটালীপাড়ার কান্দি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনের ছয় দিন পর প্রধান শিক্ষক চিন্ময় বসু বিদ্যালয়টির অফিস কক্ষ খুলে ব্যালটবাক্সটি দেখতে পেয়ে স্থানীয়দের জানালে পরাজিত ইউপি সদস্য প্রার্থীদের লোকজন বিদ্যালয় চত্বরে জড়ো হয়।
এদিকে এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী তুষার মধু বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তাই নির্বাচনের দিনে শুধুমাত্র সদস্য পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনের দিন ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাচারীভিটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রিসাইডিং অফিসার ছিলেন উপজেলার কাজী মন্টু কলেজের প্রভাষক প্রভাষ চন্দ্র মণ্ডল।
এই নির্বাচনে ৬ নম্বর ওয়ার্ডে সাধারণ সদস্য পদে পাঁচজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় করেন। তাঁদের মধ্যে নুরুল হক হাওলাদার ৪৬৯ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। অপরদিকে তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মো. ফারুক ব্যাপারী পেয়েছেন ৪০৯ ভোট।
মো. ফারুক ব্যাপারী বলেন, প্রিসাইডিং অফিসার প্রভাষ চন্দ্র মণ্ডল প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী নুরুল হক হাওলাদারের কাছ থেকে টাকা খেয়ে তাঁকে পরাজিত করেছেন। তিনি এই ওয়ার্ডে পুনরায় ভোট গ্রহণের দাবি জানান।
প্রিসাইডিং অফিসার প্রভাষ চন্দ্র মণ্ডল বলেন, তিনি কারও কাছ থেকে প্রভাবিত না হয়ে শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহণ করেছেন। ওই ওয়ার্ডে নুরুল হক হাওলাদার নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি ভোটকেন্দ্রে ছয়টি ব্যালটবাক্স নিয়েছিলেন। ভোট গণনা শেষে চলে যাওয়ার সময় বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে একটি বাক্স ভুলে থেকে যায়। এই বাক্সটি গতকাল আনতে গেলে পরাজিত সদস্য প্রার্থীদের লোকজন তাঁকে মারধর করেন।
জয়ী সদস্য প্রার্থী নুরুল হক হাওলাদার বলেন, গত ২৬ ডিসেম্বর কান্দি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ৬ নম্বর ওয়ার্ডে সদস্য পদে তিনি জয়লাভ করেন। তিনি টাকা দিয়ে কাউকে প্রভাবিত করেননি।
কোটালীপাড়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুল করিম বলেন, কাচারীভিটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রিসাইডিং অফিসার প্রভাষ চন্দ্র মণ্ডল ও একটি ব্যালটবাক্স উদ্ধার করে রিটার্নিং অফিসার ও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিটুল রায়ের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে রিটার্নিং অফিসার ও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিটুল রায় কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।