ভোলার লালমোহনে ছোট্ট একটি চায়ের দোকান আছে মো. নান্নু হোসেনের। উপজেলার ফুলবাগিচা বাজারে স্কুল রোডে অবস্থিত দোকানটি। প্রতিদিন ফজরের নামাজ পড়ে ভোরে দোকান খোলেন নান্নু। তাঁকে দোকান খুলতে দেখলে শ দুয়েক শালিক পাখি হাজির হয়ে যায় সেখানে। তাদের নিজের দোকানের রুটি, বিস্কুট আর মুড়ি খেতে দেন।
নান্নু ৫ বছর ধরে করে আসছেন এ কাজ। প্রথম ৩ বছর নিয়মিত ২০-২৫টি শালিক পাখি খাবার খেতে এলেও এখন শালিকের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ২০০। নান্নুর সঙ্গে শালিকদের এমন সখ্য এলাকাবাসীরও মন কেড়েছে। নান্নু উপজেলার লালমোহন ইউনিয়নের ফুলবাগিচা গ্রামের দরবেশবাড়ির মৃত মো. হোসেনের ছেলে। শালিক পাখিদের প্রতি এমন মমতার জন্ম কীভাবে জানতে চাইলে মো. নান্নু মিয়া বলেন, পাঁচ বছর আগে দেখতাম বেশকিছু শালিক ভোরে দোকানের সামনে বসে থাকে।
তখন মাঝেমধ্যে ওগুলোকে খাবার দিতাম। এরপর থেকে ধীরে ধীরে শালিকের সংখ্যা বাড়তে থাকে। শাবকগুলোর প্রতি তখন এক ধরনের মায়ার জন্ম হয় মনে। তারপর থেকে নিয়মিত খাবার দিয়ে যাচ্ছি। এখন দুই শর মতো শালিক প্রতিদিন ভোরে আমার দোকানের সামনে আসে। পাখিগুলোর কিচিরমিচির ডাক সত্যিই ভালো লাগে। এতে মনেও অনেকটা প্রশান্তি মেলে। যার জন্যই এসব শালিককে এখন নিয়ম করে প্রতিদিন খাবার দিচ্ছি।
নান্নু আরও বলেন, কোনো কারণে দু-এক দিন দোকানে বসতে না পারলে ফিরে আসার পর কিচিরমিচির শব্দ করে কাছে আসে। পরে খাবার ছিটিয়ে দিলে আপন মনে খেয়ে যার যার মতো চলে যায়। নেচার কনজারভেশন কমিটি (এনসিসি) ভোলার সমন্বয়কারী মো. জসিম জনি বলেন, ‘পাখির প্রতি মানুষের এ ধরনের ভালোবাসা থাকা উচিত। পাখি বিভিন্ন উপায়ে পরিবেশের উপকারে আসে। যার জন্য আমাদের প্রত্যেকেরই উচিত পাখির প্রতি উদারতা দেখানো।’