বৈরী আবহাওয়ায় পঞ্চগড়ে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। সর্দি-কাশি ও পেটের পীড়ায় তারা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। জেলার আধুনিক সদর হাসপাতালে প্রতিদিন দেড় শ শিশুরোগী বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিচ্ছে। এ জন্য হাসপাতালে বিশেষ ইউনিট চালু করা হয়েছে।
চিকিৎসকেরা বলছেন, গুমোট আবহাওয়ায় শিশুদের পাশাপাশি বয়স্করা যাতে বাড়ি থেকে বের না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। শিশুদের সুরক্ষিত রাখতে মায়েদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, সপ্তাহ দুয়েক আগে ডায়রিয়াসহ পেটের বিভিন্ন পীড়ায় আক্রান্ত শিশুরোগীর সংখ্যা ছিল ২৫-৩০ জন। কিন্তু এখন প্রতিদিন গড়ে দেড় শ রোগী বহির্বিভাগে দেখা হচ্ছে।
পঞ্চগড়ের ইসলামবাগ গ্রামের গৃহিণী রাবেয়া খাতুন জানান, তাঁর আড়াই বছরের ছেলে দুই সপ্তাহ ধরে সর্দি-কাশিতে ভুগছে, স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নেওয়ার পরেও সুস্থ হয়নি। তাই ছেলেটিকে নিয়ে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে আসেন।
বোদা উপজেলার পাঁচপীর এলাকার আতাউর রহমান জানান, চার দিন ধরে তাঁর এক বছরের ছেলে কোনো খাবার খাচ্ছে না, সারাক্ষণ কান্নাকাটি করছে। ঠাকুরগাঁওয়ে গিয়ে শিশুচিকিৎসক দেখিয়ে চিকিৎসা করিয়েছেন।
পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের শিশুবিশেষজ্ঞ মো. মনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘গরম-ঠান্ডা আবহাওয়ায় শিশুরা বিভিন্ন ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছে, প্রতিদিন দেড় শতাধিক শিশুকে হাসপাতালের বহির্বিভাগে দেখতে হচ্ছে।
পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রেখে শিশুদের খাবার পরিবেশনসহ সহনীয় তাপমাত্রায় তাদের সুরক্ষিত রাখার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।’
ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালের শিশুবিশেষজ্ঞ শাহানেওয়াজ বলেন, ‘দুই সপ্তাহ ধরে পঞ্চগড় ও ঠাকুরগাঁও জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ডায়রিয়াসহ পেটের পীড়ায় আক্রান্ত শিশুরোগী আনা হচ্ছে। যারা গুরুতরভাবে আক্রান্ত, তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হচ্ছে। আবহাওয়ার তারতম্যসহ শিশুদের বাসি ও ঠান্ডা খাবার খাওয়ানোর কারণে এসব রোগবালাই দেখা দিয়েছে।’
পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের সিভিল সার্জন মো. রফিকুল হাসান বলেন, ‘মা ও শিশুদের চিকিৎসা নিবিড়ভাবে করার জন্য হাসপাতালে বিশেষ ইউনিট চালু রাখা হয়েছে, স্যালাইনসহ সরকারিভাবে শিশুদের সব ধরনের চিকিৎসা সুবিধা পর্যাপ্ত রয়েছে।’
জেলার তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের কর্মকর্তা শেখ রাসেল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মৌসুমি বায়ুর চাপ কম থাকায় আকাশে বেশি মেঘের কারণে গুমোট আবহাওয়া বিরাজ করছে। পরিমিত বৃষ্টিপাত হলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে। তবে স্বাভাবিক হতে সপ্তাহখানেক সময় লাগবে।’