বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলার বুড়ইল ইউনিয়নের একটি সড়ক পাকাকরণ কাজের উদ্বোধন করা হয় ২০২১ সালের মার্চে। এর পাঁচ-ছয় মাস পর সড়কের মাঝখানের মাটি খুঁড়ে অল্প কিছু বালু ফেলে লাপাত্তা হয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। খুঁড়ে রাখা সড়কের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টির পানি জমে কাদার সৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্য দিয়েই ঠেলে যানবাহন পার করছেন চালকেরা। সড়কের প্রায় ১ কিলোমিটার অংশ এই অবস্থায় থাকায় দুই উপজেলার ওই সংযোগ সড়ক দিয়ে গড়ে ২ হাজার মানুষ দুর্ভোগ নিয়ে চলাচল করছে। ১ হাজার ২০০ মিটার বেহাল সড়কের জন্য নন্দীগ্রাম-রণবাঘা হয়ে প্রায় ২২ কিলোমিটার রাস্তা ঘুরে আসতে হয় এই এলাকার মানুষদের।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলার বুড়ইল ইউনিয়নের দাসগ্রাম বাজার থেকে সিংড়া উপজেলার মাসিন্দা পাকার মাথা ১ হাজার ৮০০ মিটার কাঁচা সড়কের মধ্যে ১ হাজার ২০০ মিটার পাকাকরণ কাজের উদ্বোধন করেন স্থানীয় সংসদ সদস্য মোশারফ হোসেন। আইআরআইডিপি-৩ প্রকল্পের আওতায় ওই কাজের উদ্বোধন করা হয় ২০২১ সালের মার্চ মাসে। নন্দীগ্রাম ও সিংড়া উপজেলার সংযোগ সড়ক এটি।
উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯-২০ অর্থবছরে আইআরআইডিপি-৩-এর আওতায় নন্দীগ্রাম উপজেলার বুড়ইল ইউনিয়নের দাসগ্রাম বাজার থেকে সিংড়া উপজেলার মাসিন্দা পাকার মাথা ১ হাজার ৮০০ মিটার কাঁচা রাস্তার মধ্যে ১ হাজার ২০০ মিটার পাকা করার কাজ শুরু হয়। এ জন্য ৮৪ লাখ ৩৪ হাজার ২০৫ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়।
কাজটির দায়িত্ব পায় জয়পুরহাট জেলার ক্ষেতলাল উপজেলার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স ছন্দা এন্টারপ্রাইজ। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা থাকলেও বেড খুঁড়ে অল্প কিছু বালু ফেলে রাখা ছাড়া কোনো অগ্রগতি দেখা যায়নি ওই কাজের।
গত বৃহস্পতিবার সরেজমিন দেখা গেছে, সড়কের মাঝখানে প্রায় ১০ ফুট চওড়া ও ২ ফুট গভীর করে মাটি খুঁড়ে রাখা হয়েছে। খুঁড়ে রাখা সড়কের বিভিন্ন জায়গায় বৃষ্টির পানি জমে কাদার সৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্যে দিয়েই ভ্যান, সাইকেল, মোটরসাইকেলসহ অন্যান্য যানবাহন ঠেলে পার করতে হচ্ছে মানুষদের।
শালুকাপাড়া গ্রামের বেলাল হোসেন বলেন, ‘রাস্তাটি খুঁড়ে রেখে ঠিকাদার লাপাত্তা। রাস্তায় হাঁটুসমান কাদা জমে গেছে। এ কাদার কারণে ধান বিক্রির জন্য ১০ টাকার ভাড়া দিতে হচ্ছে ৫০ টাকা। রাস্তার কাজ করতে পারবে না, তাহলে খুঁড়ে রাখল কেন?’
ইউপি সদস্য শংকর কুমার সরকার বলেন, ‘দুই উপজেলার হাজার হাজার মানুষ ও স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন এ সড়কে চলাচল করতে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। মানুষ সব সময় আমার কাছে এ রাস্তার অভিযোগ করছেন।’
জানতে চাইলে ঠিকাদারের প্রতিনিধি পুটুল বলেন, ‘জিনিসপত্রের দাম বেশির কারণে কাজ করতে পারিনি। তবে কাজ করব।’
উপজেলা প্রকৌশলী শাহনেওয়াজ বলেন, আবহাওয়ার কারণে কাজ বিলম্বিত হয়েছে। তবে খুঁড়ে রাখা সড়কের কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য ঠিকাদারকে তাগিদ দেওয়া হচ্ছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজের সময় বাড়ানোর আবেদন করেছে।
সংসদ সদস্য মোশারফ হোসেন দেশের বাইরে থাকায় তাঁর বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।