নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
ব্যবসায় লাভের আশায় দুই ঈদে বেশি বিক্রির দিকে মনোযোগী হন কাপড় ব্যবসায়ীরা। অনেক বেশি পণ্য কিনে রাখেন দোকানে। বিশেষ করে ঈদুল ফিতরের আগে এ চিত্র দেখা যায়। তবে এবার বাজারে ক্রেতা খুব কম দেখা যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা। তাঁরা বলছেন, বাজারে ভিড় দেখা গেলেও জামা-কাপড়ের দাম বেশি হওয়ায় বিক্রি হচ্ছে কম।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর নিউমার্কেট, গাউছিয়া, চাঁদনী চক ও মৌচাক মার্কেট এলাকায় বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এ বছর ক্রেতার আনাগোনা একেবারেই কম। মৌচাক মার্কেটের বিক্রেতা মোহাম্মদ রুবেল গত বুধবারের মতো গতকালও বলেন, ‘সকাল গড়াইয়া দুপুর হইল, এখনো সেল নাই। গতবারের তুলনায় ৭০ শতাংশ ক্রেতা নাই। আমরা চলমু কেমনে?’
চাঁদনী চক মার্কেটের পরশমণি দোকানের বিক্রেতা মোহাম্মদ জুয়েল বলেন, ‘বেচাকেনা খুব কম। জামাকাপড়ের দাম এবার অনেক বেশি। যেই দামে কিনি, সেই দামেও ক্রেতা পাইতেছি না।’ মৌচাক মার্কেটের বিক্রেতা ওমর ফারুক বলেন, ‘গত বছর ৫ রোজার পর থেকে দিনে ৬০-৭০ হাজার টাকার মাল বিক্রি করছি। এখন ২০-২২-এ নামছে। আগে ১ হাজার টাকার মাল কিনে ১৫ শ টাকায় বিক্রি করতাম। এখন যেই মাল ১৪ শ টাকায় কিনি, সেইটাও ১৫ শতে বিক্রি করতে পারতেছি না।’
দরজির দোকানেও একই অবস্থা। কথা বলে জানা গেছে, প্রতিবছর ঈদের সময় দোকানে জনবল বাড়ানো হয়। ১০-১২ রোজার পর থেকেই অর্ডার নেওয়া বন্ধ করে দেওয়া হয়। কিন্তু এবার তেমনটা হচ্ছে না। রঙের ছোঁয়া টেইলার্সের দরজি তাজুল ইসলাম বলেন, ‘আজ সারা দিনে একটাও অর্ডার পাই নাই। প্রতিবছর এই সময়ে দিনে ১০-১৫টা অর্ডার পাইতাম।’
এদিকে গাউছিয়া মার্কেট ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করেছে ফায়ার সার্ভিস। এ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন ব্যবসায়ীরা। তাঁরা বলছেন, কিছুদিন আগেই পুরো মার্কেটে শীতাতপনিয়ন্ত্রণ যন্ত্র বসানো হয়েছে। করিডরও প্রশস্ত করা হয়েছে। এ জন্য বিক্রেতারা এবার বেশি ক্রেতা সমাগমের আশা করছিলেন। কিন্তু ঈদের ঠিক আগে মার্কেট ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করায় ক্রেতা সমাগম বৃদ্ধির পরিবর্তে উল্টো কমবে বলে মনে করছেন তাঁরা।
গাউছিয়া মার্কেটের ন্যাশনাল ফ্যাশন হাউসের বিক্রেতা মোহাম্মদ লিটন বলেন, ‘গত বছরও ঈদের আগে আগে মার্কেটের সামনের ফুটওভার ব্রিজ ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে বন্ধ করে দেওয়া হইছিল। ঈদবাজারে কেনাকাটায় এর প্রভাব পড়ছিল। অথচ কোনো মেরামত ছাড়াই ঈদের কিছুদিন পর সেই ব্রিজ খুইলা দেওয়া হয়। এখনো সেই ব্রিজ সেইভাবেই চলতেছে। আবার এইবারও ঈদের আগে আগে মার্কেট ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা হইল। ক্রেতাদের মধ্যে তো অবশ্যই প্রতিক্রিয়া পড়বে।’