বন্ধুর বাড়িতে আত্মগোপনে থেকে অপহরণের নাটক সাজান মো. ফজলে হাছিব মজুমদার (২৩)। এরপর বন্ধুদের দিয়ে বাবার কাছে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। কিন্তু তাঁদের পরিকল্পনা ভেস্তে দিল র্যাব। গ্রেপ্তার করা হয়েছে মো. ফজলে হাছিব মজুমদারসহ তিন বন্ধুকে। বিদেশ গমনের টাকা জোগাতে বাবার সঙ্গে প্রতারণা ও অপহরণের নাটক সাজানোর কথা স্বীকার করেছেন তাঁরা। গত সোমবার তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানান র্যাব-১১, সিপিসি-২, কুমিল্লার কোম্পানি অধিনায়ক মেজর মোহাম্মদ সাকিব হোসেন।
র্যাব জানায়, গত বৃহস্পতিবার র্যাব কার্যালয়ে এসে জেলার নাঙ্গলকোট থানার আদ্রা এলাকার বাসিন্দা মো. আব্দুস সোবহান অপহরণের বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করেন। এতে তিনি উল্লেখ করেন, গত বুধবার লাকসাম থেকে কুমিল্লা শহরে আসার পথে তাঁর শ্যালক ফজলে হাছিব মজুমদারকে অপহরণ করা হয়েছে। পরে গত বৃহস্পতিবার তাঁর শ্বশুর, শাশুড়ি ও তাঁর নম্বরে বারবার কল করে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হচ্ছে।
এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে র্যাব গোয়েন্দা তৎপরতায় গত সোমবার জেলার কোতোয়ালি থানার আলেখারচর মহাসড়ক এলাকায় অভিযান চালিয়ে মনোহরগঞ্জ উপজেলার-দক্ষিণ ফেনুয়া এলাকার কথিত অপহৃত মো. ফজলে হাছিব মজুমদারকে উদ্ধার করে।
উদ্ধারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মো. ফজলে হারিছ মজুমদারের দেওয়া অপহরণের বিষয়ে ব্যাপক গরমিল থাকায় র্যাবের সন্দেহ হয়। পরে আরও জিজ্ঞাসাবাদে তিনি অপহরণের নাটকের বিষয়টি স্বীকার করেন।
ফজলে হারিছ জানান, প্রথমে লাকসাম থানার পশ্চিমগাঁওয়ে বন্ধু ওসমানের কাছে গিয়ে তাঁর মাধ্যমে বাবার মোবাইল ফোন নম্বরে কল দিয়ে অপহরণ করা হয়েছে বলে জানান এবং তাঁকে ফিরে পেতে হলে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ লাগবে। অন্যথায় তাঁকে হত্যা করা হবে বলে বিভিন্ন ধরনের হুমকি-ধমকি দিতে থাকেন। সেখান থেকে তিনি কোতোয়ালি থানার শাসনগাছা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বন্ধু মাজেদের বাসায় গিয়ে রাত কাটান এবং তাঁর মায়ের মোবাইল ফোনে কল দিয়ে একই কায়দায় মুক্তিপণ দাবি করেন। পরে অবস্থান পরিবর্তন করে বুড়িচং উপজেলায় চলে যান। সেখান থেকে তাঁর দুলাভাইকে ফোন দেন।
জানা গেছে, ফজলে হারিছের ইচ্ছে ছিল বিদেশে যাবেন। আত্মগোপনে থেকে পরিবারের কাছ থেকে বিদেশ গমনের প্রয়োজনীয় অর্থ আদায় করার পরিকল্পনা করেন।
র্যাব আরও জানায়, পরে মো. ফজলে হারিছ মজুমদারের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করে মনোহরগঞ্জ উপজেলার সাতেশ্বহর এলাকার বাসিন্দা ওসমান গনি (২৬), একই থানার ফেনুয়া এলাকার আবদুল মজিদকে (২৭) গ্রেপ্তার করা হয়। এ বিষয়ে থানায় মামলা করা হয়েছে।