শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে সুগন্ধি জাতের তুলসীমালা ও চিনিগুঁড়া ধান বাজারে উঠতে শুরু করেছে। বাজারে প্রতি মণ ধান ১ হাজার ৯০০ থেকে ২ হাজার ২০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। উৎপাদন খরচ কম ও ভালো দাম পাওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে।
জানা গেছে, চলতি বছর আমন মৌসুমে উপজেলায় ৮ হাজার হেক্টর জমিতে তুলসীমালা ও চিনিগুঁড়া ধানের আবাদ হয়েছে। উপজেলার কলসপাড়, যোগানিয়া, বাঘবেড় ও মরিচপুরান ইউনিয়নে এ সুগন্ধি ধানের আবাদ বেশি হয়। এ মৌসুমে খেতে পোকামাকড়ের আক্রমণ না থাকায় ও আবহাওয়া ভালো থাকায় অল্প খরচেই কৃষকেরা ফলন ঘরে তুলতে পেরেছেন। এক একর জমিতে এ সুগন্ধি ধান চাষ করতে (কাটা-মাড়াইসহ) খরচ পড়ে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা। আর ধান পাওয়া যায় ৩৫ থেকে ৪০ মণ করে। সে হিসাবে কৃষকের লাভ থাকে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকার বেশি।
কলসপাড় গ্রামের কৃষক আবেদ আলী জানান, তিনি এ বছর দুই একর জমিতে তুলসীমালা ধানের আবাদ করেন। ধান লাগানো থেকে কাটা পর্যন্ত একরপ্রতি তাঁর খরচ হয়েছে ১৮ হাজার টাকা। প্রতি একরে তিনি ধান পেয়েছেন ৪০ মণ। বাজারে প্রতি মণ ধান বিক্রি করে পেয়েছেন ২ হাজার ২০০ টাকা করে।
আবেদ আলী আরও বলেন, ‘বাজারে এ ধানের চাহিদা অনেক বেশি রয়েছে। কৃষকেরা দামও ভালো পাচ্ছেন। এতে আমরা খুশি।’
মরিচপুরান গ্রামের কৃষক আফসার উদ্দিন জানান, তিনি ৩ একর জমিতে চিনিগুঁড়া ধান আবাদ করেছেন। ধান কিছুটা ভেজা থাকায় বর্তমানে ১ হাজার ৯০০ টাকা দরে বিক্রি করেন। এ ধান শুকানো হলে বাজারে আরও দাম বেশি পাওয়া যাবে। সুগন্ধি ধানের দাম ভালো থাকায় কৃষকেরা দারুণ খুশি।
নালিতাবাড়ী বাজারের সুগন্ধি ধানের আড়তদার আবদুল বাতেন বলেন, দুই সপ্তাহ ধরে তুলসীমালা ও চিনিগুঁড়া ধান বাজারে উঠতে শুরু করেছে। তুলসীমালা ২ হাজার ২০০ ও চিনিগুঁড়া ১ হাজার ৯০০ টাকা মণ বিক্রি হচ্ছে। এখন ধান কিছুটা ভেজা রয়েছে। ধান শুকিয়ে গেলে এর দাম আরও বাড়বে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আলমগীর কবীর বলেন, সুগন্ধি তুলসীমালা ও চিনিগুঁড়া চাল দেশজুড়ে খ্যাতি রয়েছে। এই ধান চাষে সেচ, সার ও কীটনাশক তেমন লাগে না। আবাদে খরচ খুব কম হয়। বাজারে ব্যাপক চাহিদা থাকায় কৃষকেরা দামও ভালো পাচ্ছেন। কিছুটা সময় পার হলে এই ধানের দাম আরও বাড়বে। এবার একরে ৩০ থেকে ৪০ মণ হারে ধান পাওয়া গেছে। ঈদ-পূজাসহ বিভিন্ন উৎসব-পার্বণে এসব সুগন্ধি চালের আলাদা কদর রয়েছে। উপজেলায় এই সুগন্ধি ধান আবাদে কৃষকের আগ্রহ দিন দিন বাড়ছে।