কুড়িগ্রাম সদরের পোড়ার চরে পাড় ভেঙে যাওয়ায় বিদ্যুতের খুঁটি ঝুঁকিতে পড়েছে। খুঁটিটি অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এ কারণে উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের অন্তত পাঁচটি চরের কয়েক শ পরিবার দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। তাঁরা মোবাইল ফোনের চার্জ দিতে পারছেন না। গরমে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন। তা ছাড়া বোরোখেতে সেচ বন্ধ রয়েছে। এতে খেত পানির অভাবে ফেটে যাচ্ছে।
সাবমেরিন কেব্লের মাধ্যমে নদীর তলদেশ দিয়ে সরবরাহ লাইনের মাধ্যমে সম্প্রতি কুড়িগ্রামের ৫৯টি চরের ১৬ হাজারেরও বেশি পরিবারকে বিদ্যুৎ-সংযোগ দেওয়া হয়। এর মধ্যে ওই পাঁচটি চরের বাসিন্দারা বিদ্যুৎ-বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন।
চরের ভুক্তভোগী বাসিন্দারা বলেন, গত ২০ মার্চ থেকে যাত্রাপুরের রলাকাটার চর, চিড়া খাওয়ার চর, মাঝেরচর ও পোড়ারচরসহ পাঁচটি চরে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। কোনো ধরনের নোটিশ বা ঘোষণা ছাড়াই এভাবে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় তাঁরা ধানের খেতে সেচ দিতে পারছেন না। তা ছাড়া ঘরের বৈদ্যুতিক পাখা চালাতে পারছেন না। এতে গরমে তাঁরা অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন।
রলাকাটার চরের বাসিন্দা মঈনুদ্দিন বলেন, বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকায় তিনি সেচ পাম্প চালাতে পারছেন না। চার দিন ধরে সেচের অভাবে তাঁর ধানের জমি শুকিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, ‘কারেন্টের লাইন আসায় শ্যালো মেশিন বাদ দিয়া সেচ পাম্প নিছি। অহন তো বিপদে পড়ছি। এমনিতে চরের জমিতে পানি থাকে না, এর মধ্যে কারেন্ট না থাকায় সেচও দিবার পাচ্ছি না। বড় বিপদে পড়ছি।’
আরেক বাসিন্দা বেলাল হোসেন বলেন, ‘বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকবে, এটা আমাদের আগে থেকে জানানো হলে আমরা বিকল্প ব্যবস্থা রাখতাম। চার দিন ধরে বিদ্যুৎ নাই, কেন নাই তাও আমরা জানি না। মোবাইল চার্জ করা যাচ্ছে না। ফ্যান চালানো যাচ্ছে না। আমরা গরমে অতিষ্ঠ। এখনই এই অবস্থা, ঝড়-বৃষ্টি, বন্যা হলে তখন কী হবে?’
জানতে চাইলে কুড়িগ্রাম-লালমনিরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির (পবিস) জেনারেল ম্যানেজার মো. মহিতুল ইসলাম বলেন, ‘পোড়ার চরে পাড় ভেঙে যাওয়ায় বিদ্যুতের খুঁটি ঝুঁকিতে পড়েছে। ফলে ওই খুঁটি স্থানান্তরিত করে অন্য জায়গায় স্থাপন করতে হচ্ছে। খুব দ্রুতই বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হবে।’
মহিতুল ইসলাম আরও বলেন, ‘গতকাল বুধবার বিকেলে পোড়ারচরে বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইন মেরামত সম্পন্ন হয়েছে। রাতের মধ্যে রলাকাটার চরসহ অন্য চরেও বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হয়ে যাবে।’
বিদ্যুৎ সরবরাহ বিঘ্নিত হলে বাসিন্দাদের তা অবহিত করার বিষয়ে জানতে চাইলে পবিস ম্যানেজার বলেন, ‘সমতলের মতো চরের অবস্থা এক নয়। তারপরও পরবর্তী সময়ে স্থানীয় মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে বাসিন্দাদের অবহিত করার ব্যবস্থা করা যায় কিনা তা ভেবে দেখব।’