গাংনী (মেহেরপুর) প্রতিনিধি
জীবনযুদ্ধে হার না মানা এক প্রতিবন্ধী যুবক মেহেরপুর গাংনী উপজেলার কাজিপুর ইউনিয়নের হাড়াভাঙ্গা মোল্লা পাড়া গ্রামের আক্তার হোসেন। এক হাত ও দুই পা বিকলাঙ্গ হওয়া সত্ত্বেও শিক্ষা জীবন শেষ করে বর্তমানে গ্রামের একটি একটি প্রি-ক্যাডেট স্কুলের ইংরেজির শিক্ষক হিসেবে পাঠদান করছেন তিনি। কিন্তু মাথার ওপর পরিবারের দায়িত্ব থাকায় সরকারি চাকরি বা বেশি আয়ের পেশায় সুযোগ করে দিতে এলাকার বিত্তবানদের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।
আক্তার হোসেন বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই আমি প্রতিবন্ধী। এক হাত ও দুই পা বিকলাঙ্গ। আমি একটি দরিদ্র পরিবারের ছেলে। বাবার দারিদ্র্যের কারণে ছোটবেলা থেকেই নানার বাড়িতে থেকেছি। সেখান থেকেই প্রাথমিক বিদ্যালয় লেখাপড়া শেষ করে বাঁশবাড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় ভর্তি হয়। সেখান থেকে পাশ করে গাংনী টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করি। পরে কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ থেকে অনার্স-মাস্টার্স শেষ করেছি। এরপর একটি সরকারি চাকরির জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরেও কপালে জোটেনি। তাই বাধ্য হয়ে উপজেলার হাড়াভাঙ্গা গ্রামে একটি প্রি-ক্যাডেট স্কুলের ইংরেজি শিক্ষক হিসেবে কাজ করছি। এখান থেকে যা পাই তা একদমই কম। একটি দোকান আছে ফল ও ইজিলোডের। টাকার অভাবে সেখানে অতিরিক্ত অর্থ বিনিয়োগ করতে পারি না। কোনো রকম চলে দিন কাটছে।
আক্তার হোসেন আরও বলেন, ‘আমাকে কেউ যদি একটা কম্পিউটার দিতেন তাহলে আমি ওই কম্পিউটারে কাজ করে আয়ের একটি উৎস তৈরি করতাম। সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার অনুরোধ করছি।’
সানরাইজ প্রি-ক্যাডেট এর প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম বলেন, ‘করোনার কারণে আমাদের অনেক শিক্ষার্থী হারিয়ে গেছে। আমাদের শিক্ষার্থী এখন অনেক কম। আক্তার হোসেন অত্যন্ত মেধাবী একজন মানুষ। তিনি বেশ ভালো ক্লাস নেন। আমি আমার স্কুলের এবং ব্যক্তিগত পক্ষ থেকে যতটুকু পারি তাঁকে সহযোগিতা করি।’