পাইকগাছায় প্রাচীন আমলের একটি বাড়িতে প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন অনুসন্ধানে নেমেছে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ। সম্প্রতি উপজেলার রেজাকপুর সিংহ বাড়ির ঢিবি খোঁড়াখুঁড়ি শুরু করে এ বিভাগ। এতে বেরিয়ে আসছে নানান প্রত্নতাত্ত্বিক বস্তু।
প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর খুলনা ও বরিশাল বিভাগের আঞ্চলিক পরিচালক আফরোজা খান মিতা জানান, কপিলমুনির সিংহের বাড়ির ঢিবি খুঁড়ে উঠে এসেছে নবম হতে দ্বাদশ শতকের স্থাপত্যকর্ম। ইতিমধ্যে খনন করে পাওয়া গেছে, বিভিন্ন ধরনের মৃৎপাত্র, মৃৎপাত্রের ভগ্নাংশ, পোড়া মাটির ফলক, প্রতিমার ভগ্নাংশ, অলংকৃত ইট ও কড়িসহ বিভিন্ন ধরনের প্রত্নতাত্ত্বিক বস্তু।
২৫০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ১৮০ মিটার প্রস্থের ঢিবিটি খননে একটি বর্গাকার স্থাপত্য কাঠামো দেখা গেছে। কক্ষটি ঘিরে দেয়ালবেষ্টিত একটি প্রদক্ষিণ পথ রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, আরও বেশি স্থানজুড়ে খনন কার্যক্রম চালানো হলে এর প্রকৃতি অনুমান সম্ভব হবে।
খনন কাজে বগুড়ার মহাস্থানগড়ের ২ জন দক্ষ খনন শ্রমিক, বাগেরহাটের ৪ জন খনন শ্রমিক ও স্থানীয় ১০ জন শ্রমিক রয়েছেন। খননকাজে সংশ্লিষ্টরা জানান, উদ্ঘাটিত স্থাপত্য কাঠামোর প্রদক্ষিণ পথের বাইরের দেয়ালের সঙ্গে মাটির সঙ্গে মিশ্রিত অবস্থায় খাদ্যবস্তু কালো রঙের চালের স্তূপ পাওয়া গেছে। এই চালের ওপর গবেষণা করলে তৎকালীন সময়ের ধানের প্রজাতি প্রকৃতি সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যাবে বলে আশা করছে তারা।
প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনসমূহের সময়কাল নবম হতে দ্বাদশ খ্রিষ্টাব্দের। এ নমুনার বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা সম্ভব হলে স্থাপত্য কাঠামোসহ প্রত্নবস্তুর সময়কাল এবং সেখানে বসবাসকারীদের সম্পর্কে ধারণা পাওয়া সম্ভব।
সংশ্লিষ্টরা জানান, পাইকগাছা উপজেলার কপিলমুনিতে আদি-মধ্যযুগের একগুচ্ছ প্রত্নতাত্ত্বিক ঢিবি ও প্রত্নতাত্ত্বিক বিভিন্ন ধরনের নিদর্শন রয়েছে। প্রত্নতাত্ত্বিক অধিদপ্তর খুলনা ও বরিশাল বিভাগের আঞ্চলিক পরিচালক আফরোজা খান মিতা জানান, পুরো এলাকার স্থাপনাগুলো দীর্ঘ দিন পরিত্যক্ত অবস্থায় থাকার পর পরবর্তী পর্যায়ে ক্রমান্বয়ে এলাকাবাসী বিক্ষিপ্তভাবে এখানকার ইট উঠিয়ে স্থাপনাসমূহের ব্যবহার শুর করে।
এসব খননে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ধরনের ইট, মৃৎপাত্রের ভগ্নাংশ, প্রাণীর হাড় উঠে আসে। সর্বশেষ প্রাচীনকালে প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন অনুসন্ধানে পাইকগাছা উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকায় জরিপ ও অনুসন্ধান কার্যক্রম পরিচালিত হয়।