খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলায় পারভিন বেগমকে হত্যার দায়ে তাঁর সাবেক স্বামী লিটন মোল্লাকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে খুলনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মশিউর রহমান চৌধুরী এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ওই আদালতের এপিপি এম ইলিয়াস খান ও শাম্মি আক্তার।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, নিহত পারভিন বেগম লিটন মোল্লার দ্বিতীয় স্ত্রী। হত্যাকাণ্ডের পাঁচ বছর আগে তাঁদের বিয়ে হয়। বিয়ের সময় পারভিন আগের ঘরের আট বছরের একটি মেয়ে নিয়ে ওই ঘরে ওঠেন। বিয়ের পর কিছুদিন ভালোভাবে চললেও পরে তাঁদের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দেয়। এ নিয়ে প্রায়ই উভয়ের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। স্থানীয়ভাবে মীমাংসা করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন লিটন মোল্লা।
হত্যাকাণ্ডের এক সপ্তাহ আগে পারভিন স্বামীকে তালাক দেন। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ হন লিটন। হত্যার পরিকল্পনা করতে থাকেন তিনি। ২০২১ সালের ১৫ জুন রাতে পারভিনকে হত্যার জন্য বাড়ি থেকে শাবল ও ধারালো ছুরি নেন লিটন। রাত ১টার দিকে ডুমুরিয়া মহিলা কলেজের পাশের শামসুর রহমানের ভাড়া বাড়িতে এসে পারভিনকে ডাকতে থাকেন। একপর্যায়ে শাবল দিয়ে ঘরের দরজা ভেঙে ফেলে লিটন। তাঁকে অস্বাভাবিক দেখতে পেয়ে পালানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হন পারভিন।
একপর্যায়ে হাতের নাগালে পেয়ে ধারালো ছুরি দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করতে থাকেন লিটন। এরপর মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য পাশের রান্নাঘর থেকে কাঠ এনে মাথায় আঘাত করেন। তাঁর চিৎকার শুনে অন্যরা এসে পারভিনকে গুরুতর জখম অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠালে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহতের বড় মেয়ে লিটনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। একই বছরের ৩০ আগস্ট মামলার তদন্ত কর্মকর্তা লিটনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এ মামলায় ১৮ জন আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন।
এদিকে রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডুমুরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ওবাইদুর রহমান। তিনি বলেন, মামলাটির বিচার কার্যক্রম অল্প সময়ের মধ্যে শেষ হয়েছে।