হোম > ছাপা সংস্করণ

বাড়ি থেকে পালিয়ে ৫ বন্ধু যোগ দেন মুক্তিযুদ্ধে

আশিস রহমান, দোয়ারাবাজার (সুনামগঞ্জ)

১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় ১৭ বছরের যুবক খুরশেদ আলম। তখন গ্রামগঞ্জে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী হত্যা, অত্যাচার ও নির্যাতন শুরু করে। যখন খবর আসত বাড়ির দিকে পাকিস্তানি বাহিনী আসছে, তখনই পরিবারের সদস্যের সঙ্গে খুরশিদ প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে বেড়াতেন। এসব দেখে তাঁর মনে দাগ কাটে। নিজেই সিদ্ধান্ত নেন পালিয়ে থাকার চেয়ে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিয়ে হানাদারদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলবেন। একদিন গ্রামের মোস্তফা, আব্দুর রহিম, রহমত উল্লাহ, সালামসহ পাঁচ বন্ধু মিলে বাড়ি থেকে পালিয়ে যোগ দেন মুক্তিযুদ্ধে। ভোলাগঞ্জের কাঁঠালবাড়ি, ছাতকের হাদাটিলা ও বিলাইজুড় অপারেশনে সরাসরি অংশ নেন।

একাত্তরের যুদ্ধবীর খুরশেদ আলম সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার বোগালাবাজার ইউনিয়নের ক্যাম্পেরঘাট গ্রামের ইদ্রিস আলীর ছেলে। বর্তমানে গ্রামের বাড়িতে কৃষিকাজ করে সময় কাটছে তাঁর। সাত সন্তানের জনক তিনি। স্থানীয় বোগলাবাজারে তাঁর সঙ্গে দেখা হয়।

এ সময় আলাপকালে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণা করে খুরশেদ আলম বলেন, ‘পাঁচ বন্ধু মিলে পরামর্শ করে বাঁশতলা সাবসেক্টরে যাই। সেখানে এক রাত থেকে ঝুমগাঁওয়ের মতিন কমান্ডারের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধে যোগদান করি। পরের দিন সন্ধ্যা ৭টার দিকে গাড়িতে করে ভারতের ইকোয়ান প্রশিক্ষণ সেন্টারের ৮ নম্বর সেকশনে ২৮ দিনের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে ভোলাগঞ্জে চলে আসি।’

মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে জানতে চাইলে খুরশেদ আলম বলেন, ‘ভোলাগঞ্জের কাঁঠালবাড়ি এলাকার এক বাড়িতে রাজাকার অবস্থান নিয়েছিল। তাঁরা গ্রামের বিভিন্ন বাড়িতে গিয়ে চাঁদাবাজি করতেন। কৃষকদের হাঁস, মুরগি, গরু, মহিষ ধরে নিয়ে পাকবাহিনীর ক্যাম্পে চালান দিতেন। আমরা আগের দিন রাতে খবর পেয়ে ছয়-সাতজন মিলে সেই বাড়ি ঘেরাও করি। এ সময় চার রাজাকারকে আটক করি। পরে তাদের হেডকোয়ার্টারে পাঠাই।’

এ সময় তিনি আবেগাপ্লুত হয়ে বলেন, ‘আমাদের কোনো কমান্ডার ছিল না। নোয়াডর গ্রামের সহযোদ্ধা হোসেন আলীকে আমরা নিজেরাই কমান্ডার নির্বাচিত করে যুদ্ধ পরিচালনা করি। কাঁঠালবাড়ি থেকে রাজাকার আটকের পর আমরা আমাদের আগের অবস্থানে ফিরে আসি।’

কিন্তু হোসেন আলী কমান্ডার আমাদের পরিবারের খোঁজ নিতে অস্ত্রসহ এলাকায় যায়। বাড়িতে আমার বাবার সঙ্গে তাঁর দেখা হয়। তাঁকে দেখতে গ্রামের উৎসুক জনতা এলাকায় আমার বাড়িতে ভিড় জমায়। এ সময় দুর্ঘটনাবশত নিজের হাত থেকেই নিজ বন্দুকের গুলি লেগে মৃত্যুবরণ করেন হোসেন আলী কমান্ডার। আমার বাড়িতেই তাঁর মৃত্যু হয়। আমরা উপস্থিত ছিলাম না। পরে গ্রামবাসী ও বাড়ির লোকজনের কাছ থেকে তাঁর এই মর্মান্তিক মৃত্যুর খবর পাই। তাঁর কথা এখনো মনে পড়ে।’

মুক্তিযোদ্ধা খুরশেদ আলম দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ‘এত কষ্ট করে দেশ স্বাধীন করলাম। কিন্তু দুঃখজনক স্বাধীনতা-পরবর্তীতে আমাদের এই দেশে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী বড় একটা প্রজন্ম বেড়ে উঠেছে। এরা আমাদের দেখলে বলে মুক্তিযোদ্ধা না হলে আমরা নাকি ভিক্ষা করে না খেয়ে মরতাম! এ রকম কথা শুনলে খুব কষ্ট পাই। আমাদের আর চাওয়া-পাওয়ার কিছু নেই।’

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ

ঢাকা সড়ক পরিবহন: প্রশ্নবিদ্ধ কমিটিতেই চলছে মালিক সমিতির কার্যক্রম

৪০ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি করবে টিসিবি

৮ বছরে শিশুহত্যা হয়েছে ৪০০০

যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধির শীর্ষে বাংলাদেশ, তবে বাজারে পিছিয়ে

দেশে ব্যবসায় ঘুষ–দুর্নীতিসহ ১৭ রকমের বাধা

বিদ্যালয়ের জমিতে ৩৯১টি দোকান, ভাড়া নেয় কলেজ

সড়ক দুর্ঘটনায় ৬ প্রাণহানি

সেকশন