কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলার ধনু নদ থেকে ড্রেজার (খনন যন্ত্র) দিয়ে প্রকাশ্যে বালু তোলার অভিযোগ উঠেছে প্রভাবশালী চক্রের বিরুদ্ধে। এতে নদ তীরবর্তী সড়ক ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা স্থানীয়দের। তাঁদের অভিযোগ, প্রকাশ্যে বালু তোলা হলেও প্রশাসন এ বিষয়ে নীরব।
জানা গেছে, প্রায় ২০ দিন ধরে ইটনা উপজেলার ধনু নদের বলদাঘাট থেকে প্রতিদিন দুটি ড্রেজার দিয়ে প্রকাশ্যে বালু উত্তোলন করছেন এনায়েত কবির ও তালেব নামের দুই ব্যক্তি। এই বলদাঘাট থেকে দুটি ড্রেজার দিয়ে প্রতিদিন প্রায় ১৫ থেকে ২০টি বাল্বহেড বালুভর্তি করে বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে বিক্রি করা হয়। একটি বাল্বহেডভর্তি করতে ৬ থেকে ৭ হাজার ফুট বালু লাগে।
এনায়েত কবির শুধু বলদাঘাট নয়, এর আগে ইটনা নতুন বাজারের পাশে ধনু নদ, সহিলা ও বেতাগা গ্রামের পাশের ধনু নদ থেকে অবাধে বালু তুলে বিক্রি করে আসছেন। বালু তোলার অভিযোগের বিষয়ে তিনি মোবাইল ফোনে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘প্রশাসনের কাজই করি। প্রশাসনের বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য বালু তুলি। এটি যেহেতু প্রশাসনের কাজ, সুতরাং প্রশাসনকে বলেই বালু তোলা হয়।’ বালু তুলতে না পারলে প্রকল্পের কাজ করা সম্ভব নয় বলেও উপজেলা প্রশাসনকে তিনি জানিয়েছেন।
এদিকে উপজেলা প্রশাসন বলছে, সরকারি কাজে বালু লাগে। সরকারি কাজ তো বন্ধ থাকবে না। উন্নয়নমূলক কাজে এসব বালু লাগে।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক কয়েক জানান, শুকনো মৌসুমে সাবমার্সিবল সড়ক দিয়ে শহরের সঙ্গে যোগাযোগ সহজ হয়। শুকনো মৌসুমে এই বলদাঘাটে একটি বড় ফেরি থাকে, যা দিয়ে গাড়ি পারাপার হয় আর এই ধনু নদের বলদাঘাটের পাড় প্রতিবছর ভেঙে সাবমার্সিবল সড়কের প্রায় ১৫০ ফুট নদীগর্ভে চলে গেছে।
তাঁরা আরও জানান, এখন দুটি ড্রেজার দিয়ে যেভাবে বালু তোলা হচ্ছে তাতে বলদাঘাটের পাড়ের সঙ্গে সাবমার্সিবল সড়ক বিলীন হয়ে যেতে পারে। বালু উত্তোলনকারীরা প্রভাবশালী। এই প্রভাবশালী মহল বালু উত্তোলন করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। তাঁদের প্রভাব এত বেশি যে, উপজেলা প্রশাসনের নাকের ডগায় বসে বালু তুললেও তাঁরা না দেখার ভান করেন।
ইটনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাফিসা আক্তার বলেন, ‘ড্রেজার দিয়ে কখনোই বালু তোলা যাবে না। ড্রেজার দিয়ে বালু তোলা অবৈধ। বিষয়টি দেখছি। প্রতি মাসে আমরা ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করি।’