পেঁয়াজের উচ্চফলনশীল জাত ‘সুখসাগর’ উৎপাদন হচ্ছে মেহেরপুরের মুজিবনগরে। উপজেলার বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে এ জাতের পেঁয়াজের আবাদ। জানা গেছে, আর এক মাস পরই শুরু হবে সুখসাগর জাতের পেঁয়াজ তোলা। এ সময় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ব্যবসায়ীরা মুজিবনগরে আসেন পেঁয়াজ কিনতে।
জানা গেছে, উচ্চ ফলনশীল জাতের এ পেঁয়াজটি বেশি চাষ হয় মুজিবনগর। এ পেঁয়াজের চাষ করে ভাগ্য বদলিয়েছেন উপজেলার অনেক কৃষক। ২০০৬ সালে ভারত থেকে বীজ এনে শুরু হয় চাষ। বিঘাপ্রতি জমিতে ফলন হয় ১০০ থেকে ১২০ মণ। বর্তমানে সুখসাগর পেঁয়াজের ৫০ ভাগ বীজ উৎপাদন করে থাকেন মুজিবনগর উপজেলার চাষিরা।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, গত মৌসুমে মুজিবনগর উপজেলায় সুখসাগর জাতের পেঁয়াজের আবাদ হয়েছিল ১ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে। পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছিল ৪৫ হাজার মেট্রিক টন। ভালো দাম পাওয়ায় চলতি মৌসুমে এ জাতের পেঁয়াজের আবাদ হয়েছে ১ হাজার ৪৫০ হেক্টর জমিতে। এ ছাড়াও ৫০ হেক্টর জমিতে দেশি বারি ও তাহিরপুরি জাতের পেঁয়াজের আবাদ হয়েছে। যা থেকে পেঁয়াজ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৬২ হাজার ২০০ মেট্রিক টন। মুজিবনগরের মোনাখালী, শিবপুর, বাগোয়ান ও আনন্দবাস গ্রামে সুখসাগর পেঁয়াজের আবাদ হয় বেশি।।
শিবপুর গ্রামের পেঁয়াজ চাষি নফর গাইন বলেন, ‘সুখসাগর পেঁয়াজ চাষে বিঘাপ্রতি গত মৌসুমে খরচ হয়েছিল ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা। এ বছর আনুমানিক খরচ হবে ৪০ থেকে ৪৫ হাজার টাকা।’
আনন্দবাস গ্রামের চাষি আলাউদ্দিন বলেন, ‘প্রতিবছরই সুখসাগর জাতের পেঁয়াজ চাষ করে ভালো ফলন পাই। তবে ভরা মৌসুমে সরকার পেঁয়াজ আমদানি করায় মাঝে মাঝে লোকসানের মুখে পড়তে হয়। এমনকি উৎপাদন খরচ তুলতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয়। এর ওপর চলতি মৌসুমে বেড়েছে ডিজেল ও পরিবহন খরচ। ফলে বেড়েছে উৎপাদন খরচ।’
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আনিসুজ্জামান খান বলেন, এ উপজেলায় যে পরিমাণ পেঁয়াজ উৎপাদন হয় তা জেলার চাহিদা মিটিয়ে চলে যায় দেশের বিভিন্ন জেলায়। এবারের পেঁয়াজ চাষে খরচ একটু বেশি হলেও আবহাওয়া ভালো থাকায় ভালো ফলন হবে। এতে পুষিয়ে নিতে পারবেন কৃষক।