পীরগাছার সুবিদ রায়পাড়া গ্রামের মালতী রানীর সংসার চলত স্বামী ধীরেন্দ্র নাথ চন্দ্র রায়ের মাছ ধরার ওপর নির্ভর করে। সেই স্বামীর মৃত্যুর পর দিশেহারা হয়ে পড়েন মালতী। কাজ নেন ধানের চাতালে। তারপরও ঘোচেনি সংসারের অভাব। শেষে আন্তর্জাতিক বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ইসলামিক রিলিফ বাংলাদেশের সহায়তায় আলোকিত জীবনের দেখা পেয়েছেন তিনি।
বর্তমানে মুদি দোকানি মালতী বলেন, ‘ইসলামিক রিলিফ বাংলাদেশের স্বনির্ভর দলের সদস্য হয়ে এককালীন ১০ হাজার টাকা নিয়ে চাতালের কাজের পাশাপাশি ছোট দোকান দিই। এখন সচ্ছলতার সঙ্গে জীবনযাপন করছি।’
মালতীর মতো এ রকম ৬০০ দরিদ্র পরিবারকে স্বাবলম্বী করেছে ইসলামিক রিলিফ। সংস্থাটির পরামর্শ ও আর্থিক সহায়তায় পরিবারগুলোর মুখে ফুটেছে হাসি। ছেলেমেয়েরা হচ্ছে শিক্ষিত।
ইসলামিক রিলিফের উদ্যোগে এলাকাভিত্তিক দল গঠন করে আয় বৃদ্ধির জন্য ৫০০ পরিবারকে দেওয়া হয়েছে এককালীন ৫০ লাখ টাকা। সেই সঙ্গে ৬০০ পরিবারকে চাল-ডাল, ৩ হাজার ২৭৫ পরিবারকে প্রতি বছর কোরবানির মাংস, ১০০ পরিবারকে রমজানে খাদ্য সামগ্রী ও নানা বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। এসব দলের সদস্যরা গড়ে তুলেছেন বাল্যবিবাহ ও যৌতুক প্রতিরোধে কার্যক্রম। ইতিমধ্যে ভেঙে দিয়েছেন ১১টি বাল্যবিবাহ। নিজেদের প্রচেষ্টায় দেওয়া হয়েছে আটটি যৌতুকবিহীন বিয়ে।
গতকাল সরেজমিনে দেখা যায়, নজর মামুদ গ্রামে ২০ থেকে ২৫ জনের একটি দল সভা করছে। এই দলের সভাপতি রাশেদা বেগম জানান, এলাকায় বাল্যবিবাহের হার কমেছে। স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানা ব্যবহারের ফলে রোগও কমেছে। নারীরা সচেতন হয়েছেন। ফলে নারী নির্যাতন কমেছে।
সংস্থার পীরগাছা উপজেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রকল্প কর্মকর্তা মনজুরুল ইসলাম বলেন, ‘ তাঁরা এখন নতুন জীবনে ফিরে এসেছে। সামনের দিনগুলোতে তাঁরা নিজেরাই এগিয়ে যেতে পারবে।’