হোম > ছাপা সংস্করণ

মরে যাচ্ছে মরা পদ্মার খাল

রাজবাড়ী ও গোয়ালন্দ প্রতিনিধি

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার মরা পদ্মার খালে একসময় চলত পালতোলা নৌকা। খালের পানি সেচ দিয়ে কৃষকেরা চাষাবাদ করতেন। পদ্মা নদী হয়ে খালের সংযোগ দিয়ে মালবাহী বড় বড় নৌকা, বিভিন্ন গ্রামের মানুষ ছোট ছোট নৌকা দিয়ে কৃষিপণ্য পরিবহন ও যাতায়াত করত। পাশাপাশি এলাকার কয়েক হাজার মানুষ দৈনন্দিন কাজের জন্য পানির উৎস ছিল এ খাল। জলবায়ু পরিবর্তন, দখল ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের নজরদারি না থাকায় বর্তমানে অস্তিত্ব হারাতে বসেছে খালটি।

সরেজমিন দেখা যায়, গোয়ালন্দ বাজারের মাল্লাপুট্টি এলাকার মরা পদ্মা নদী থেকে জন্ম নেওয়া খালটি পৌরসভার ভেতর দিয়ে প্রবেশ করে ফরিদপুরের কুমার নদের সঙ্গে মিলিত হয়েছে। এক সময়ের খরস্রোত খালটির পানি প্রবেশের মূল পথটি বন্ধ হয়ে যায়। তারপর থেকে দুই দশক ধরে গোয়ালন্দ পৌরসভার দুই কিলোমিটারের বিভিন্ন অংশ দখল হয়ে গেছে। গড়ে উঠেছে কাঁচা-পাকা স্থাপনা। ব্যক্তিস্বার্থে কাঁচা-পাকা রাস্তাও করা হয়েছে। এমনকি মার্কেট ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নীরব থাকার কারণে বাকি খালটুকু প্রতিনিয়ত দখল হচ্ছে। খালটি দখল করে ভরাট করার কারণে পৌরসভার পানিনিষ্কাশন ব্যবস্থাও বন্ধ হয়ে গেছে। পানিনিষ্কাশন বন্ধ হওয়ার কারণে একটু বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে যায়। অনেকে ঘর থেকে বের হতে পারেন না।

স্থানীয় মো. এনামুল হক বলেন, একসময় এই খালে প্রচুর স্রোত ছিল। দুই যুগ আগে খালের প্রবেশপথ বন্ধ হয়ে গেছে। বাড়িঘর করে ভরাট করে ফেলেছে। তাই এখন আর পানি নাই। খালটি দখলমুক্ত করে আগের রূপে ফিরিয়ে আনার দাবি জানান তিনি।

মো. আজিবর রহমান শেখ বলেন, খালটির উৎপত্তিস্থলটি ভরাট হয়ে যাওয়ায় পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে যায়। এরপর থেকে পৌরসভার অংশে দখলদারদের কারণে ভরাট হয়ে গড়ে উঠেছে বিভিন্ন স্থাপনা। যে কারণে একটু বৃষ্টিতে পৌরসভার মধ্যে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে।

মহম্মদ আলী বলেন, ‘এটি একসময় খাল ছিল। প্রচুর স্রোত ছিল, বড় বড় নৌকা চলতো। পানি না ঢোকায় খালটি মরে যাচ্ছে। খালের জামিতে আমিও বাড়ি করেছি।’ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটি তাঁদের নিজস্ব সম্পত্তি। সরকারের কাছ থেকে খাস করে নিয়েছেন।

স্থানীয় কাউন্সিলর নাসির উদ্দিন রনি খাল দখলের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, খালের বেশির ভাগ অংশ দখল করে অনেকে ঘরবাড়ি তৈরি করেছে। অনেকে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান করেছেন। খালটি দখল হওয়ায় পৌরসভার পানি নিষ্কাশন বন্ধ হয়ে গেছে। এতে একটু বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা হয়।

গোয়ালন্দ পৌরসভার মেয়র নজরুল ইসলাম মণ্ডল বলেন, পৌরসভার ৯ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডে খালটির কিছু অংশে অনেকে মাটি ভরাট করেছেন। অনেকে ময়লা আবর্জনা দিয়ে ভরাট করেছেন। যে কারণে একটু বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। ইতিমধ্যে খালটি দখলমুক্ত করার জন্য একটি পরিকল্পনা হাতে নিয়েছেন। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও ব্যক্তিদের সঙ্গে আলোচনা করে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আজিজুল হক বলেন, ‘আমরা দেখেছি সাধারণ মানুষ, প্রভাবশালী মানুষসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের দখলে আছে খালটি। খালটি দখলমুক্ত করার জন্য ইতিমধ্যেই দখলকারীদের তালিকা চেয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানানো হয়েছে। তালিকা পেলেই উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে।’

রাজবাড়ী পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম অঙ্কুর বলেন, মরা পদ্মা খালটিতে তাঁদের দপ্তরের জমি আছে কি না, খালের খাস জমি আছে কি না; সেটা তদন্ত করার জন্য তাঁদের রাজস্ব কর্মকর্তাকে পাঠাবেন। তাঁর রিপোর্টের ভিত্তিতে প্রয়োজন হলে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হবে।

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ

ঢাকা সড়ক পরিবহন: প্রশ্নবিদ্ধ কমিটিতেই চলছে মালিক সমিতির কার্যক্রম

৪০ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি করবে টিসিবি

৮ বছরে শিশুহত্যা হয়েছে ৪০০০

যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধির শীর্ষে বাংলাদেশ, তবে বাজারে পিছিয়ে

দেশে ব্যবসায় ঘুষ–দুর্নীতিসহ ১৭ রকমের বাধা

বিদ্যালয়ের জমিতে ৩৯১টি দোকান, ভাড়া নেয় কলেজ

সড়ক দুর্ঘটনায় ৬ প্রাণহানি

সেকশন