Ajker Patrika
হোম > ছাপা সংস্করণ

উজাড় হচ্ছে প্রাকৃতিক বন

সমির মল্লিক, খাগড়াছড়ি

উজাড় হচ্ছে প্রাকৃতিক বন

ক্রমেই উজাড় হচ্ছে পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রাকৃতিক বন। বাণিজ্যিক বন সম্প্রসারণ ও বন বিভাগের উদাসীনতার কারণে ধ্বংসের পথে এই প্রাকৃতিক সম্পদ। এর প্রভাব পড়ছে প্রকৃতি ও পরিবেশের ওপর। এভাবে চলতে থাকলে ১০-১৫ বছরে হারিয়ে যাবে প্রাকৃতিক বন।

খাগড়াছড়িতে সংরক্ষিত বনের পরিমাণ ৬ হাজার ২০০ একর। অ-শ্রেণিভুক্ত বনের আয়তন প্রায় ২ লাখ ৬৩ হাজার ৩২ একর। পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রাকৃতিক বন রক্ষায় এখনই উদ্যোগ নেওয়ার তাগিদ দিয়েছেন পরিবেশকর্মীরা।

বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়ি বনের আয়তন ৩ লাখ ২২ হাজার ৩৩১ হেক্টর। নির্বিচারে বন ধ্বংস, বিদেশি প্রজাতির গাছের আগ্রাসন, প্রাকৃতিক বন উজাড় করে রাবার ও ফলদ বাগান তৈরি, বনের গাছ চুরির কারণে দ্রুত হারিয়ে যাচ্ছে প্রাকৃতিক বন। এ ছাড়া অপরিকল্পিত অবকাঠামো নির্মাণের কারণে বনের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। বন ধ্বংসের কারণে হারিয়ে যাচ্ছে শত প্রজাতির বৃক্ষ, লতাগুল্ম। বিচরণক্ষেত্র কমে যাওয়ায় বনের ওপর নির্ভরশীল বন্য প্রাণী বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে।

এসব নিয়ে বন বিভাগের কোনো নজরদারি নেই। প্রাকৃতিক বন বিপন্ন হওয়ায় বিপন্ন হয়ে উঠছে বনের ওপর নির্ভরশীল মানুষজন। বন ধ্বংস হওয়ায় পানির উৎস কমেছে প্রায় ৬১ শতাংশ। শুষ্ক মৌসুমে ঝির-ঝরনায় পানির উৎস কমে আসে।

বন উজাড়ের চিত্র পাওয়া যায় খাগড়াছড়ির দীঘিনালা ও পানছড়ি উপজেলার সীমান্তবর্তী সীমানাপাড়া এলাকায়। পাড়া থেকে প্রায় এক ঘণ্টা হাঁটার পর বনখেকোদের দেখা মেলে। যেতে যেতে চোখে পড়ে বনের গাছ পরিবহন করার জন্য পাহাড় কেটে রাস্তা করা হয়েছে।

গাছ কাটার কাজে নিয়োজিত চিত্তরঞ্জন চাকমা, জ্ঞান চাকমা, আলো জীবন চাকমাসহ একাধিক শ্রমিক জানান, মূলত পাহাড় খাস হলেও বনের মালিকানা রয়েছে স্থানীয় বাসিন্দাদের। মালিকদের কাছ থেকে পাহাড়ের গাছ কিনে নেওয়া হয়। ইটভাটায় গাছ সরবরাহকারী দালালেরা (মাঝি) স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে পাহাড়ের গাছ কিনে নেন। নির্বিচারে কাটা হয় গাছ। এ কাজে নিয়োজিত প্রতিটি শ্রমিকের মজুরি ৩০০ টাকা। তাঁরা বলেন, সারা দিনে অন্তত ৫০০ মণ গাছ কর্তন করছেন তাঁরা।

সংরক্ষিত বন রক্ষার পাশাপাশি বিদ্যমান বন আইনের সংস্কার চান পরিবেশকর্মীরা। খাগড়াছড়ি পরিবেশ আন্দোলনের সভাপতি প্রদীপ চৌধুরী বলেন, প্রাকৃতিক বন ধ্বংসের কারণে বর্ষাকালে মাটির ক্ষয় বেড়েছে। মানুষের জীবন ও জীবিকার ওপর প্রভাব পড়েছে। বিলুপ্তির পথে পার্বত্য চট্টগ্রামের অধিকাংশ বন্য প্রাণী।

খাগড়াছড়ির বন্য প্রাণীবিষয়ক আলোকচিত্রী সবুজ চাকমা বলেন, একসময় পাহাড়ে ভালুক, বাঘ, সাম্বার হরিণসহ বিভিন্ন প্রজাতির পশু-পাখি দেখা গেলেও আজ তা বিপন্ন। একসময় অন্তত ৩৭৫ প্রজাতির পাখি দেখা যেত, যা আজ হারিয়ে গেছে।

নির্বিচারে পাহাড় কাটা, বনের গাছ বিক্রির কারণে প্রকৃতির ওপর প্রভাব পড়ছে। সনাতন পদ্ধতিতে জুমচাষের কারণে কমছে বনের আয়তন। খাগড়াছড়ির বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা জাবারাং-এর নির্বাহী পরিচালক মথুরা বিকাশ ত্রিপুরা বলেন, ‘শত শত বছরে সৃষ্ট প্রাকৃতিক বন ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। বনের মূল্যবান কাঠ পাচার হয়ে যাচ্ছে। বন কমে যাওয়ায় পাহাড়ে পানির উৎসও কমে গেছে।’

প্রাকৃতিক বনের গাছ পাচার রোধে কাজ করার কথা জানিয়েছে বন বিভাগ। খাগড়াছড়ি বিভাগীয় বন কর্মকর্তা হুমায়ন কবির বলেন, ‘ইটভাটা নিয়ন্ত্রণ আইনে বনের কাঠ পোড়ানো সম্পূর্ণ নিষেধ। কেউ যদি বনের কাঠ ব্যবহার করে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য মাঠপর্যায়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ

ঢাকা সড়ক পরিবহন: প্রশ্নবিদ্ধ কমিটিতেই চলছে মালিক সমিতির কার্যক্রম

৪০ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি করবে টিসিবি

৮ বছরে শিশুহত্যা হয়েছে ৪০০০

যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধির শীর্ষে বাংলাদেশ, তবে বাজারে পিছিয়ে

দেশে ব্যবসায় ঘুষ–দুর্নীতিসহ ১৭ রকমের বাধা

বিদ্যালয়ের জমিতে ৩৯১টি দোকান, ভাড়া নেয় কলেজ