হোম > ছাপা সংস্করণ

ডোপ টেস্ট উতরে যেতে চালকদের কৌশল

সাবিত আল হাসান, নারায়ণগঞ্জ

ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে একটি কোম্পানির বাস নিয়মিত চালান রতন (৩৮)। চালক পেশায় রয়েছেন প্রায় ১০ বছর ধরে। সহকর্মী ও কর্মপরিবেশের সুবাদেই মাঝেমধ্যে গাঁজা সেবন করা হতো তাঁর। তবে তা নিয়মিত নয় বলে দাবি রতনের। নিজের ড্রাইভিং লাইসেন্স নবায়নের জন্য ডোপ টেস্টের কথা শুনে এক মাস ধরে মাদক সেবন বন্ধ রেখেছেন। রোজার পরেই ডোপ টেস্ট করে ড্রাইভিং লাইসেন্স নবায়ন করে নেওয়ার পরিকল্পনা তাঁর।

বর্তমানে মাদকাসক্ত চালকদের গাড়ি চালানো বন্ধ করতে ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য ডোপ টেস্টের সনদ লাগছে। এই সনদ ছাড়া চালকেরা নতুন লাইসেন্স কিংবা লাইসেন্স নবায়ন করতে পারছেন না। এ জন্য চালকদের বিআরটিএ কার্যালয় থেকে টেস্টের আবেদন নিয়ে ঢামেকসহ ৭টি সরকারি হাসপাতালে যেতে হচ্ছে। সেখানে রেজাল্ট নেগেটিভ এলেই উতরে যাবেন চালকেরা।

নারায়ণগঞ্জ বিআরটিএ সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ৩০ জানুয়ারি থেকে ডোপ টেস্টের মাধ্যমে লাইসেন্স ইস্যু ও নবায়নের নিয়ম বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। চালকদের ড্রাইভিং লাইসেন্স কিংবা নবায়নের জন্য ডোপ টেস্টের সনদ বিআরটিএতে জমা দিতে হবে। কোনো চালক যদি ডোপ টেস্ট পজিটিভ (মাদক গ্রহণকারী) হন বা তাতে বিরূপ মন্তব্য থাকে, তাহলে তাঁর পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স ইস্যু বা নবায়ন করা হবে না।

গত ৩০ জানুয়ারি থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত দুই মাসে ১ হাজার ২৬৭টি ডোপ টেস্টের আবেদন ইস্যু হয়েছে। এসব আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ১৫২ জনের রিপোর্ট বিআরটিএ কার্যালয়ে পৌঁছেছে। রিপোর্ট নেগেটিভ হওয়ায় তাঁদের ফাইল চালু হয়েছে। দাপ্তরিক প্রক্রিয়া শেষে লাইসেন্স পাবেন তাঁরা। বাকিদের রিপোর্ট এখনো বিআরটিএ কার্যালয়ে এসে পৌঁছেনি। তবে টেস্টে পজিটিভ হওয়া ব্যক্তিরা রিপোর্ট নিয়ে আসছেন না বলেও মন্তব্য করেন কেউ কেউ।

বিআরটিএ নারায়ণগঞ্জের লাইসেন্স শাখার কর্মকর্তারা বলছেন, যাঁর ডোপ টেস্টের রিপোর্ট পজিটিভ আসবে, তিনি আপাতত লাইসেন্স পাওয়ার জন্য মনোনীত হবেন না। সে ক্ষেত্রে সেই চালকের প্রতি আমাদের পরামর্শ হচ্ছে, তাঁরা চিকিৎসা নিয়ে এক বা দুই মাস পর পুনরায় আবেদন করবেন। তখন তাঁর আবেদনে নেগেটিভ এলে তিনি লাইসেন্সের জন্য মনোনীত হবেন। রেজাল্ট নেগেটিভ না আসা পর্যন্ত তিনি কোনোভাবেই পেশাদার লাইসেন্স পাবেন না। তবে অপেশাদার লাইসেন্সের ক্ষেত্রে ডোপ টেস্টের কোনো বাধ্যবাধকতা নেই।

ডোপ টেস্টের রেজাল্ট জাল করা সম্ভব কি না, এমন প্রশ্নে সংস্থাটির জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক (ইঞ্জি.) শামসুল কবীর বলেন, ‘ঢাকার নির্ধারিত কয়েকটি হাসপাতালের রিপোর্ট ছাড়া আমরা রেজাল্ট গ্রহণ করি না। সেখান থেকে রেজাল্ট জাল করা সম্ভব নয়। রিপোর্ট আমাদের কাছে প্রদান করার পরেই তাকে ই-মেইলে আমাদের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হয়। ফলে এখন থেকে যারা নবায়নে আসবে, তাদের মাদক থেকে বিরত থাকতেই হবে। এর ফলে সড়কে দুর্ঘটনা কমে আসবে বলে আমরা মনে করি।’

ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে চলাচল করা উৎসব পরিবহনের পরিচালক কামাল মৃধা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সরকার যে উদ্যোগ নিয়েছে তা প্রশংসনীয়। একজন অসুস্থ লোকের হাতে গাড়ি দেওয়াটা বিপজ্জনক। কারণ, তার হাতে দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা বেশি থাকে। হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলে মাদকাসক্ত চালকেরা। ডোপ টেস্টের মাধ্যমে অবশ্যই নেশাগ্রস্তরা আটকে যাবে। এই উদ্যোগকে আমরা সাধুবাদ জানাই।’

এদিকে চালকদের ডোপ টেস্টের আওতায় আনাকে সাধুবাদ জানিয়েছেন সচেতন নাগরিকেরা। এ বিষয়ে ‘আমরা নারায়ণগঞ্জবাসী’র সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা হাজি নূর উদ্দিন বলেন, ‘বাণিজ্যিক নগরী নারায়ণগঞ্জে প্রচুর ট্রাক ও বাস চলাচল করে। বেপরোয়া চলাচলের কারণে দুর্ঘটনা ঘটে লিংক রোডসহ বিভিন্ন স্থানে। বিআরটিএ যদি সুষ্ঠুভাবে এই ডোপ টেস্ট অব্যাহত রাখে, তাহলে চালকেরা মাদক থেকে সরে আসতে বাধ্য হবে।

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ

ঢাকা সড়ক পরিবহন: প্রশ্নবিদ্ধ কমিটিতেই চলছে মালিক সমিতির কার্যক্রম

৪০ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি করবে টিসিবি

৮ বছরে শিশুহত্যা হয়েছে ৪০০০

যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধির শীর্ষে বাংলাদেশ, তবে বাজারে পিছিয়ে

দেশে ব্যবসায় ঘুষ–দুর্নীতিসহ ১৭ রকমের বাধা

বিদ্যালয়ের জমিতে ৩৯১টি দোকান, ভাড়া নেয় কলেজ

সড়ক দুর্ঘটনায় ৬ প্রাণহানি

সেকশন