অজানা এক ভয় নিয়ে শুরু হয়েছিল ওমিক্রন। দিনের পর দিন পরিসংখ্যানও সে কথাই বলেছে। নতুন চেহারা পেয়েছে মহামারি। আগে এত বেশি সংক্রমণ দেখেনি বিশ্ব। এ চিত্র ওমিক্রনের কারণেই। কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথম শনাক্তের দুই মাস পর কি সে ভয়াবহতা সত্যিকার অর্থে টিকে আছে? মৃত্যু ও হাসপাতালে ভর্তির ঝুঁকি বিবেচনা করলে বলতে হবে, ভয় অনেকটাই কেটে গেছে। বিশেষজ্ঞদের একটি দলও সে কথাই বলছে। তাঁদের মতে, সাধারণ ফ্লু জাতীয় রোগে পরিণত হয়ে ওমিক্রনের মাধ্যমেই শেষ হবে মহামারি।
সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে দেওয়া মন্তব্যে যুক্তরাজ্যের সোয়ানসি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক সাইমন উইলিয়ামস বলেন, এখন মনে হচ্ছে আগের ধরনের চেয়ে ওমিক্রনের শঙ্কা অনেক কম। ফলে ভয় অনেকটাই কমে এসেছে। লন্ডনের স্কুল অব হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিক্যাল মেডিসিনের অধ্যাপক ডেভিড হেইম্যান বলেন, করোনা শেষের দিকে এসে পড়েছে। কিছুদিনের মধ্যেই স্বাভাবিক জীবনের একটি অংশ হয়ে যাবে। সব ভাইরাসই শেষ খুঁজে। মনে হচ্ছে ওমিক্রনে শেষ খুঁজে নিয়েছে করোনাভাইরাস।
মানুষের জীবন থেকে করোনা একদম বিদায় নেবে না। অন্যান্য রোগের মতো একটি রোগে পরিণত হবে। এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ের মহামারিবিদ মার্ক উলহাউস বলেন, একবার নয়, অনেকেই কয়েকবার আক্রান্ত হবেন। এর মধ্য দিয়ে চিরায়ত ‘সংক্রমণ’ বাড়বে। দেহে তৈরি হবে ইমিউনিটি। ওমিক্রন করোনার আরেকটি ডোজ। আমরা এই ডোজে আক্রান্ত হব, আবার টিকার ডোজ নেব।
করোনার সঙ্গে খেলায় এক দিক থেকে মানুষ এগিয়ে যাবে বলে মনে করছেন একদল বিজ্ঞানী। একে ‘গেম চেঞ্জার’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়। ধরা যাক, ওমিক্রন শেষ হলে আরেক ধরন আসবে। এর চেয়ে আরও ভয়াবহ। তখন ওমিক্রনের কারণে দেহে তৈরি হওয়া ইমিউনিটির ফলে ঝুঁকি ওমিক্রনের চেয়ে আরও কম হবে। এভাবেই একদিন সাধারণ রোগ হয়ে যাবে করোনা।
অধ্যাপক ডেভিড হেইম্যান বলেন, এর আগে চারটি ভাইরাসের এমন পরিণতি হয়েছে। সংক্রমণের প্রাকৃতিক নিয়ম বলছে, করোনা পঞ্চম ভাইরাস হিসেবে সে পথেই হাঁটবে।
তবে দরিদ্র ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে টিকাদান কার্যক্রম দ্রুত না করতে পারলে এসব তত্ত্বকথা বিফলে যেতে পারে বলে মনে করেন যুক্তরাজ্যের সোয়ানসি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক সাইমন উইলিয়ামস।