দিঘির পানিতে ধসে পড়ছে কেশবপুরের ভালুকঘর বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষ। ভবনের মেঝের মাটি দিঘির পানিতে বিলীন হওয়ায় শ্রেণিকক্ষ পাঠদানের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
এ কারণে বিদ্যালয়টিতে শ্রেণিকক্ষের অভাবে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করাতে শিক্ষকদের পড়তে হয়েছে নানামুখী সমস্যায়। একই কক্ষে আসনসংখ্যার অধিক শিক্ষার্থীদের পাঠদান করানোয় শিক্ষার্থীদেরও সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯৬৯ সালে ৮৮ শতক জমির ওপর ভালুকঘর বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। বিদ্যালয়ে ৪ শতাধিক শিক্ষার্থী রয়েছে। প্রতিষ্ঠালগ্নে শিক্ষকদের অর্থায়নে চারটি কক্ষবিশিষ্ট দুটি টিনের চাল ঘর এবং দুই কক্ষবিশিষ্ট একটি আধা পাকা ভবন নির্মাণ করা হয়। কিন্তু টিনের চাল ঘর দুটির টিন নষ্ট হয়ে গেলেও অর্থাভাবে তা আর সংস্কার সম্ভব হয়নি। এ ছাড়া ১৯৮৪ সালে নির্মাণ করা আধা পাকা ভবনের ভিত পাশের দিঘিতে ধসে বিলীন হওয়ায় ভবনটিতে লেখাপড়া করানো সম্ভব হচ্ছে না।
সম্প্রতি ভবনটিতে বড় বড় ফাটল দেখা দিয়েছে। গত ছয় মাস আগে ভবনটি ছাত্র-ছাত্রীদের নিরাপত্তার কথা ভেবে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। দশম ও অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ভবনটিতে পাঠদান চলত। পরিত্যক্ত হওয়ার পর শ্রেণিকক্ষ সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত আটটি শ্রেণিকক্ষের প্রয়োজন থাকলেও রয়েছে অফিস কক্ষসহ মাত্র তিনটি। আর এ কারণে পাঠদান করাতে গিয়ে শিক্ষকদের পড়তে হচ্ছে ভোগান্তিতে। গরমের মধ্যে আসনসংখ্যার অধিক শিক্ষার্থীদের নিয়ে পাঠদান করানোয় শিক্ষার্থীরাও রয়েছে কষ্টের মধ্যে।
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক কামাল হোসেন বলেন, ‘কক্ষ সংকটের কারণে বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির অনুমতি সাপেক্ষে অনেক সময় একটি শ্রেণির পাঠদান বন্ধ রেখে অন্য শ্রেণির পাঠদান করাতে হয়। মাঝে মধ্যে মেঝে ও খেলার মাঠেও পাঠদান করাতে বাধ্য হতে হয়।’
দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী অমৃতা দাস পূজা জানায়, শ্রেণি কক্ষের সংকটে ক্লাসে গাদাগাদি করে বসতে হয়। প্রচণ্ড গরমে তাদের খুব কষ্ট হয়।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বাসুদেব সেন গুপ্ত বলেন, ‘দিঘির পানিতে অষ্টম ও দশম শ্রেণির দুটি কক্ষ ধসে পড়ছে। এ কারণে ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। এক সঙ্গে সব শিক্ষার্থীকে পাঠদান করার মতো পর্যাপ্ত শ্রেণিকক্ষ নেই। ভবন বরাদ্দের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে কয়েকবার আবেদন করেও বরাদ্দ মেলেনি। আগামী এসএসসি পরীক্ষায় ৭৩ জন শিক্ষার্থী অংশ নেবে। জায়গার অভাবে তাদের অতিরিক্ত পাঠদান সম্ভব হচ্ছে না।’
বিদ্যালয়ের অ্যাডহক কমিটির সভাপতি ডা. অজিত কুমার ঘোষ বলেন, ‘দিঘিতে ঘের মালিক রাসায়নিক সার ব্যবহার করেন। যে কারণে আধা পাকা ভবনটির ভেতরে মাটি ধসে তলদেশ ফাঁকা হয়ে গেছে। যে কোনো সময় ভবনটি দিঘিতে ধসে বিলীন হয়ে যেতে পারে। এ মুহূর্তে নতুন একটি ভবন বরাদ্দ না মিললে এসব সমস্যার সমাধান হবে না।’