জয়পুরহাট প্রতিনিধি
করোনার নতুন ধরন ওমিক্রনের সংক্রমণ বিশ্বজুড়ে দিন দিন বাড়ছে। এদিকে করোনার সংক্রমণ বাংলাদেশে বাড়তে থাকায় বিধিনিষেধ জারি করেছে সরকার। কিন্তু জয়পুরহাটের সাধারণ মানুষের মাঝে সামাজিক দূরত্বের কোনো বালাই নেই। অন্যদিকে গতকাল জয়পুরহাট শহরের পশুর হাটে জনসমাগম দেখা যায়। হাটসহ সর্বত্রই মাস্ক না পরেই ঘুরছে মানুষ। এতে লঙ্ঘিত ও উপেক্ষিত হচ্ছে স্বাস্থ্যবিধি। হাট কর্তৃপক্ষ মাস্ক পরতে মাইকিং করলেও তা কেবল প্রচারেই সীমাবদ্ধ ছিল।
গত বৃহস্পতিবার থেকে কার্যকর হওয়া বিধিনিষেধের কোনো প্রতিফলন জয়পুরহাটে দেখা যায়নি। গতকাল দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত জেলা শহর ঘুরে দেখা গেছে, সাধারণ মানুষ স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই চলাচল করছেন। অধিকাংশ মানুষের মুখে নেই মাস্ক। শহরের জিরো পয়েন্ট পাঁচুর মোড়, পূর্ব বাজার, মাছুয়া বাজার, বাটার মোড়, রেললাইন হকার্স মার্কেট, নিউমার্কেট, পৌর মার্কেট, গরুর হাটে মাস্ক ছাড়াই চলাচল করছে মানুষ। এদিকে যাত্রীবাহী পরিবহনগুলোতেও গাদাগাদি করে বসে নিজ গন্তব্যে যান মানুষ।
মাস্ক না পরার কারণ হিসেবে সাধারণ মানুষের মত হলো, যেহেতু দেশে এখন মাস্ক পরার জন্য সরকারি কঠোর বিধিনিষেধ নেই, তাই তাঁরা মাস্ক পরছেন না। কেউবা বলছেন, তাঁরা করোনার দুই ডোজ টিকা নিয়েছেন। সে জন্য মুখে মাস্ক না পরেই তাঁরা চলাফেরা করছেন।
জয়পুরহাট শহরের নতুন হাটে গরু বিক্রি করতে এসেছিলেন জেলার কালাই উপজেলার আঁওড়া গ্রামের আনিসুর রহমানসহ একই গ্রামের আলম ও আলী হাসান। গরুর হাটে প্রচণ্ড ভিড় থাকা সত্ত্বেও মাস্ক না পরার কারণ জানতে চাইলে তাঁরা বলেন, এ ব্যাপারে কঠোর বিধিনিষেধ কার্যকর না থাকায় তাঁরা মাস্ক পরেননি।
নওগাঁ জেলার বদলগাছী থানার পারোলা গ্রামের তজিবর এবং একই থানার খাদাইল গ্রামের রেজাউল করিম নামের গরুর ব্যাপারীরা জানান, তাঁরা দুজনেই করোনার দুই ডোজ টিকা দিয়েছেন। তাই তাঁরা মোটামুটি করোনা থেকে শঙ্কামুক্ত। সে জন্যই মাস্ক পরেননি।
এদিকে জয়পুরহাটে শুক্রবার সকাল আটটা থেকে শনিবার সকাল আটটা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় তিনজনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। তবে কেউ মারা যাননি। জেলায় করোনায় এ পর্যন্ত মোট মারা গেছেন ৬৪ জন। গতকাল শনিবার সিভিল সার্জন ওয়াজেদ আলী জানান, ২৪ ঘণ্টায় তিনটি নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। আগেরসহ ৭৯টি নমুনার রিপোর্ট এসেছে। এতে করোনা শনাক্ত হয়েছে তিনজনের। একই সময়ে করোনা থেকে কেউ সুস্থ হননি। আক্রান্তের হার ৩ দশমিক ৮০ শতাংশ।
সিভিল সার্জন ওয়াজেদ আলী বলেন, ‘টিকা নিলেও প্রত্যেককে অবশ্যই মাস্ক পরতে হবে। কারণ, টিকা গ্রহণকারী ব্যক্তিও করোনায় আক্রান্ত হতে পারেন। তবে টিকা গ্রহণ করা থাকলে তাঁর বড় ধরনের ক্ষতি হওয়ার শঙ্কা কম থাকে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরাফাত হোসেন বলেন, ‘স্বাস্থ্যবিধি বিষয়ে ভবিষ্যতে কী নির্দেশনা আসবে, তা জানি না। তবে এ বিষয়ে জনগণকে সচেতন করার জন্য আমরা তৎপরতা চালাব এবং ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করব।’