কক্সবাজারের পেকুয়ার মগনামা ইউনিয়নে নির্মাণাধীন সাবমেরিন নৌঘাঁটির সঙ্গে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের একতা বাজার সংযোগ সড়কের নির্মাণকাজে অনিয়ম ও ত্রুটির অভিযোগ উঠেছে। এতে সড়কের গুণগতমান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
সূত্রে জানা গেছে, একতা বাজার থেকে বানৌজা শেখ হাসিনা ঘাঁটি সংযোগ সড়কের নির্মাণকাজ ২০২০ সালের ২২ নভেম্বর ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উদ্বোধন করেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। চলতি বছরের ৩০ জুনের মধ্যে সড়ক ও জনপথ বিভাগের প্রকল্পটির কাজ শেষ করার কথা রয়েছে। ইতিমধ্যে ৯০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৬১ কোটি টাকা।
জানা গেছে, চকরিয়ার বরইতলী একতা বাজার থেকে মগনামা পর্যন্ত দীর্ঘ ২৩ কিলোমিটার সড়ককে ১০ দশমিক ৩ পয়েন্টে উন্নীত করা হবে। তিন প্যাকেজে এ সড়কটির নির্মাণকাজ সম্পন্ন করা হচ্ছে। ডেভেলপমেন্ট ইঞ্জিনিয়ার্স, জামিল ইকবাল, রানা বিল্ডার্স ও হাসান টেকনো বিল্ডার্স নামে চারটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এই নির্মাণকাজ বাস্তবায়ন করছে।
সরেজমিন গোঁয়াখালী এলাকায় দেখা গেছে, রাস্তার উত্তর পাশে নির্মাণাধীন গাইড ওয়ালের নিচের অংশ ফাঁকা রেখে ওপরে কংক্রিটের ঢালাই দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় লোকজন প্রতিবাদ করলে গাইড ওয়ালের ফাঁকা অংশ পলিথিন দিয়ে ঢেকে মাটি ভরাট করা হয়।
অভিযোগ রয়েছে, তড়িঘড়ির কারণে যথাযথ প্রক্রিয়ায় হচ্ছে না নির্মাণকাজ। এদিকে পহরচাঁদা এলাকায় সড়কে কার্পেটিংয়ে নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহার করা হচ্ছে।
পেকুয়া সদর ইউনিয়নের বাসিন্দা মোহাম্মদ হিজবুল্লাহ বলেন, তাড়াহুড়ো করে কাজ শেষ করতে গিয়ে কাজের মান ঠিক রাখতে পারছেন না ঠিকাদার। তা ছাড়া সুষ্ঠু তদারকির অভাবে নানা অনিয়ম হচ্ছে। বালুর পরিবর্তে পাহাড়ের মাটি দিয়ে সিমেন্টের মিশ্রণ (মসলা) তৈরি করে গাইড ওয়ালের আস্তরণ করা হচ্ছে। যেনতেন কাজ করে সরকারি অর্থ লোপাটের উৎসব চলছে।
মগনামা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইউনুস চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, বানৌজা শেখ হাসিনা ঘাঁটি সংযোগ সড়কের কাজে কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা করা হচ্ছে না। সওজের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা ও স্থানীয় একজন জনপ্রতিনিধির সঙ্গে আঁতাত করে খুবই নিম্নমানের কাজ করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো। বরাদ্দের অর্ধেক টাকাও যদি কাজে ব্যয় করা হয়, তাহলে সড়কটি কিছুটা অন্তত টেকসই হতো।
চেয়ারম্যান ইউনুস জানান, পাহাড় কেটে এ সড়ক ভরাটের অভিযোগে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জামিল ইকবাল কনস্ট্রাকশনকে ২০ লাখ টাকা জরিমানা করেছিল পরিবেশ অধিদপ্তর। তাদের প্রতিটি কাজেই অনিয়মে ভরা।
অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জামিল ইকবাল কনস্ট্রাকশনের প্রজেক্ট ম্যানেজার জামিল আশরাফুল আলম। তিনি বলেন, ‘সড়ক ও জনপথ বিভাগের তদারকিতে আমাদের প্রতিটি কাজ করা হচ্ছে। আমরা ভালোভাবে ইতিমধ্যে অধিকাংশ কাজ শেষ করেছি।’
বানৌজা শেখ হাসিনা ঘাঁটি সংযোগ সড়ক প্রকল্পের পরিচালক আব্দুল ওয়াহিদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘প্রকল্পের প্রতিটি কাজ আমাদের তদারকিতে হচ্ছে। এখানে অনিয়ম বা ত্রুটির কোনো সুযোগ নেই।’