হোম > ছাপা সংস্করণ

হাজিরা যন্ত্র এখন গলার কাঁটা

এইচ এম মইনুল ইসলাম, মোরেলগঞ্জ (বাগেরহাট)

বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে ডিজিটাল বায়োমেট্রিক শিক্ষক হাজিরা ডিভাইস কেনায় ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতি ও মোটা অঙ্কের অর্থ কেলেঙ্কারির অভিযোগ উঠেছে। ডিভাইস ক্রয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একাধিক চক্রের ভাগ-বাঁটোয়ারা নিয়ে টানাপোড়েনে বর্তমানে আটকে গেছে এ কার্যক্রম। শিক্ষকদের এখন গলার কাঁটা এ বায়োমেট্রিক মেশিন।

বাগেরহাট-৪ আসনের সাংসদ অ্যাডভোকেট আমিরুল আলম মিলন প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী বারবার শিক্ষক হাজিরা ডিভাইস কেনার নামে সরকারি টাকা আত্মসাতের বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করেছেন।

সাংসদের অভিযোগপত্র থেকে জানা গেছে, উপজেলায় শিক্ষক হাজিরা ডিভাইস কেনার নামে কালক্ষেপণ করা হয়। অনিয়মের কারণে অধিদপ্তর থেকে ডিভাইস না কিনে টাকা ফেরত চাওয়া হয়। কিন্তু ডিভাইস সরবরাহকারীরা টাকা ফেরত না দিয়ে তড়িঘড়ি সর্বোচ্চ ৬ হাজার টাকার ডিভাইস ১৮ হাজার টাকার রসিদ দেখিয়ে বাকি টাকা আত্মসাৎ করে।

বিষয়টি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে অবহিত করা হলে তিনি কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে দ্রুত কাজ শেষ করার নির্দেশ দেন।

জানা গেছে, উপজেলার পৌরসদরসহ ১৬টি ইউনিয়নে ৩০৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। ২০১৯ সালে স্লিপের টাকা দিয়ে বায়োমেট্রিক হাজিরা ডিভাইস কেনার জন্য সাবেক উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নির্দেশ দেন। সে মোতাবেক বায়োমেট্রিক ডিভাইস কেনার আগেই স্লিপের ২০ হাজার টাকার রসিদও জমা দেন শিক্ষকেরা।

২০২০ সালের প্রথম দিকে কিছু বিদ্যালয়ে বায়োমেট্রিক ডিভাইস ১৮ হাজার টাকা মূল্য দেখিয়ে কেনা হয়। ১৭ মার্চ থেকে করোনার কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হলে এ কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ে। এরই মধ্যে বায়োমেট্রিক ডিভাইস কেনায় দুর্নীতির অভিযোগ উঠলে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বায়োমেট্রিক ডিভাইস না কিনে এ বছরের ২৯ জুলাইয়ের মধ্যে স্লিপের টাকা ট্রেজারিতে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন।

বায়োমেট্রিক ডিভাইস সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান তাঁর নির্দেশ উপেক্ষা করে চলতি বছরের সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে তড়িঘড়ি করে প্রায় সব বিদ্যালয়ে বায়োমেট্রিক ডিভাইস স্থাপন করে, যা এখনো চালু করা হয়নি।

এদিকে বাগেরহাট-৪ আসনের সাংসদ অ্যাডভোকেট আমিরুল আলম মিলনের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে গত ১০ নভেম্বর প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের উপপরিচালক (প্রকিউরমেন্ট) শেখ মো. রায়হান উদ্দিন সরেজমিনে তদন্তে আসেন। এ সময় জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শাহ আলম, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. জালাল উদ্দিন খান, সাংসদের প্রতিনিধি অ্যাডভোকেট তাজিনুর রহমান পলাশসহ সাংবাদিক ও শিক্ষক নেতারা উপস্থিত ছিলেন। তিনি উপস্থিত সবার লিখিত সাক্ষ্য নেন। তিনি সব বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের লিখিত সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকেরা বলেন, তাঁরা কয়েকজন শিক্ষক নেতার চাপের মুখে এ বায়োমেট্রিক ডিভাইস নিতে বাধ্য হয়েছেন। ১৮ হাজার করে টাকাও নেওয়া হয়েছে। কয়েক মাস হয়ে গেলেও এ ডিভাইস চালু করা হয়নি। এগুলো যেকোনো সময় অকেজো হওয়ার আশঙ্কায় রয়েছেন তাঁরা।

উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. জালাল উদ্দিন খান বলেন, উপজেলার সব বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের কাছ থেকে উপপরিচালক বায়োমেট্রিক ডিভাইস কেনার বিষয়ে লিখিত সাক্ষ্য নিয়েছেন। সাবেক উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার সময় এ বায়োমেট্রিক ডিভাইস কেনার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছিল। তবে শিক্ষা অধিদপ্তরের উপপরিচালক (প্রকিউরমেন্ট) তদন্ত প্রতিবেদনের বিষয়ে তিনি অবগত নন বলে জানান।

জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শাহ আলম বলেন, দুই বছর আগে স্লিপের রসিদ জমা দিয়ে বায়োমেট্রিক ডিভাইস কেনার সিদ্ধান্ত হয়। সে সময় অনেকে এ মেশিন কিনতে পারেননি। এ বছরে শিক্ষকেরা তড়িঘড়ি করে সেসব মেশিন কেনেন। তবে এ ডিভাইস কেনায় কোনো অনিয়ম হয়েছে কি না তা তাঁর জানা নেই।

তিনি আরও বলেন, বায়োমেট্রিক মেশিন কেনায় অনিয়মের কারণে বাগেরহাট-৪ আসনের সাংসদের অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করেছেন শিক্ষা অধিদপ্তরের উপপরিচালক (প্রকিউরমেন্ট) শেখ মো. রায়হান উদ্দিন।

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ

ঢাকা সড়ক পরিবহন: প্রশ্নবিদ্ধ কমিটিতেই চলছে মালিক সমিতির কার্যক্রম

৪০ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি করবে টিসিবি

৮ বছরে শিশুহত্যা হয়েছে ৪০০০

যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধির শীর্ষে বাংলাদেশ, তবে বাজারে পিছিয়ে

দেশে ব্যবসায় ঘুষ–দুর্নীতিসহ ১৭ রকমের বাধা

বিদ্যালয়ের জমিতে ৩৯১টি দোকান, ভাড়া নেয় কলেজ

সড়ক দুর্ঘটনায় ৬ প্রাণহানি

সেকশন