ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের শত শত বিঘা জমির পেঁয়াজের চারা মরে মাটিতে মিশে গেছে। ভুক্তভোগী কৃষকদের অভিযোগ, নিম্নমানের ভারতীয় পেঁয়াজের বীজ কিনে তাঁরা মহা বিপাকে পড়েছেন। তবে কৃষি অফিস বলছে, আবহাওয়া অনুকূল না থাকায় এমনটি হয়েছে।
উপজেলার বিভিন্ন মাঠ ঘুরে দেখা যায়, পেঁয়াজের চারা মরে মাটির সঙ্গে মিশে আছে। কোনো কোনো খেতের পেঁয়াজের চারায় শিকড় জন্মায়নি। ফলে অল্প দিনেই পেঁয়াজের চারা সোজা হতে না পেরে লাল হয়ে মরে যাচ্ছে। কৃষকেরা জানান, লাল তীর কিং মনে করে ভারতীয় চারা লাগিয়ে ক্ষতির মুখে তাঁরা।
উপজেলার খাসবকদিয়া গ্রামের রাব্বু শেখ, বকুল মণ্ডল, আয়নাল মণ্ডল, বিপুল মণ্ডল আইয়ুব আলী, মুকুল মণ্ডল ধাওড়া সাদ শেখ, তরু বিশ্বাস, ইবাদত বিশ্বাস; বিজুলিয়া গ্রামের আরিফ, শরিফুল; পাইকপাড়ার রাজ্জাক, হারুন; সিদ্দি গ্রামের মনিরুল ইসলাম, রবিউল ইসলাম, আলিম উদ্দিনসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের কয়েক শ কৃষকের পেঁয়াজের চারা মরে গেছে।
খাসবকদিয়া গ্রামের কৃষক আইয়ুব আলী বলেন, ‘৬০ শতক জমিতে লাল তীর কিং মনে করে প্রতি কেজি পাঁচ হাজার টাকা দরে পাঁচ কেজি পেঁয়াজবীজ বপন করি। চারা একটু বড় হলে সেগুলো মাঠে লাগানোর কিছুদিনের মাথায় লাল হয়ে মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। এখন শুনছি, এগুলো লাল তীর কিংয়ের বীজ না, এগুলো ভারতীয় বীজ। চিন্তায় এখন ঘুম হচ্ছে না।’
মনোহরপুর ইউনিয়নের বিজুলিয়া গ্রামের শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘ঋণ করে কয়েক বিঘা জমিতে পেঁয়াজ চাষ করেছিলাম। সব পেঁয়াজের চারা মরে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে অনেক টাকা খরচ করে ফেলেছি। ভেবেছিলাম পেঁয়াজ বিক্রি করে ঋণ পরিশোধ করব। এখন সংসার চালানো কঠিন হয়ে গেল।’
পেঁয়াজের বীজ বিক্রেতা উপজেলার ধাওড়া গ্রামের জিলানী বলেন, ‘পেঁয়াজের দানা কিনে আমরা বিক্রি করি। এবার কী কারণে এমন হলো, তা বলতে পারব না। এমন তো হওয়ার কথা না।’ জানা গেছে, ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের ভয়ে পেঁয়াজের বীজ বিক্রেতারা পলাতক রয়েছেন।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আনিসউজ্জামান বলেন, দেশে ১৫ থেকে ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা পেঁয়াজ চাষের জন্য অনুকূল। তবে এবার শীতে ১৫ ডিগ্রির নিচে তাপমাত্রা ছিল। অনেক সময় জিপসাম সারের ঘাটতি, সেচ কমবেশি, অতিরিক্ত শীত ও কিছু কিছু নিম্নমানের বীজের কারণে এমনটি হতে পারে।