চট্টগ্রামের মীরসরাইয়ে ট্রেন ও মাইক্রোবাসের সংঘর্ষের ঘটনায় রেলের উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে ১১টি সুপারিশ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে দুর্ঘটনা রোধে রেলওয়ের লেভেল ক্রসিংয়ে উচ্চ শব্দের স্বয়ংক্রিয় অ্যালার্ম বেজে ওঠার সিস্টেম স্থাপন করাসহ নানা বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করা হয়েছে। আগের তদন্ত কমিটি সুপারিশ করেছিল সাতটি।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) জাহাঙ্গীর হোসেনের কাছে গত মঙ্গলবার সর্বশেষ প্রতিবেদন জমা দেয় তদন্ত কমিটি। কমিটিতে আহ্বায়ক ছিলেন পূর্বাঞ্চলের অতিরিক্ত সিই (ট্রাক) মো. আরমান হোসেন।
উচ্চপর্যায়ের কমিটির এ প্রতিবেদনে বলা হয়, দুর্ঘটনা কবলিত মাইক্রোবাসটি মোটরযান অধ্যাদেশ না মেনে রেলপথ অতিক্রমের চেষ্টা করায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। যানবাহনটিতে ১২টি আসন থাকলেও যাত্রী ছিলেন ১৮ জন। এ ছাড়া লেভেল ক্রসিং পার হওয়ার সময় উচ্চ শব্দে গান চলছিল মাইক্রো বাসটিতে। এ ছাড়া দুই পাশে গেটে প্রতিবন্ধকও ছিল। কিন্তু মাইক্রোবাসের চলকের অসতর্কতার কারণেই এ দুর্ঘটনা ঘটে। তিনিই এর জন্য দায়ী। যদিও সেদিন ঘটনাস্থলেই নিহত হন মাইক্রোচালক গোলাম মোস্তফা এবং গেটম্যান সাদ্দাম কারাগারে আছেন।
১১ সুপারিশের মধ্যে রয়েছে সব লেভেল ক্রসিং গেট থেকে নিরাপদ দূরত্বে ট্রেন এলে উচ্চ শব্দের স্বয়ংক্রিয় অ্যালার্ম বেজে ওঠার সিস্টেম স্থাপন করা, লেভেল ক্রসিং গেটগুলো কারিগরি সম্ভাব্যতা অনুযায়ী ওভার পাস/আন্ডার পাস নির্মাণ এবং অন্যান্য গেটে শ্রেণি নির্ধারণসহ ন্যূনতম তিনজনকে পদায়নের ব্যবস্থা নেওয়া। গেট সংরক্ষকদের প্রশিক্ষণ ও খাকি ইউনি ফরম সরবরাহ করা, এলসি গেটগুলো সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদানসহ টেলিফোন সংযোগ দেওয়া এবং ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা স্থাপনা করা, এলসি গেটের সড়ক পথের গ্রেডিয়েন্ট রেলপথের উভয় দিকে ন্যূনতম ৫০ ফুট পর্যন্ত সমান্তরাল রাখা, গেট ব্যরিয়ারের স্থান হতে অবৈধ বাজার, দোকানপাট, সাইন বোর্ড ইত্যাদি অপসারণের ব্যবস্থা নিয়ে উচ্ছেদ করা, এলসি গেট পারাপারে ব্যাপক জনসচেতনতা গড়ে তোলার লক্ষে ইলেকট্রনিকস মিডিয়াতে বিভিন্ন সচেতনতামূলক বার্তা দেওয়া এবং নাটিকা নির্মাণ ও প্রচার করা।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘তদন্ত প্রতিবেদনে সুপারিশগুলো বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
২৯ জুলাই মীরসরাই উপজেলায় লেভেল ক্রসিংয়ে ট্রেন-মাইক্রোবাসের সংঘর্ষে ঘটনাস্থলেই ১১ এবং দুজনের মৃত্যু হয়।