পৃথিবীর সব মানুষই হজরত আদম (আ.) ও বিবি হাওয়া (আ.)-এর সন্তান। এ কারণেই জগতের সব মানুষ পরস্পরের ভাই ভাই। একই বাবা-মা থেকে জন্ম নিয়ে বংশপরম্পরায় মানুষ বিভিন্ন জাতি-ধর্ম, দল-মত, সম্প্রদায় ও গোত্রে বিভক্ত হয়ে পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়েছে। এ সম্পর্কে মহান আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে মানুষ, আমি তোমাদের একজন পুরুষ ও একজন নারী থেকে সৃষ্টি করেছি এবং তোমাদের বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে বিভক্ত করেছি; যাতে তোমরা একে অপরের সঙ্গে পরিচিত হতে পারো।’ (সুরা হুজুরাত: ১৩)
ইসলামপূর্ব যুগে আরবের মানুষের মধ্যে পারস্পরিক সংঘাত-সহিংসতা, প্রতিহিংসা ও শত্রুতা বিরাজ করছিল। কথায় কথায় ঝগড়া-বিবাদ, যুদ্ধ-বিগ্রহ ও খুনোখুনি নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার ছিল। এমন ভয়াবহ অবস্থা থেকে ইসলামই তাদের রক্ষা করেছিল। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমরা সকলে আল্লাহর রজ্জু দৃঢ়ভাবে ধরো এবং পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ো না। তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহকে স্মরণ করো। তোমরা পরস্পর শত্রু ছিলে এবং তিনি তোমাদের হৃদয়ে প্রীতির সঞ্চার করেন। ফলে তাঁর অনুগ্রহে তোমরা পরস্পর ভাই হয়ে গেলে।’ (সুরা আলে ইমরান: ১০৩)
মহানবী (সা.) বলেন, ‘এক মুসলমান অপর মুসলমানের ভাই। সে তাকে অত্যাচার করবে না এবং তাকে শত্রুর কাছে সমর্পণও করবে না। আর যে ব্যক্তি তার কোনো ভাইয়ের প্রয়োজনে এগিয়ে আসে, আল্লাহ তাঁর প্রয়োজনে এগিয়ে আসেন।’ (বুখারি ও মুসলিম)
প্রকৃতপক্ষে ভ্রাতৃত্বের নিদর্শন হলো একজন মানুষ অন্য আরেকজন মানুষের প্রতি দয়া, মায়া ও সহানুভূতি প্রদর্শন করবে। তারা একে অপরের সুখে সুখী হবে এবং একে অপরের দুঃখে দুঃখী হবে।
ড. মো. শাহজাহান কবীর: বিভাগীয় প্রধান, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, ফারইস্ট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ঢাকা