গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি
গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে তহসিলদারের বিরুদ্ধে শহীদ মিনারের বেদি ও নিরাপত্তা বেষ্টনী ভেঙে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার গোবিন্দুপুর ইউনিয়নের হাকিমপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। এর প্রতিবাদে ও বিচারের দাবিতে গতকাল রোববার মুক্তিযোদ্ধাসহ সাধারণ মানুষ অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন।
জানা যায়, দাসেরহাট গ্রামের মিলু মোল্লার স্ত্রী রেখা বেগম শহীদ মিনারের জমি তাঁর দাবি করে আবেদন করেন। এ আবেদনের প্রেক্ষিতে মুকসুদপুর তহসিল অফিসের তহসিলদার দেব রতন বিশ্বাস শহীদ মিনারের বেদি ও নিরাপত্তা বেষ্টনী ভাঙেন। এ নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
এর প্রতিবাদে ও বিচারের দাবিতে রোববার উপজেলার হাকিমপুর, দাসেরহাট ও ভ্রমর গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা এবং সর্বস্তরের মানুষ অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন। পরে তাঁরা এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেন।
হাকিমপুর গ্রামের রজব আলী বলেন, ২০০০ সালে তিন গ্রামের মানুষ হাকিমপুর গ্রামের রাস্তার পাশে সরকারি খাস জমিতে এই শহীদ মিনার নির্মাণ করেন। শহীদ মিনারের সামনের জমি দাসেরহাট গ্রামের মিলু মোল্লার স্ত্রী রেখা বেগমের। শহীদ মিনারকে রাস্তার খাদের ধস থেকে রক্ষার জন্য তাঁরা শহীদ মিনার ঘেঁষে নিরাপত্তা বেষ্টনী নির্মাণ করেন। রেখা বেগম তাঁর বাহিনী ও তহসিলদারের সহযোগিতায় ২৯ ডিসেম্বর শহীদ মিনারের বেদি ও বেষ্টনী ভাঙেন। এ সময় তাঁরা বাধা দেন। তাঁদের বাধার মুখে রেখা অভিযুক্তরা পালিয়ে যান।
অভিযুক্ত রেখা বেগম বলেন, ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার ও তহসিলদার ২৮ ডিসেম্বর জমি পরিমাপ করেন। শহীদ মিনারের মধ্যে তাঁর জমি নেই বলে জানানো হয়। পরের দিন তহসিলদার ও সার্ভেয়ার লোকজন নিয়ে এসে শহীদ মিনার ভাঙচুর করেন।
মুকসুদপুর তহসিল অফিসের তহসিলদার দেব রতন বিশ্বাস বলেন, তাঁরা পরিমাপ করে দেখেছেন শহীদ মিনারটি সরকারি খাস জমিতে। সম্প্রতি শহীদ মিনার ঘেঁষে বেষ্টনী গড়ে তোলা হয়েছে। তাই এক নারীর আবেদনের প্রেক্ষিতে ও সহকারী কমিশনারের (ভূমি) নির্দেশে বেষ্টনী ভেঙে ফেলা হয়েছে। শহীদ মিনারে কোনো আঘাত করা হয়নি। এ বিষয়ে তিনি তদন্ত প্রতিবেদন সহকারী কমিশনারের (ভূমি) অফিসে পাঠিয়েছেন।
মুকসুদপুরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আলাউল ইসলাম বলেন, শহীদ মিনারসংলগ্ন দেয়াল ভেঙে সরকারি সামান্য খাস জমি উদ্ধার করা হয়েছে। সেখানে শহীদ মিনার ভাঙা হয়নি। স্থানীয় এক নারীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে এটি করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জোবায়ের রহমান রাশেদ বলেন, সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলেছেন। প্রতিবেদন পাওয়ার পর বিষয়টি জানতে পারবেন।