জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ১৮ দিন পর আবারও বড় জমায়েত নিয়ে মাঠে নামার পরিকল্পনা করছে বিএনপি। দ্রব্যমূল্যের সীমাহীন ঊর্ধ্বগতি, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ সব রাজবন্দীর মুক্তি, সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং ‘অবৈধ’ সংসদ বাতিলের এক দফা দাবিতে আজ শুক্রবার সব জেলায় এবং আগামীকাল শনিবার সব মহানগরে কালো পতাকা মিছিলের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে দলটি। এসব কর্মসূচিতে বড় জমায়েত করে আবারও পুনরুদ্যমে মাঠে নামার চেষ্টা করছে বিএনপি।
ইতিমধ্যে কালো পতাকা মিছিলের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। গতকাল বৃহস্পতিবার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, কালো পতাকা মিছিলের সার্বিক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জানানো হয়েছে। মিছিল করার মৌখিক অনুমতিও পাওয়া গেছে।
সংবাদ সম্মেলনে দেশে একদলীয় শাসন কায়েম করা হয়েছে অভিযোগ করে রিজভী বলেন, স্বাধীনতাত্তোর বাংলাদেশের মতো বর্তমানেও দেশে এক নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। দেশে আবারও অভিশপ্ত একদলীয় বাকশাল কায়েম করা হয়েছে। একদলীয় সরকার, একদলীয় সংসদ, একদলীয় আইনকানুন, বিচার-আচার, প্রশাসন—সবকিছু একদলীয় বাকশালময়।
দলের নেতা-কর্মীরা জানিয়েছেন, নির্বাচনের পর আবারও বড় জমায়েত নিয়ে কর্মসূচির প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি। জেলার কর্মসূচিতে নেতা-কর্মীদের মনোভাব এবং সরকারের অবস্থান বুঝতে চায় দলটি। সে অনুযায়ী আগামী শনিবার রাজধানীসহ দেশের সব মহানগরে বড় জমায়েত করে কর্মসূচি পালনের ছক কষছে দলটি। নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে মগবাজার পর্যন্ত এই মিছিল হবে।
দলীয় সূত্র বলেছে, নির্বাচনের পর আন্দোলনে ব্যর্থতার কারণ ও আগামী কর্মসূচির নতুন ধরন নিয়ে নিজেদের ও সমমনাদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন দলটির নেতারা। শীর্ষ নেতারা কারাবন্দী থাকায় আন্দোলনের নতুন কর্মসূচি নির্ধারণেও কিছুটা সতর্ক থাকতে বাধ্য হয়েছেন তাঁরা।
কর্মসূচিতে নেই যুগপৎ সঙ্গীরা
নির্বাচনের আগে বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনের শরিকেরা এই কর্মসূচি পালন করছে না। বিএনপি এককভাবে এই কর্মসূচি পালন করতে যাচ্ছে। এদিন জামায়াতে ইসলামীও কোনো কর্মসূচি দেয়নি। অবশ্য আন্দোলনের শরিকেরা নিজেরা স্বতন্ত্রভাবে সরকারের পদত্যাগসহ নানা দাবিতে কর্মসূচি পালন করছে। কালো পতাকা মিছিল নিয়ে দীর্ঘদিন পর বিএনপি এককভাবে কর্মসূচি পালন করতে যাচ্ছে।
যুগপৎ আন্দোলনে শরিক দলগুলোর নেতা-কর্মীরা বলছেন, নির্বাচনের আগে যুগপৎ আন্দোলনের একটি ভিত্তি ছিল। এখনকার প্রেক্ষাপটে আর সেটি নেই। সবাই যে যার মতো ভুল, দুর্বলতাগুলো মূল্যায়ন করে নতুন করে আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। নেতা-কর্মীদের মধ্যেও একধরনের আস্থাহীনতা তৈরি হয়েছে, যা কাটতেও কিছুটা সময় লাগবে। একই সঙ্গে ভবিষ্যতে আন্দোলনে নিজেদের ভূমিকা জোরদার করতে দল পুনর্গঠনও জরুরি বলে মনে করেন তাঁরা।