নাজমুল হাসান সাগর, ঢাকা
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে (ডিএসসিসি) গত বছর টানা তিন মাস বন্ধ ছিল জন্ম-মৃত্যুনিবন্ধন সনদ দেওয়ার কার্যক্রম। এরপর নিজস্ব সার্ভার তৈরি করে গত বছরের ৪ অক্টোবর শুরু হয় জন্ম-মৃত্যুনিবন্ধন সনদ সেবাদান।
স্বতন্ত্র এই সার্ভার তৈরির পর বলা হয়েছিল, নগরবাসীর জন্য এই সেবা হবে সহজপ্রাপ্য, থাকবে না ভোগান্তি। কিন্তু ঘটছে উল্টোটা। নতুন সার্ভারের জন্মনিবন্ধন সনদ শুধু স্কুলে ভর্তি ছাড়া আর কোথাও কাজে লাগছে না।
কারণ, সরকারের কেন্দ্রীয় সার্ভারের সঙ্গে ডিএসসিসির স্বতন্ত্র এই সার্ভারের কোনো সংযোগ নেই। ফলে চাকরিতে যোগদান, পাসপোর্ট, জাতীয় পরিচয়পত্রসহ নাগরিক সেবার ১৯টি ক্ষেত্রে এই জন্মনিবন্ধন সনদ অকার্যকর বলে গণ্য হচ্ছে।
রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরের বাসিন্দা মাসুদুর রহমান স্ত্রী-সন্তানসহ উচ্চশিক্ষার জন্য অস্ট্রেলিয়ায় যাওয়ার জন্য তিন বছর বয়সী ছেলের পাসপোর্ট করাতে গিয়ে ভোগান্তির মধ্যে পড়েন। ডিএসসিসি থেকে ছেলের যে জন্মনিবন্ধন সনদ দেওয়া হয়েছে, সেটিকে অকার্যকর বলছে পাসপোর্ট অফিস। পরে ঢাকার পাশের একটি জেলা থেকে ছেলের জন্মনিবন্ধন করান। সেই নিবন্ধন দিয়ে করান পাসপোর্ট।
গত বছরের ৪ অক্টোবর সার্ভার চালু হওয়ার পর থেকে চলতি বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত ডিএসসিসি ৭৩ হাজার ৯১টি জন্মনিবন্ধন সনদ ইস্যু করেছে। নিবন্ধিতদের মধ্যে যাঁরা সমস্যায় পড়েছেন, তাঁরা ডিএসসিসির শরণাপন্ন হলে সংশ্লিষ্ট কর্তারা শুধু আশ্বাসই দেন। কিন্তু সমস্যার কোনো সমাধান হয় না।
জন্ম-মৃত্যুনিবন্ধন সনদ তদারকির দায়িত্বে আছেন ডিএসসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ফজলে শামসুল কবির। তিনি বলেন, ‘আমরা এসব সমস্যার সমাধান প্রক্রিয়া প্রায় শেষ পর্যায়ে নিয়ে এসেছি। পাসপোর্ট অধিদপ্তরের সঙ্গে আমাদের কয়েক দফা বৈঠক হয়েছে। এখন পাসপোর্ট অধিদপ্তর একটু আন্তরিক হলেই এই সমস্যার সমাধান হয় এবং নাগরিকেরা ভোগান্তি থেকে বাঁচে।’
তবে ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক সেলিনা বানু বলেন, ‘এই সমস্যার ব্যাপারে আমরা অবগত। আমি এ বিষয়ে কিছু বলতে পারব না। আপনারা বিভাগীয় প্রধানের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।’
এ বিষয়ে জানতে ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের মোবাইল ফোনে কল, খুদে বার্তা ও হোয়াটসঅ্যাপে খুদে বার্তা পাঠালেও তিনি সাড়া দেননি।