ড. আবু সালেহ মুহাম্মদ তোহা
শীতকাল মোমিন ব্যক্তির জন্য আশীর্বাদ। অন্য মৌসুমের তুলনায় এ মৌসুমে অনেক বেশি ইবাদত করা যায়। রাত লম্বা হওয়ায় অনেক সময় ধরে রাতে নামাজ আদায় করা যায়। আবার দিন ছোট ও আরামদায়ক হওয়ায় সহজে রোজা পালন করা যায়। এ জন্যই হাদিসে শীতকালকে মোমিন ব্যক্তির বসন্তকাল বলা হয়েছে। রাসুল (স.) বলেছেন, ‘শীতকাল মোমিনের বসন্তকাল।’ (আহমাদ: ১১৭৩৪)
শীতের রাতে ইবাদত করা বড় ফজিলতপূর্ণ কাজ। রাতের প্রথম অংশে ঘুমিয়ে শেষাংশে জেগে আল্লাহর দরবারে দোয়া করা এবং তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ার সওয়াব অনেক। আল্লাহ বলেন, ‘রাতের কিছু অংশে তাহাজ্জুদ নামাজ কায়েম করো।’ (সুরা ইসরা: ৭৯)
শীতকাল রোজা পালনেরও মোক্ষম সুযোগ। নবী (স.) বলেছেন, ‘শীতকালের রোজা বিনা পরিশ্রমে যুদ্ধলব্ধ সম্পদের মতোই।’ (তিরমিজি: ৭৯৭)
শীত নিবারণের মতো পোশাক-পরিচ্ছেদ সব মানুষের থাকে না। অভাবের কারণে অনেকেই এ সময় মানবেতর জীবনযাপন করে। সাধ্যমতো তাঁদের পাশে দাঁড়ানোও ইমানের দাবি। রাসুল (স.) বলেন, ‘কোনো মোমিন যদি অন্য কোনো বস্ত্রহীন মোমিনকে কাপড় পরায়, তাহলে আল্লাহ তাঁকে জান্নাতের সবুজ কাপড় পরাবেন।’ (তিরমিজি: ২৪৪৯)
শীতকালে সবকিছু শীতল হয়ে থাকায় অজু করা কঠিন হয়ে পড়ে। বিশেষ করে এশা ও ফজরের নামাজের জন্য অজু করা খুবই কষ্টকর হয়। শীতের তীব্রতায় কষ্টের কারণে আল্লাহ তাআলা নেকির মাত্রাও বাড়িয়ে দেন। আল্লাহ পাপমোচন করেন এবং জান্নাতে মর্যাদা বৃদ্ধি করেন—এমন আমলের সন্ধান দিয়ে রাসুল (স.) বলেন, ‘মন না চাইলেও ভালোভাবে অজু করা, অধিক পদক্ষেপে মসজিদে যাওয়া...।’ (মুসলিম: ৬১০)
লেখক: সহযোগী অধ্যাপক, আরবি বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়