নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
কোকিলের কুহুতান শোনা যাচ্ছে ক’দিন ধরেই। গাছে গাছে শুকনো পাতা ঝরে নতুন কুঁড়িও উঁকি দিতে শুরু করেছে। এ সবই জানান দিচ্ছিল বসন্ত আসছে। আর আজ বর্ষপঞ্জির পাতাও উল্টে গেল। শীতের জীর্ণতা-শুষ্কতার পর প্রকৃতিকে নতুন রূপে সাজাতে এসেছে ফাগুন।
বাংলা বর্ষপঞ্জির পয়লা ফাল্গুন আর খ্রিষ্টাব্দের ফেব্রুয়ারি মাসের ১৪ তারিখ এক সুতোয় মিলেছে কয়েক বছর ধরে। বসন্তবরণের দিনে ভালোবাসা। এক দিনে দুই উৎসবে মেতে ওঠে উৎসবপ্রিয় বাঙালি।
দুই উৎসবকে ঘিরে তরুণ-তরুণীরা ভিড় জমাচ্ছেন ফুলের দোকানগুলোতে। ফুলের ব্যবসায় ব্যস্ত দোকানিরাও। তবে তাঁদের আক্ষেপও আছে। একই দিনে দুটি উৎসব হওয়ায় তাঁদের হিসাবে ফুল বিক্রি তুলনামূলক কম হয়।
রাজধানীর শাহবাগের ফুল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক শামীম আহমেদ বলেন, ‘বিক্রি ভালোই। সারা দেশে আজ (মঙ্গলবার) ৪৫ কোটি টাকার ফুল বিক্রি হয়েছে বলে শুনেছি। শাহবাগেও ২০-৩০ লাখ টাকার ফুল বিক্রি হয়েছে আধা বেলায়। তবে একই দিনে দুটি উৎসব হওয়ায় বিক্রি তুলনামূলক কম। উৎসব দুটি দুই দিনে হলে বিক্রি আরও বাড়ত।’
তারপরও দুই উৎসবকে ঘিরে বেড়ে গেছে ফুলের দাম। ২০ টাকার গোলাপ গতকাল রাজধানীর দোকানগুলোতে ৪০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হতে দেখা যায়। বিক্রেতারা জানান, এবার গোলাপের উৎপাদন কম থাকায় দাম একটু বেশি। ভালোবাসা দিবসের কারণে দামটা আরেকটু বাড়বে।
মায়ের হাত ধরে শাহবাগে গাঁদা ফুলের মালা কিনতে এসেছিল বছর সাতেকের মুশফিকা আহমেদ। একেকটা মালার দাম ১০০ টাকা শুনে ফুল না কিনেই ফিরে যান মে-মেয়ে। মুশফিকার মা ইয়াসমিন কুমকুম বলেন, ‘ছোট বাচ্চা ফুল কিনতে চেয়েছে। কেনার পর সেটা আবার ছিঁড়ে কুটিকুটি করবে। টাকা অপচয়ের চেয়ে না কেনাই ভালো।’
তবে দামের দিকে না তাকিয়ে অনেকেই আবার ভালোবাসার মানুষের জন্য কিনছেন ফুল। শাহবাগে গোলাপের তোড়া কিনতে আসা রায়হান দীপ্ত বলেন, ‘উৎসব তো রোজ রোজ আসে না। একটা দিন ফুল কিনে বাড়তি কিছু টাকা গেলে ক্ষতি কী?’