Ajker Patrika
হোম > ছাপা সংস্করণ

ঘাট ইজারাদারের লোভের বলি অর্ধশত প্রাণ

আল মামুন জীবন, বোদা (পঞ্চগড়) থেকে

ঘাট ইজারাদারের লোভের বলি অর্ধশত প্রাণ

পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার আউলিয়া ঘাটটি স্বাধীনতার পর থেকেই স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তির নিয়ন্ত্রণে। পূজার সময় খেয়াঘাটের যাত্রীদের কাছ থেকে দ্বিগুণ ভাড়া আদায় করেন তাঁরা। এখানেই শেষ নয়, এ সময় নৌকায় ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী তোলেন ইজারাদারের লোকজন। তাঁদের অর্থ লোভের বলি হলো অর্ধশত প্রাণ।

গত রোববার করতোয়া নদীতে নৌকাডুবির ঘটনায় গতকাল সোমবার পর্যন্ত ৫০ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। করতোয়ায় নৌকা ডুবলেও লাশ ভেসে গেছে আত্রাই ও ঢেপা নদী পর্যন্ত। গতকাল দিনাজপুরের বীরগঞ্জ ও খানসামা উপজেলার মাঝ দিয়ে প্রবাহিত আত্রাই ও তার শাখা নদী ঢেপা থেকে সাতজনের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

পঞ্চগড় জেলা প্রশাসনের প্রকাশ করা তালিকা অনুযায়ী, গতকাল পর্যন্ত উদ্ধার হওয়া লাশগুলোর মধ্যে ১২ জন পুরুষ, ২৫ জন নারী ও শিশু ১৩টি। এর মধ্যে বোদা উপজেলার ২৯ জন, দেবীগঞ্জ উপজেলার ১৮ জন এবং আটোয়ারী উপজেলা, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড় সদরের একজন করে মারা গেছেন।

মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনার জন্য ইজাদারের দ্বিগুণ ভাড়া আদায় ও অতিরিক্ত যাত্রী তোলাকে দায়ী করেছেন প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা। নুরুল ইসলাম নামের স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, আউলিয়া ঘাট পরিচালনা করেন বোদা উপজেলার বড়শশী ইউনিয়নের তারাবুল ইসলাম ও নজরুল ইসলাম। পূজার সময় তাঁরা দ্বিগুণ ভাড়া আদায় করেন। গত রোববার ১০ টাকার ভাড়া ২০ টাকা পাওয়ার আশায় অতিরিক্ত যাত্রী তোলা হয়।

এতে নৌকাটি কিছু দূর যাওয়ার পরই দুর্ঘটনায় পড়ে। নৌকাডুবির এই ঘটনায় তাৎক্ষণিক উদ্ধার তৎপরতায় ঢিলেমি ছিল বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা। তাঁদের দাবি, ঘটনার পর থেকে প্রশাসন ও ফায়ার সার্ভিসের লোকজন তৎপর হলে মৃত্যু কমানো যেত।

ঘাটের পাশের ছিটমহলের বাসিন্দা ফজলুর রহমান বলেন, ‘আমি একাই ২০ জনের বেশি মানুষকে জীবিত ও মৃত অবস্থায় উদ্ধার করেছি। সকলেই এগিয়ে এলে হয়তো অনেককেই জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হতো।’ এ ঘটনায় রোববার বিকেলের পর বোদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মরদেহ শনাক্ত করে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হলেও করতোয়া নদীর আউলিয়ার ঘাট থেকে কোনো লাশ হস্তান্তর করা হয়নি। তারপরও আউলিয়া ঘাটে দিনভর স্বজনদের কান্না ও আহাজারি লক্ষ করা গেছে। কেউ এসেছেন বাবার খোঁজে, কেউ সন্তানের, কেউ বোনের সন্তানের সন্ধানে। আবার কেউবা এসেছেন কান্নায় ভেঙে পড়া স্বজনদের সান্ত্বনা দিতে। প্রায় দেড় কিলোমিটারজুড়ে করতোয়া নদীর আউলিয়া ঘাটে এদিক-ওদিক ছোটাছুটি করতে দেখা গেছে শত শত মানুষকে।

গতকাল মাড়েয়া ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় থেকে হস্তান্তর করা হয়েছে উদ্ধার হওয়া মরদেহগুলো। ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম। সেখানে একজন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বসে মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তরের যাবতীয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছেন।

উল্লেখ্য, রোববার বেলা ৩টার দিকে পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার মাড়েয়া ইউনিয়নে অবস্থিত করতোয়া নদীর আউলিয়া ঘাট থেকে শতাধিক পুণ্যার্থী নিয়ে একটি নৌকা বদেশ্বরী মন্দিরে যাচ্ছিল। নৌকাটি নদীর মাঝে গেলে মোড় নেওয়ার সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ডুবে যায়।  

[প্রতিবেদন তৈরিতে সহায়তা করেছেন আজকের পত্রিকার খানসামা (দিনাজপুর) ও বীরগঞ্জ প্রতিনিধি]

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ

ঢাকা সড়ক পরিবহন: প্রশ্নবিদ্ধ কমিটিতেই চলছে মালিক সমিতির কার্যক্রম

৪০ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি করবে টিসিবি

৮ বছরে শিশুহত্যা হয়েছে ৪০০০

যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধির শীর্ষে বাংলাদেশ, তবে বাজারে পিছিয়ে

দেশে ব্যবসায় ঘুষ–দুর্নীতিসহ ১৭ রকমের বাধা

বিদ্যালয়ের জমিতে ৩৯১টি দোকান, ভাড়া নেয় কলেজ