যশোরের কেশবপুরে সম্পূর্ণ জৈব সার ব্যবহার করে কীটনাশকমুক্ত মাল্টা চাষে এলাকায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন কৃষক খন্দকার শফি। তার বিষমুক্ত এ ফলের চাহিদাও রয়েছে বেশ। তাঁর ফলের প্রশংসা এখন মানুষের মুখে মুখে।
জানা গেছে, কীটনাশকমুক্ত ফল মানুষকে খাওয়ানোর উদ্দেশ্যেই উপজেলার ব্রহ্মকাটি গ্রামের কৃষক খন্দকার শফি আড়াই বছর আগে প্রথম ৬২ শতক জমিতে জৈব সার ব্যবহার করে ৩০০টি মাল্টা চারা রোপণ করেন। গত বছর ওই খেতের শতাধিক গাছে ফলন আসে। প্রথমবার ৬০ হাজার টাকার মাল্টা বিক্রি করেন। এ থেকে তার মাল্টা চাষের প্রতি আগ্রহ আরও বেড়ে যায়। পরে ৩৬ শতক জমিতে আরও একটি বাগান তৈরি করেন। দুটি বাগানেই মাল্টার গাছ রয়েছে ৭০০। এবার ওই দু’বাগানের প্রায় ৫০০ গাছেই ফল এসেছে।
সরেজমিন ব্রহ্মকাটি গ্রামের ওই মাল্টাবাগান দুটিতে গিয়ে দেখা যায়, প্রায় গাছেই ৩০ থেকে ৬০টি পর্যন্ত ফল ধরেছে। মাল্টার আকারও বেশ বড়। কৃষক খন্দকার শফি বাগান পরিচর্যার সময় বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে মাল্টা চাষ করে ভালো ফলন পাওয়ায় গত আড়াই বছরে ৩টি মাল্টা বাগান তৈরি করেছি। এবার উপজেলার গড়ভাঙ্গা বাজারের পাশে ৪ বিঘা জমিতে ৪০০ মাল্টার চারা রোপণ করে পরিচর্যা করা হচ্ছে।
আগামী বছর এ মাল্টাবাগানেও ফলন ধরবে বলে আশা করা হচ্ছে। ৩টি বাগানেই যে চারা রোপণ করা হয়েছে তা নিজেরই। এ বছর দুটি বাগান থেকে প্রায় আড়াই লাখ টাকার মাল্টা বিক্রি করতে পারব।’
মাল্টা বাগান তৈরি করার বিষয়ে বলেন, ‘বিষমুক্ত ফল মানুষকে খাওয়ানোই আমার প্রধান উদ্দেশ্য। ৩টি মাল্টা বাগানে ভার্মি কমপোস্ট (কেঁচো সার) ব্যবহারের পাশাপাশি ডিমের খোসা, ঝিনুক গোড়ায় জমিতে প্রয়োগ করি।’
কৃষক খন্দকার শফি আরও জানান, তার কাছ থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে অনেকেই মাল্টা বাগান গড়ে তুলছেন। এ ছাড়া তার খেতে কাজ করে অনেকের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে।
ব্রহ্মকাটি গ্রামের বাসিন্দা আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, ‘কৃষক খন্দকার শফির বাগানের মাল্টা খেতে খুবই সুস্বাদু। বাগানের ফলও আকারে বড়। যে কারণে তার বাগানের অধিকাংশ ফলই খেত থেকেই বিক্রি হয়ে যায়।’ বাগানের পরিচর্যাকারী দীন মোহাম্মদ বলেন, ‘প্রতিদিন বাগান থেকেই মানুষ এসে মাল্টা কিনে নিয়ে যান।’
শিক্ষক নূরুল ইসলাম খান বলেন, ‘বিষমুক্ত ফল উৎপাদনে একজন সফল উদ্যোক্তা হয়ে উঠেছেন খন্দকার শফি। বিষমুক্ত মাল্টা আবাদ করে এলাকায় ব্যাপক সাড়াও ফেলেছেন।’