তারেক রহমান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ
মৌসুমি ফল আম সাধারণত চাঁপাইনবাবগঞ্জের বাজারে ওঠে জ্যৈষ্ঠের মাঝামাঝি। ভাদ্রে শেষ হয় আমের মৌসুম। তবে এবার জেলার কানসাট আমবাজারে ভিন্ন চিত্র দেখা যাচ্ছে। প্রতিদিন বাজারে আসছে সুমিষ্ট আশ্বিনা আম; তবে সরবরাহ কম। এ কারণে প্রতি মণ আম বিক্রি হচ্ছে ১২ হাজার থেকে ১৩ হাজার টাকায়। আমের দাম বেশি পেয়ে খুশি বাগানমালিক ও চাষিরা।
গত শনিবার দুপুরে কানসাট বাজারে দেখা গেছে, ছয় ভ্যান আম বিক্রির জন্য আনা হয়েছে। ক্রেতা কম থাকায় বিক্রির জন্য অপেক্ষা করছিলেন বিক্রেতারা। গোমস্তাপুর উপজেলার আমচাষি আকবর হোসেনের সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, মৌসুমের শুরুতে আশ্বিনা আমের ন্যায্যমূল্য পাওয়া যায় না। এতে ক্ষতির মুখে পড়তে হয়। ক্ষতি থেকে বাঁচতে কৃষি বিভাগের পরামর্শে আমের মৌসুম দীর্ঘ করা অর্থাৎ শেষ দিকে বিক্রির পরিকল্পনা থাকে।
মৌসুম দীর্ঘ করার প্রক্রিয়া সম্পর্কে আকবর হোসেন জানান, প্রথমে যে সময় গাছে মুকুল আসে, সেই মুকুল ভেঙে ফেলে দেওয়া হয়। এরপর আবারও পরিচর্যা করা হয় গাছের। ফলে দ্বিতীয়বার যে মুকুল আসে, সেগুলো যত্নসহকারে পরিচর্যা করা হয়। এ মুকুল থেকে হওয়া আম কার্তিক মাস পর্যন্ত গাছে থাকে।
কানসাট বাজারে আসা আরেক আমচাষি ও শিবগঞ্জ উপজেলার ধাইনগরের বাসিন্দা আশরাফুল হক বলেন, লোকসান ঠেকাতে মৌসুম শেষে আম উৎপাদন করে লাভবান হচ্ছেন তাঁরা। প্রতিমণ আম বিক্রি করছেন ১২ হাজার থেকে ১৩ হাজার টাকায়। তবে বৃষ্টিতে কিছু আম নষ্ট হচ্ছে, আবার ক্রেতাও কম। ক্রেতা থাকলে অন্তত ১৫ হাজার টাকা মণ দরে আম বিক্রি করা যেত।
কানসাট আম আড়তদার সমবায় সমিতি লিমিটেডের সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক টিপু বলেন, কানসাট বাজারে আগামী জানুয়ারি মাস পর্যন্ত আম উঠবে। এখনো অনেক বাগানে প্রচুর আশ্বিনা আম আছে। দাম ভালো পাওয়ায় চাষিরা মৌসুম দীর্ঘ করার পদ্ধতি অবলম্বন করছেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক পলাশ সরকার বলেন, সব চাষি একসঙ্গে বাজারে আশ্বিনা আম নিয়ে এলে সরবরাহ বেশি থাকে। তখন কৃষক দাম পান না। দাম পেতে তাঁদের বিভিন্ন পরামর্শ দেওয়া হয়। বিশেষ করে মৌসুম দীর্ঘ করার জন্য মাঠপর্যায়ে পরামর্শ দেওয়া হয়। পরামর্শ অনুযায়ী বাগান পরিচর্যা করায় আমের মৌসুম দীর্ঘ হচ্ছে এবং চাষিরা ভালো দাম পাচ্ছেন।